--- বিজ্ঞাপন ---

জাতিসংঘে মায়ানমার প্রশ্নে বাংলাদেশের পক্ষে চীন-ভারত কেউ ছিলনা, কাশ্মির প্রশ্নে পাকিস্তানের পক্ষে চীন, ভারতের পক্ষে সৌদি-আরব আমিরাত

0

চলমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রতিবেশি বৃহৎ রাষ্ট্র চীন ও ভারত কেউ ছিল না বাংলাদেশের পাশে। চীন প্রকাশ্যে সরব ছিল মায়ানমারের পক্ষে। চীন ও মায়ানমারে এক সাথে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক চেষ্টা চালায়। প্রস্তাবটি ছিল, রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন-নিপীড়ন। এর জন্য  আন্তর্জাতিক তদন্ত ও বিচার আহ্বান। চীন শুরুতে এ প্রস্তাবকে একপেশে বলে অভিহিত করে । জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে ভোটাভুটির আহ্বান জানায় চীন।  শুরুতেই চীন ও মিয়ানমার সবাইকে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আহ্বান করেছিল।  শেষপর্যন্ত ভোটের ফলাফলে দেখা যায় প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় চীন ও ফিলিপাইন।  ভারত, জাপান, নেপাল, কঙ্গো, ক্যামেরুন, অ্যাঙ্গোলা ও ইউক্রেন—এই সাতটি দেশ ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে জানায় তারা কারও পক্ষ নেবে না। বাংলাদেশের পক্ষে মালয়েশিয়া শক্তিশালী অবস্থান নেয়। শেষপর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে পড়ে ৩৭ ভোটে, আর মায়ানমারের পক্ষে পড়ে ২ ভোট। চীন ও ফিলিপাইন। কৌশলে বিরত থাকে কিউবা। তবে তাদের ভূমিকা ছিল ইতিবাচক।  রাশিয়া বর্তমানে মানবাধিকার পরিষদের সদস্য নয়।  মিয়ানমার ইস্যু দেশ হবার কারনে প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বক্তব্য দিলেও সদস্য না হওয়ায় ভোট দিতে পারেনি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিত ‘ শীর্ষক প্রস্তাবটি আনে। আন্তর্জাতিক আদালতে মায়ানমারকে তোলায় ছিল বাংলাদেশের উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান গতকাল সন্ধ্যায় ভোটের আগে মানবাধিকার পরিষদকে বলেন, মানবতার কারনে  বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্মম নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে তাদের আশ্রয় দেন। গত  দুই বছর পেরিয়ে গেলেও মিয়ানমার এখনো উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। গৃহীত প্রস্তাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী উত্তর রাখাইন অঞ্চলে সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও সম্মানের সঙ্গে নিজেদের আবাসস্থলে ফিরে যেতে উৎসাহিত করতে মানবাধিকার পরিষদ মিয়ানমারকে আহ্বান জানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে প্রস্তাবে রোহিঙ্গারা ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত তাদের গুরুভার বহনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে আহ্বান জানানো হয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অমানবিক নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পক্ষে জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার পথে এই প্রস্তাব একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমার তার অভ্যন্তরীণ বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে সক্ষম বিধায় প্রস্তাবটি গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এ প্রস্তাবে কেবল একটি সম্প্রদায়ের মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে । চীনা প্রতিনিধিও প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, এ প্রস্তাবটি একপেশে।

কাশ্মির ইস্যু

অপরদিকে কাশ্মীর সরব পাকিস্তান মুসলিম বিশ্বের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালায়।  কিন্ত ভারতের পক্ষে  আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবস্থান নেয়। পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে চীন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তে মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করে । 

আরব আমিরাতের মতে, ভারত সরকারের পদক্ষেপের ফলে সরকারের উপর মানুষের আস্থাও বাড়বে। মোদী সরকারের দ্বারা সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা হলে কাশ্মীরে আর্থসামাজিক স্থিরতা ও শান্তি বাড়বে বলে আরব আমিরাত মনে করে। সৌদী আরব ৩৭০ ধারা বিলোপ ও জম্মু-কাশ্মীর ভাগ করে লাদাখ গঠনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচকই হবে বলে মনে করে।  ভারতের পক্ষে  অবস্থান নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মরগান ওরতেগাস এক বিবৃতিতে বলেন, কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সিদ্ধান্ত সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। জম্মু ও কাশ্মীরে যা হচ্ছে তা নজরে রাখছি আমরা। জম্মু ও কাশ্মীরকে ভাগ করা ও তাদের সাংবিধানিক অধিকার বিলোপ করার বিষয়টি নজরে রয়েছে।  চীন জানায়, পাকিস্তানের স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও মর্যাদাকে আমরা সমর্থন করি। ভবিষ্যতেও করবো। চীন সবসময় বিশ্বাস করে যে দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই অঞ্চলের যৌথ স্বার্থে রয়েছে। ##

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.