--- বিজ্ঞাপন ---

কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তান কি শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের যুদ্ধে লিপ্ত হবে?….৩য় পর্ব

0

কাশ্মীর নিয়ে ভারত -পাকিস্তান মুখোমুখি। কাশ্মীরে বর্তমানে  কি অবস্থা বিরাজ করছে তা জানার জন্য মুখিয়ে আছে সারা বিশ্ব। ভারত -পাকিস্তানের সাথে সীমান্ত নিয়ে একাধিকবার যুদ্ধ হলেও এবারের বিষয়টি কেউ হালকাভাবে নিচ্ছে না। ভারত ও পাকিস্তান কাশ্মির নিয়ে বড় ধরনের কোন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে কিনা তা নিয়ে সারা বিশ্বে চলছে জল্পনা কল্পনা। ভারত-পাকিস্তানের কার অবস্থা কি রকম..এ নিয়ে পাঠকদের জানার জন্য কয়েক সিরিজের প্রতিবেদন প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদ।  আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন বিষয়সহ পুরো বিষয়টি তুলে এনেছেন নির্বাহী  সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম…প্রকাশিত হলো ৩য় পর্ব

পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ভারতের তথাকথিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ও  উত্তেজনার সূত্রপাত গত ৪ ফ্রেব্রুয়ারী । ঐদিন ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্নীরের এক বাসিন্দা আত্মঘাতি  গাড়ী বোমার বিস্ফোরণ ঘটালে  ৪০ জন ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনী সদস্য নিহত হয় । ঘটনার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে । পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠী জয়স-ই-মুহাম্মদ এর দায়িত্বও স্বীকার করে নেয়। পাকিস্তান এ ঘটনার ব্যাপারে বলে যেহেতু এটা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্নীরেরই একজন বাসিন্দা করেছে । কাশ্মীরের  জনগণের উপর ভারতের নিষ্ঠুর আচরণ, নির্যাতনেরই বহি:প্রকাশ এবং এটা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুক্তিকামী জনগণই করেছে  বলে মন্তব্য করে। ভারত বরাবরই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে চড়া মূল্য দিতে হবে ইত্যাদি হুমকি দেয়।  এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারী ভোরে ভারতীয় বিমান হামলায় ঘটনায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বালাকোট নামক পাহাড়ী স্থানে ভারতের ভাষায় তথাকথিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ নামের বিমান হামলা চালায়।

হামলায় নয়াদিল্লী ইসরাইলের রাফায়েল নির্মিত প্রিসিশন গাইডেড মিউনিশন (পিজিএম)  নির্ভুল  লক্ষ্যভেদী  ক্ষেপণাস্ত্র  ‘স্পাইস-২০০০’ ব্যবহার করে। হামলার পরপরই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে  দাবী করা হয় যে, জয়স-ই-মুহম্মদ নামের জঙ্গী গোষ্ঠির ঘাঁটি নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে । এবং দুই থেকে তিন শতাধিক জঙ্গী এতে নিহত হয়েছে। ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ দাবী নিশ্চিত করে বলেন হামলায় নিহত জঙ্গীর সংখ্যা ২৫০।

 

