--- বিজ্ঞাপন ---

হাজার  হাজার সৌদি সৈন্য ও সামরিক যান আটকের দাবী ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ( ২৯ সেপ্টেম্বর , ২০১৯ ইং) : ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সূত্র দাবী করেছে তারা সৌদি আরবের নাজরান সীমান্ত অঞ্চলে হামলা চালিয়ে সৌদি আরবের হাজারো সৈন্য ও সামরিক যান দখল করেছে। সংবাদটি জানিয়েছে আল জাজিরা টিভি ও রয়টার সংবাদ সংস্থা।  সৌদি আরবের তরফ থেকে এ দাবীর তাৎক্ষনিক সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে বার্তা সংস্থা রয়টার দুবাই থেকে জানিয়েছে।

হুতি বিদ্রোহীদের দ্ধারা পরিচালিত ‘আল মাশিরাহ’ টিভি’ তে দেয়া এক বিবৃতিতে ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের সেনাবাহিনীর বহু অফিসার ও সেনা সদস্যকে বন্দী  করেছে দাবী করে। হুতি বিদ্রোহী সামরিক মুখপাত্র দাবী করেছে , ৭২ ঘন্টা আগে পরিচালিত হুতিদের ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে এ অভিযানে  সৌদি আরবের  তিনটি সেনা ব্রিগেডের পতন হয়েছে এবং এতে তারা শত্রুপক্ষের   প্রচুর সংখ্যক সাঁজোয়া যানও তারা দখল করে নিয়েছে জানিয়েছে।  তবে এ দাবীর ব্যাপারে  ইয়েমেনের সাথে গত চার বছরের যুদ্ধে সৌদি জোটের মুখপাত্রকে রয়টার সংবাদ সংস্থার তরফ থেকে জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষনিক কোন মন্তব্য করেননি বলে সংবাদ সংস্থাটি জানায়। সংবাদ সংস্থা রয়টারের পক্ষ থেকেও সংবাদটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়।  ইয়েমেনের সরকারী সৈন্যরা  সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জোটের বিমান হামলার সমর্থন নিয়ে  বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সীমান্তের কাছাকাছি কাতাফ অঞ্চলে লড়াইতে লিপ্ত হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এতে হুতিরা বেশ কিছু সংখ্যক ইয়েমেনি সরকারী সৈন্য আটক করেছে।  এই হানাহানির ফলে জাতিসংঘের তরফে দুপক্ষের মধ্যেকার উত্তেজনা  প্রশমন করে যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনার পথ প্রশস্থ করার সম্ভাবনা বাধাগ্রস্ত করবে। যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও অধিক প্রাণহানি ঘটেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ এই আরব উপদ্বীপে  দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছে।

 

২০১৪ সালে ইরান সমর্র্থিত  শিয়া হুতি বিদ্রোহীরা আন্তর্জাতিকভাবেস্বীকৃত সুন্নী মুসলিম দ্ধারা গঠিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সৌদী সমর্থিত জোট ২০১৫ সালে ইয়েমেনের  সুন্œী সরকারী জোটের পক্ষে যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করে। এবং তারা পশ্চিমা দেশসমূহ থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও গোয়েন্দা সমর্থন লাভ করে আসছে । এদিকে গত বছরের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের মাধ্যমে উভয় পক্ষের ৭ হাজার বন্দী  বিনিময়ে সম্মত হলেও তা এখনও দৃশ্যত: কার্যকর হয়নি।

হুতিদের মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদুল সালাম  সর্বশেষ এ দাবীর পক্ষে এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ‘আল্লাহর নামে’ এই অভিযানটি এযাবৎকালে সৌদি সমর্থিত জোটের বিরুদ্ধে মাত্র কয়েক দিনের যুদ্ধে বড় সাফল্য এনেছে। এতে শত্রু পক্ষের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বহু এলাকা দখলমুক্ত করতে পেরেছেন তারা। এই হুতি বিদ্রোহীরা গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদী আরবে সাম্প্রতিক কালের বৃহত্তম হামলায় দেশটির তেল স্থাপনার প্রচুর ক্ষতি করেছে দাবী করে। রিয়াদ অবশ্য হুতিদের এ দাবীকে প্রত্যাখ্যান করে এটি তার আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ  শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইরানের কাজ বলে দেশটিকে অভিযুক্ত করে। ইরান এ হামলায় তার জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। হুতিরা গত ২০ সেপ্টেম্বর  এমর্মে প্রস্তাব দেয় যে, সৌদি সমর্থিত জোট তাদের অভিযান হামলা বন্ধ করলে তারাও ড্রোন ও ক্ষেপনাস্ত্র হামলা বন্ধ করবে। জোটের পক্ষ থেকে হুতিদের দেয়া এ প্রস্তাবে এখনও কোন সাড়া দেয়া হয়নি।

 

ইয়েমেনের এ যুদ্ধ দৃশ্যত: সৌদি আরব বনাম ইরানের মধ্যেকারই আঞ্চলিক দ্বন্দেরই বহি:প্রকাশ হিসেবে প্রতিয়মান হচ্ছে।

## শহীদ, ২৯.০৯.২০১৯ ইং।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.