--- বিজ্ঞাপন ---

চট্টগ্রামে চামড়া বিক্রির প্রস্তুতি চলছে

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চামড়া সংকট নিরসনে ট্যানারি মালিক, চামড়ার আড়তদার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর চট্টগ্রামের চামড়ার আড়তে মজুতকৃত চামড়া বিক্রীর প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেছে। নগরীর প্রধান চামড়া মজুতের কেন্দ্র আতুরার ডিপো এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতি বছর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে ৭০-৮০ কোটি টাকার কাঁচা ও লবণজাতকৃত চামড়া দেশের বিভিন্ন ট্যানারিতে বিক্রী করা হয়।
এবছর কোরবাণীর ঈদের প্রাক্কালে জবাইকৃত পশুর চামড়া ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় মৌসুমি চামড়া বিক্রেতারা যত্রতত্র ফেলে চলে যায়। ফলে চট্টগ্রামে প্রচুর চামড়া নষ্ট হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের হিসাবে কমপক্ষে ১ লক্ষ পশুর চামড়া পঁচন ধরায় ভাগাড়ে ফেলতে হয়েছে বলা হয়েছে। অবশ্য চট্টগ্রামের চামড়ার ক্রেতা আড়তদাররা এ হিসাবকে আরও কম বলে দাবী করছেন। ট্যানারী মালিকদের থেকে বকেয়া পাওনা কোটি কোটি টাকা না পাওয়ায় এবার তারা পর্যাপ্ত চামড়া ক্রয় করতে পারেননি বলছেন। অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেট বানানোর কারণে কাঁচা চামড়া বিক্রী না হওয়ায় কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয়েছে।


চট্টগ্রাম মহানগরীর মুরাদপুর থেকে উত্তরদিকে বিবিরহাট হয়ে কিছুদূর এগুলেই রাস্তার দু’ধারে চামড়ার গুদামসমূহের সারি। চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির অন্তর্ভুক্ত চামড়ার আড়তদারের সংখ্যা ১১২ জন। এ সমিতির বাইরে বৃহত্তর চট্টগ্রামে আরও ১০০ জন সহ সব মিলিয়ে আড়াই শতের কাছাকাছি চামড়ার আড়তদার ও মজুতদার রয়েছে। প্রতি বছর এসকল আড়তদারদের মাধ্যমে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে গরুর চামড়া প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ, ছাগল ১ লক্ষ ৫০ হাজার, মহিষ ৫০ হাজারসহ সবমিলিয়ে সাড়ে ৭ লক্ষ চামড়া দেশের ট্যানারিসমূহ ক্রয় করে আসছে। চট্টগ্রামে দুটি ট্যানারি রয়েছে । এগুলো হচ্ছে, মদিনা ট্যানারি ও রীফ লেদার।
চট্টগ্রামের চামড়া বাজারের সর্বশেষ জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সবচাইতে বড় চামড়ার আড়তদার সরবরাহকারী মেসার্স এ.আই. লেদার এর সত্বাধিকারী আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সওদাগর প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন,“ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ট্যানারী মালিকদের সাথে বৈঠকের পর আমরা চামড়া বিক্রী করতে এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এখনও ট্যানারী মালিকদের সাড়া পাইনি। আশা করছি দু’একদিনের মধ্যে ট্যানারি থেকে অর্ডার পাবো, চামড়া প্রস্তুত আছে ।”


ট্যানারী মালিকদের কাছে বকেয়া পাওনার ব্যাপারে দীর্ঘ ৩২ বছর এ চামড়া ব্যবসার সাথে জড়িত মোহাম্মদ আলী সওদাগর আরও বলেন,“আমার প্রতিষ্ঠানের ৭কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের কাছে । এবার চামড়া নষ্ট হয়েছে এটা মোটামুটি কমনা। বকেয়া টাকা না পাওয়ায় অনেক আড়তদার কাঁচা চামড়া কিনতে আগ্রহী হননি। আমাদের বিশ্বাস অদূর ভবিষ্যৎে এভাবে আর চামড়া নষ্ট হবেনা। তবে তিনি সরকারের নিকট অতীতের মত আড়তদারদের মাধ্যমে ওয়েট ব্লু ও কাঁচা চামড়া রফতানি চালু করার আহ্বান জানান ।”
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বর্তমান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত রোববারের বৈঠকের পর চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি ট্যানারি মালিকরা চামড়া খরিদ করতে শুরু করবে দু’একদিনের মধ্যেই। সমস্যার সমাধান হয়েছে।’
আতুরার ডিপোর আরেক আড়তদার দীর্ঘদিন চামড়া ব্যবসায় জড়িত মোহাম্মদ জানে আলম বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঐ বৈঠকের পর আমি রীফ লেদার ট্যানারি থেকে চামড়ার অর্ডার পেয়েছি। এজন্য চামড়াগুলি ভাঁজ করছি। আগামী সপ্তাহে পুরোপুরি অর্ডার পাবো আশা রাখছি।’###

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.