পত্রিকায় বিদেশী গণমাধ্যম ও সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা সংবাদটির খবর নিতে গিয়ে দেখতে পায় মূলত: ভারতীয় পাইলট ইসরাইলের আধুনিক স্পাইস লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্র নিদ্দিষ্ট টার্গেটে না ফেলে পাহাড়ের জঙ্গলে নিক্ষেপ করে।  নিরপেক্ষ স্যাটেলাইট ‘প্ল্যানেট ল্যাব’ সংস্থার  ইমেজে দেখা গেছে, যে স্থানে জয়স-ই-মুহাম্মদ নামের জঙ্গী গোষ্ঠীর ঘাঁটিটি তা কার্যত: অক্ষতই রয়ে গেছে। ভারতীয় দাবী মোতাবেক দুই থেকে তিনশ জঙ্গী খতমের দাবীটিও মোটেও সঠিক নয়। জঙ্গলে ঐ হামলায় একজন সামান্য আহত হয়। রয়টার্স সংবাদ সংস্থা স্থানীয় হাসপাতাল এবং গ্রামে গিয়ে ঐ হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের চেষ্টায় খোঁজখবর নেন। ভারতের দাবী যেখানে ২৫০ থেকে ৩০০ জঙ্গী ঐ ‘সার্জিকাল স্ট্রাইকে’  নিহত দাবী করা হয়েছে হাসপাতালে কোন আহত বা মৃতের হদিস পাননি তিনি। বৃটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বালাকোটের জাবা গ্রামের একজন স্থানীয় বাসিন্দার সাথে কথা বলেন ঐ বোমা হামলা সম্পর্কে । গ্রামবাসী  ভ্যান চালক আবদুর রশিদ বলেছেন, ‘ মরেছে তো কয়েকটি পাইন গাছ আর একটা কাক, আর কিছুই হয়নি। এত স্বাধীনতাকামী মরলো, আর একটা লাশও পাওয়া গেলনা- এটা হয় নাকি’। ভারত বোমাগুলি লক্ষ্যস্থল থেকে এক কিলোমিটার  দূরে ফেলেছে এবং সেগুলি পাহাড়ের গাছে ও জঙ্গলে পড়েছে। সেখানে একটি কাকও  মরে থাকতে দেখেছেন তিনি। বিশ্বের সামরিক বিশ্লেষকদের কাছে তথাকথিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ এখন কার্যত: হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

একেতো ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলটদের দক্ষতা নিয়ে বিশ্ব মহলে

মুখরোচক কৌতুক আছে। কোনপ্রকার যুদ্ধ ছাড়া কেবলমাত্র পাখীর সাথে ধাক্কা লেগে শান্তিকালীন সময়ে ভারতের যতগুলি জঙ্গী  বিমান ধ্বংস হয়েছে বহু দেশের বিমান বাহিনীতেও এত বিমান নেই। ১৯৭০ সাল থেকে এপর্যন্ত গত কয়েক দশকে  ভারতের বিমানবাহিনী পাখির সাথে ধাক্কা লেগে এবং পাইলটের ভুলের কারণে ৫০০ এর  কাছাকাছি জঙ্গী বিমান খুইয়েছে। ভারতীয় সংসদে গত ২০১২ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এ কে এন্টনির দেয়া এক হিসেবে প্রথম আঁৎকে উঠা এ খবরের সূত্রপাত। ঐ সময়ে অর্থ্যাৎ ৭ বছর আগে সংসদে দেয়া হিসেবে তিনি জানান, ১৯৭০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত শুধুমাত্র মিগ সিরিজের জঙ্গী বিমান পাখির সাথে ধাক্কা ও পাইলটের ভুলে ৮৭২টির মধ্যে অর্ধেকেরও বেশী ৪৩৮ টি খোয়া গেছে এবং পাইলট নিহত হয়েছে ২০০। এছাড়া গত কয়েক বছরে ২০১৫-১৯ সালে চার বছরে গেছে জঙ্গী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে  ২৭টি (তথ্য: টাইমস অব ইন্ডিয়া) এতে পাইলট মারা গেছে ৪০। এবছর ২০১৯ সালের শুরু থেকে গত কয়েক মাসে ভারতীয় বিমান বাহিনীর এসইউ-৩০ ও বৃটিশ নির্মিত জাগুয়ার এর মত  আধুনিক বিমানও পাখির ধাক্কায় খুইয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। পাকিস্তানের সাথে আগামী যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতের বিমানবাহিনীর মনোবল সংকট ও দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্বের বড় বড় সমরবিদরা।

