--- বিজ্ঞাপন ---

পাকিস্তানে উগ্রবাদ বিরোধী অভিযানে আটক ৪৪

0

নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তানে ব্যাপকভাবে উগ্রবাদ বিরোধী অভিযান শুরু করেছে দেশটির নিরাপত্তাবাহিনী। অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত উগ্রবাদী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই মুফতি আবদুল রউফ ও ছেলে হামাদ আজহারকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার খান আফ্রিদি মঙ্গলবার এই উগ্রবাদ বিরোধী অভিযানের কথা স্বীকার করেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, সরকারি ভাবে চালানো এই অভিযানে মাসুদ আজহারের ভাই মুফতি আবদুল রউফ ও ছেলে হামাদ আজহারসহ জইশ-ই-মোহাম্মদের ৪৪ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের সব প্রদেশের গভর্নরদের উপস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র সচিব আজম সোলাইমান খান বলেন,‘সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অভিযান অব্যাহত থাকবে। আমরা এমন ধারণা দিতে চাই না যে, আমরা কেবল একটি সংস্থার বিরুদ্ধে তৎপর।’

স্বরাষ্ট্র সচিব আজম সোলাইমান আরো জানান, কাশ্মিরের পুলওয়ামাজেলায় আত্মঘাতী হামলার পর ভারতের দেয়া তালিকায় মুফতি আবদুল রউফ ও হামাদ আজহারের নাম রয়েছে। তবে এর মানে এই নয় যে, শুধু তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

প্রয়োজনে নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর সব সম্পত্তিও জব্দ করা হবে বলে জানান পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র সচিব। এদিকে সাংবাদিকরা আটককৃত অপর ৪২ জনের নামপরিচয় জানতে চাইলে এই মুহূর্তে তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই অভিযান দুই সপ্তাহ চলবে জানিয়ে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন,‘আমরা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে আমাদের দেশের মাটিকে ব্যবহার হতে দেব না। পাকিস্তান নিজেই এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’

জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার পাকিস্তানেই রয়েছেন বলে গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে জানান দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি।

এদিকে সোমবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি আদেশ জারি করে পাকিস্তান। এতে বলা হয়, নিরাপত্তা পরিষদের ব্যাখ্যা মতে যারা সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদী হিসেবে প্রমাণিত হবেন, এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি যেকোনো সময় বাজেয়াপ্ত করতে পারবে পাকিস্তান সরকার।

উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ভারতীয় সেনা বহরে এক আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪১ জন ভারতীয় আধা-সামরিকবাহিনীর সেনা নিহত হয়। পরে এই হামলার দায় স্বীকার করে উগ্রবাদী সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদ।

এই ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারী ভারত পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা করে জইশ-ই-মোহাম্মদের ৩০০ যোদ্ধাকে হত্যার দাবি করে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স, বিবিসি ও নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায়, ভারতীয় বিমান হামলার ঘটনায় কেবল একজন আহত হয়েছেন এবং কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি। এরপর পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালিয়ে তাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করা দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। এ ঘটনায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুইজন পাইলট নিহত হয় এবং উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান নামে এক পাইলটকে জীবিত আটক করে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। যদিও এর দুদিন পরে শান্তির বার্তা হিসেবে পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দিয়ে ভারতে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.