মাদরাসার কারিকুলামে ৩২টি বইয়ে পরিবর্তন আনা হচ্ছে
বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম ছায়েফ উল্যা এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন অনুসারে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, তার কারিকুলামের উন্নয়ন ও পরিমার্জনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতির নির্দেশনা, পরিবর্তিত জাতীয় ও বৈশ্ব্যিক পরিস্থিতি এবং সমকালীন জীবনের চাহিদা বিবেচনায় রেখে ইবতেদায়ি, জুনিয়র দাখিল, দাখিল এবং আলিম স্তরের ইসলাম ও আরবি বিষয়গুলোর শিক্ষাক্রম পরিমার্জন বা উন্নয়ন করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ইসলামী আখলাক আকিদা ও মূল্যবোধ চর্চা, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ দিতে পারে, এমন কোনো পাঠ মাদরাসার কোনো ধাপের বইয়ে থেকে থাকলে, তা অপসারণ ও বাদ দেয়া হবে। মাদরাসা শিক্ষায় আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং জীবনমুখী শিক্ষা সংযোজন করা হবে। নতুন পাঠ্যক্রমের বই ২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীরা হাতে পাবে।
তিনি আরো জানান, পরিমার্জনকালে পবিত্র কুরআনের তরজমা এবং ব্যাখ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে প্রকাশিত অনুবাদের তরজমা এবং ব্যাখ্যা পাঠ্যবইয়ে সংযোজন করা হবে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানান, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ইবতেদায়ি, দাখিল ও আলিম স্তরে ৬৬টি পাঠ্যবইয়ের মধ্যে প্রথম যাত্রায় ৩২টি বইয়ের সংশোধন ও পরিমার্জন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ৩২টি বইয়ের মধ্যে থাকছে কুরআন মাজিদ, আকাইদ এবং আরবি বই।
ইবতেদায়িতে (১ম থেকে ৫ম শ্রেণী) ১৫টি বই। দাখিলে কুরআন মাজিদ, আকাইদ এবং আরবি-প্রথমপত্র ও আরবি-দ্বিতীয়পত্র মিলে ১২টি বই এবং আলিমে কুরআন মাজিদ, আকাইদ, হাদিস শরিফ এবং আরবি-প্রথমপত্র ও আরবি-দ্বিতীয়পত্র মিলে ৫টি বইসহ এ ৩২টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট অন্য একটি সূত্র জানায়, ইফার মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজালের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই এ পরিমার্জন আনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুশাসনের দোহাই দিয়ে। ইফার মহাপরিচালক অভিযোগ করেন, মাদরাসার পাঠ্যবইয়ের কারিকুলামে জঙ্গিবাদের উসকানি রয়েছে।
সূত্র জানান, কারিকুলাম পরিমার্জনের কাজটি চলতি বছর সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে ৯টি বিষয়ে ১৭টি আবাসিক-অনাবাসিক কর্মশালা করা হবে। কর্মশালা কারিকুলাম বিশেষজ্ঞসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপকসহ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড(এনসিটিবি) অংশ নেবে।
এখানে খসড়া প্রণীত হবে পরে সেটি নিয়ে মাদরাসা শিক্ষায় অভিজ্ঞ আলেম ও অভিজ্ঞ শ্রেণীর শিক্ষকেরা বা অংশীজনেরাসহ জাতীয় কর্মশালা করে কারিকুলাম চূড়ান্ত করা হবে। এরপর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পাঠ্যক্রম সমন্বয় পরিষদ (এনসিসিসি)-এ চূড়ান্ত অনুমোদন নেয়া হবে। পরবর্তী ধাপে পাঠ্যবই লেখার প্যানেল নির্বাচন করে বই লেখার কাজ সম্পন্ন করা হবে। নতুন পাঠ্যক্রমের এ বই ২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা হাতে পাবে।