ঐসময় মার্কিন প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ৩ মার্চ প্রকাশিত কলামে মারিয়া আবি হাবিব তো বলেই ফেলেছেন,‘আকাশ যুদ্ধে ভারত হেরেছে পাকিস্তানের কাছে। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র  এশিয়ায় চীনের আঞ্চলিক আধিপত্য ঠেকাতে ভারতের মত অদক্ষ সামরিক বাহিনীর উপর ভরসা করছে।’ তিনি তার কলামে আরও উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের সাথে মার্কিন সম্পর্কের এ অবনতির সুযোগে গত এক দশকে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সর্বাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে নিয়েছে। যা এক দশক আগেও ছিল শূন্যের কোঠায়। অর্থ্যাৎ তখন মার্কিনীরা ভারতকে আধুনিক সাজ-সরঞ্জাম দিতে অনীহা প্রকাশ করত।  নিউইয়র্ক টাইমস এর প্রতিবেদনে ভারতের বিশাল সামরিক বাহিনীকে একটি অদক্ষ সেকেলে উল্লেখ করে বলা হয় যে, এশিয়ার এই দুই চীর প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে গত প্রায় ৫০ বছরের মধ্যে এটিই প্রথম সরাসরি ভারতীয় বাহিনীর শক্তিমত্তা পরীক্ষার জন্য এটি ছিল উপযুক্ত সময়। ভারতের বিমান খোয়ানো ও পাইলট বন্দী  হতে দেখে ওয়াশিংটনের সামরিক পর্যবেক্ষকমহল হতভম্ব ও হতবাক। এদিকে বিবিসি স্যাটেলাইটে ভারতের দাবী অনুযায়ী কাশ্মীরের যে স্থানটিতে ভারত হামলা চালিয়ে জয়স-ই-মুহাম্মদ নামের জঙ্গী  গোষ্ঠীর আস্তানা ধ্বংস করেছে বলেছিল তারও একটি ছবি তুলে ধরে। এতে দেখা গেছে ঐ স্থানের সবকিছু অক্ষত রয়েছে  ভারতীয় বাহিনী সেখানে বোমা না ফেলে জঙ্গলে বোমা ফেলেছে। তবে ঐসময়ে আরও দু:সংবাদ হল পাকিস্তানী  বিমান মনে করে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভারত নিজেদের একটি হেলিকপ্টার ধ্বংস করে । যাতে ভারতের বৈমানিকসহ বিমানবাহিনীর ৬ সদস্য মারা পড়ে। ভারতের দি হিন্দু পত্রিকা পরে  ঘটনাটি ফাঁস করে দেয় এবং এ ঘটনায়  যুদ্ধকালীন সময়ে ভারতীয় বাহিনীর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ভারতের প্রভাবশালী এই দৈনিকের ২ জুন সংস্করনে সাংবাদিক দিনাকর পারি তার প্রতিবেদনের শিরোনাম দেন “হাউ ডিড এন ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এমআই-১৭ হেলিকপ্টার গেট শুট ডাউন বাই দি আইইএফ (ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স) ?”  অর্থাৎ ভারতীয় বিমান বাহিনী কি করে নিজেদের বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারকে নিজেরাই ভূপাতিত করল এ প্রশ্ন রাখেন তিনি। ঘটনার উল্লেখ করতে গিয়ে সাংবাদিক দিনাকর পারি লিখেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারী সকালে যখন পাকিস্তানের বিমানের সাথে ভারতীয় মিগ বিমানের সংঘর্ষ হয় ঠিক তখনই কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টার ২জন পাইলট ও ৪ জন সেনাসহ উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের ১০ মিনিটের মধ্যেই হেলিকপ্টারটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত হয়। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হয়তবা পাকিস্তানী বিমানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এটিকে আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু পরক্ষণে তদন্তে জানা গেল, ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানি বিমান মনে করে তাদের  ইসরাইলের  দেয়া আধুনিক স্পাইডার এয়ার ডিফেন্স ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতেই হেলিকপ্টারটিকে ভূপাতিত করা হয়েছে। হেলিকপ্টারটি জনবহুল এলাকায় ভূপাতিত হওয়ায় আরও একজন বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭ জন মারা যায়। পত্রিকা দি হিন্দু’র প্রতিবেদনে ভারতীয় বাহিনীর হাতে সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে কিন্ত এর যথাযথ ব্যবহারে দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।  হেলিকপ্টারটির সরবরাহকারী দেশ রাশিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞরা তাদের ঐ হেলিকপ্টারটি একেবারেই নতুন এবং কোথাও কোন ত্রুটি ছিলনা উল্লেখ করেন।

রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম ‘আরটি’ ভারতের বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সেনাদের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে  গত ২৯ মার্চ এ ঘটনার আরও বিশদ উল্লেখ করে শিরোনাম দেয় ‘ইন্ডিয়া ব্লো আপ ইটস ওন হেলিকপ্টার হোয়াইল টার্গেট পাকিস্তানী জেটস, কিলিং সেভেন’।  অর্থ্যাৎ পাকিস্তানী  জঙ্গী  বিমানকে টার্গেট করতে গিয়ে নিজেদের হেলিকপ্টারটি খোয়লো ভারতীয়রা। এতে আরও বলা হয়, রাশিয়ার এ মডেলের হেলিকপ্টার এমআই-১৭ভি৫ টি নতুন এবং এটিতে কোন কারিগরি ত্রুটিও ছিলনা। আসলে ভারতীয় বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র গ্রাউন্ড ইউনিট  শত্রু মিত্র চেনার সাংকেতিক সিস্টেমস আইএফএফ (আইডেন্ডিফিকেশন অব ফ্রেন্ড এন্ড ফো) এর বোতাম ঠিক সময়ে টিপেনি। নিজেদের হাতে খোয়া এধরণের একটি হেলিকপ্টারের বর্তমান মূল্য ১ কোটি ৭০ লক্ষ মার্কিন ডলার। ভারতের বিমানবাহিনী ( আইএএফ) ও তাদের বৈমানিকদের দক্ষতা যে কতটা নড়বড়ে এ  প্রশ্ন তুলে ‘ফাইটার জেট ওয়াল্ড’ গত ৬ মার্চের (২০১৯) সংখ্যায় এর একটি চিত্র তুলে ধরে। ঐ প্রতিবেদনে  শিরোনাম দেয় ‘ওয়াস্ট থার্টি ডে’জ ফর ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স: লস্ট সেভেন জেটস এন্ড ওয়ান হেলিকপ্টার।’ ভারতের রাজস্থান পত্রিকার রিপোর্টার জীবন এক সংবাদ সম্মেলনে সেদেশের বৈমানিকরা ঘন ঘন পাখির ধাক্কা কিংবা তাদের এত ত্রুটিতে প্রচুর বিমান বিনাযুদ্ধে খোয়ার কারণ কি এ প্রশ্ন তোলেন ভারতীয়  বিমান বাহিনী প্রধান বি এস ধানোয়ার কাছে। তিনি এক হিসাব দেখিয়ে বলেন,  শুধুমাত্র জানুয়ারী মাসের ৩০ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের ২৭ তারিখের এক মাস সময়ে ভারতীয় বিমান বাহিনী বিনাযুদ্ধে ৭ টি জঙ্গী বিমান ও ১টি হেলিকপ্টার খুইয়েছে। জঙ্গী  বিমানের মধ্যে রয়েছে ১টি ব্রিটিশ নির্মিত সিপিক্যাট জাগুয়ার, ১টি মিরেজ ২০০০টিআই, ১টি মিগ-২৭, ২টি সূর্য কিরণ বিএই ব্রিটিশ হক মার্ক-১৩২, ২ টি মিগ-২১ ও একটি রুশ নির্মিত এমআই-১৭ভি৫। এসময় ৬ জন বৈমানিক ও ৫ জন বিমানসেনাও এতে মারা যান। অপর একটি চাঞ্চল্যকর হিসেব দিয়েছে সুপরিচিত সামরিক বিষয়ক ভারতীয় ব্লগ পোর্টাল ‘ভারত রক্ষক’। এতে বলা হয়েছে, ভারতীয় বিমান বাহিনী গত ৮৬ বছরে এপর্যন্ত বিনাযুদ্ধে পাখীর ধাক্কা ও পাইলটের ভুল ও বিমানের ত্রুটির কারণে ১৭০৭টি বিমান হারিয়েছে। ঐ হিসেবে আরও বলা হয়, শুধুমাত্র ২০০০ সাল থেকে  ২০১৫ পর্যন্ত  ১৫ বছরে বিনাযুদ্ধে  পাখির ধাক্কা ও ত্রুটির কারণে ভারত ২৬৪টি বিমান খুইয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী বা ভারতীয় হিন্দী ভাষায় ‘বায়ুসেনা’।

