--- বিজ্ঞাপন ---

কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন দুতাবাস, বিশেষ নির্দশনা জারী

0

বিশেষে প্রতিনিধি, কাতার থেকে

বিশ্বকাপ সামনে রেখে কাতারে বাংলাদেশিদের নিয়ে উদ্বিগ্ন দুতাবাস। কারন বাংলাদেশি কিছু মানুষের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ দুতাবাসের নজরে এসেছে যাতে রীতিমতো বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হবার পথে। মধ্যপ্রাচ্যর ধনী দেশ কাতার। এখানে বহু বাংলাদেশি বছরের পর কাজ করছেন। দেশে পাঠাচ্ছেন মূল্যবান রেমিট্যান্স। কিন্ত অভিযোগ উঠেছে কাতারের বাংলাদেশ কমিউনিটির কিছু মানুষের বিভিন্ন অপরাধমূলক এবং বেআইনি কার্যক্রম এমন পর্যায়ে গেছে যাতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশি বেশিরভাগ ভালো কাজের সাথে যুক্ত। খারাপ কিছু মানুষের কারনে ভালোরা বিপাকে পড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে দুতাবাস গত ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশিদের জন্য বাংলা ও আরবি একটি নির্দেশনা জারী করেছে। যাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কাতারের বিদ্যমান আইন-কানুন, বিধি-নিষেধ, নিয়মনীতি এবং ঐতিহ্য যথাযথভাবে মেনে চলা। নিয়োগকারীর সাথে সম্পাদিত শ্রমচুক্তির একটি কপি সবসময় নিজের নিকট সংরক্ষণ করা। চুক্তি মোতাবেক নিজের অধিকার, প্রাপ্যতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকা। নিয়োগকারীর সাথে কোন বিষয়ে শ্রম বিরোধ দেখা দিলে চুক্তিপত্র অনুযায়ী তা নিষ্পত্তির জন্য কাতারস্থ লেবার ডিপার্টমেন্ট (আল-হুদা টাওয়ার, দাফনা) ও লেবার কোর্টে (সানাইয়া-১৩) অভিযোগ দাখিল করা। কাতারের Ministry of Interior -এর অনুমতি ব্যতীত নিয়োগকর্তা ছাড়া অন্য কারো অধীনে কাজ না করা। ভাল করে না পড়ে বা না বুঝে কোন কাগজে স্বাক্ষর না করা। নিজ পাসপোর্ট নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণে রাখা এবং কাতারী আই.ডি. সর্বদা নিজের সাথে রাখা। কাতারের প্রচলিত আইন অনুসারে মাদক দ্রব্য বহন, সেবন এবং পাচার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং বাংলাদেশ থেকে কাতারে আসার সময় ভালো করে না জেনে কোনভাবেই অন্যের দেয়া কোন মালামাল বহন না করা, তেমনিভাবে কোন প্রকারের ঔষুধ বহন করার ক্ষেত্রে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বা রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত ঔষুধের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপসন) সাথে রাখা। ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন প্রচলিত আইন লংঘিত না হয় এবং আপনাকে কোন জবাবদিহিতা করতে না হয়।নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা এবং আশেপাশের রাস্তাঘাট ও আবাসিক এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। পথচারী পারাপারের ক্ষেত্রে আশপাশে গাড়ী আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে সতর্কতার সাথে নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে রাস্তা পার হওয়া এবং উক্ত নিয়মের ব্যতিক্রম করলে ২০০ কাতারি রিয়াল জরিমানা প্রদান করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত প্রেরিত রেমিটেন্সের উপর ২% প্রণোদনা সুবিধা প্রাপ্তির লক্ষ্যে বৈধপথে রেমিটেন্স প্রেরণ করা। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সুবিধাদি প্রাপ্তির লক্ষ্যে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদ গ্রহণ করা। ভিসা ক্রয়-বিক্রয় করা কাতারের আইন অনুসারে দন্ডনীয় অপরাধ, কাজেই ভিসা ক্রয়-বিক্রয়ে নিজেকে সম্পৃক্ত না করা।

কোম্পানীতে কাজ আছে কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে কাতারে নিজে না আসা বা আত্নীয়-স্বজনসহ অন্যকে না নিয়ে আসা।
জুয়া না খেলা এবং উক্ত খেলার আসরের কাছাকাছি না যাওয়া। ফ্রি ভিসায় কাজ না করা। অন্যথায়, আইনানুযায়ী জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে। কাতারে আসার পূর্বে কাতার ভিসা সেন্টার থেকে মেডিক্যাল চেক-আপ, আঙ্গুলের ছাপ প্রদান এবং চাকুরির চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর সম্পন্ন করা।  কোন প্রকারের জালিয়াতি, হয়রানি, আমানতের খেয়ানত এবং আবাসস্থল বা কর্মক্ষেত্র থেকে কোন কিছু চুরি বা এ ধরনের কোন অপরাধে নিজেকে সম্পৃক্ত না করা। যে কোন প্রয়োজনে অনুগ্রহপূর্বক কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হটলাইনে (৩৩৬৬২০০০) যোগাযোগ করুন।

প্রবাসীরা বলছেন, এ ধরনের নির্দেশনা বাংলাদেশিদের জন্য একটি খারাপ নজির। কারন একটি দেশের মানুষদের জন্য এ ধরনের আদেশ দেয়া মানে ভবিষ্যতে খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। কাতার থেকে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশে রেমিটেন্স হিসেবে যায়। এখন থেকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা না করলে যে কোন সময় কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.