 

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার চলতি ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে আরও একটি খবর প্রচার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত সামরিক বিশ্লেষক চার্লি গাও। গত ১০ আগস্ট,২০১৯ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্য সামরিক নিউজ বুলেটিন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট-এ তার লেখা কলাম শিরোনাম “চায়না’স জেএফ-১৭ থান্ডার ফাইটার: পাকিস্তান’স সিক্রেট উইপন এগেইনস্ট দি ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স” -এ তিনি পাকিস্তানী বিমান বাহিনী দক্ষতার সাথে পাকিস্তানে তৈরী  জেএফ-১৭ থান্ডার জঙ্গী বিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে  ভারতীয় বিমান বাহিনীর ১টি মিগ-২১ জঙ্গী বিমান ভূপাতিত ও পাইলট আটককে ভারতীয় বাহিনীর  দুর্বলতার চিত্র বলে অভিহিত করেন। জেএফ-১৭ থান্ডার জঙ্গী বিমান পাকিস্তান চীন যৌথভাবে নির্মাণ করছে। মূলত: পাকিস্তানের কামরা’য় পাকিস্তান এ্যারোনটিক্যাল কমপ্লেক্সে তৈরী এ জঙ্গী বিমানের প্রায় ৫৮ শতাংশ পাকিস্তানী ইঞ্জিনিয়াররা তৈরী করছে। ইঞ্জিনসহ বাকী ৪২ শতাংশ চীন সরবরাহ করে আসছে । তবে পাকিস্তান সে নির্ভরশীলতা আরও কমিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে চায় এজন্য লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে রেখেছে। পাকিস্তানের ‘কামরা’ বিমান কারখানায় বছরে ২৫টি জেএফ-১৭ থান্ডার জঙ্গী বিমান তৈরী করতে সক্ষম।

মার্কিন ‘ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ সামরিক বুলেটিনের বিশ্লেষক চার্লি গাও তার প্রতিবেদনে বলেন , ভারতের বিরুদ্ধে নিজেদের  কোন বিমান না খুইয়ে ডগফাইটে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জেএফ-১৭ থান্ডার তাদের প্রথম শিকার করতে সক্ষম হল এবং এ জঙ্গী বিমানের কার্যকারিতা কতখানি তা পরখ করে দেখার সুযোগও পেল। পাকিস্তানের জেএফ-১৭ পাইলটের উদ্ধৃতি দিয়ে চার্লি গাও বলেন, দেশটির  বৈমানিকরা ভারতের রাশিয়ায় নির্মিত এসইউ-৩০ বিমানের চাইতেও আধুনিক মার্কিন এফ-১৬ জঙ্গী বিমানের সাথে পাল্লায় সমকক্ষ নিজেদের  জেএফ-১৭ জঙ্গী বিমান থেকে  বিভিআর (বায়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ) ক্ষেপণাস্ত্র  ছোঁড়ার  ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। অর্থ্যাৎ এ বিভিআর নিজ সীমান্ত এলাকার মধ্যে থেকেই ৮০-১০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম একটি  মিসাইল। পাকিস্তানি পাইলটরা দক্ষতার সাথে  আগে থেকেই এর মহড়া চালিয়ছিল । পাকিস্তানের হাতে ১০০টি জেএফ-১৭ থান্ডারসহ সেদেশের বিমান বাহিনীতে ৭৬টি  যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ নিয়ে মোট জঙ্গী বোমারু বিমানের সংখ্যা ৫০১টি ( সূত্র: আমর্ড ফোর্সেস.ইইউ)। (চলবে)

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.