--- বিজ্ঞাপন ---

তুর্কী বাহিনী সিরিয়ার টি-৫৫ ট্যাংক দখলে নিয়েছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ, অভিযান চলবে– এরদোয়ান

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তুরস্ক ও তার সমর্থিত এসএনএ (সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি) বাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরে অভিযানের ৭ম দিনে মঙ্গলবার মানিবিজ শহরের উপকন্ঠে সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর একটি টি-৫৫ ট্যাংক দখল করে নিয়েছে । সাউথ ফ্রন্ট সংবাদ মাধ্যমে এ খবর দিয়েছে। তুরস্ক ও তার সমর্থিত এসএনএ  কামানের প্রচন্ড গোলাবর্ষনের মধ্য দিয়ে  অগ্রাভিযান অব্যাহত রেখেছে।  তুর্কী বাহিনীর অগ্রসর হচেছ দেখে সেখান থেকে ১০০০ মার্কিন সৈন্য অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। ঐ খবরে আরও বলা হয়েছে, তুর্কী সেনাদের  সরাসরি যাতে মুখোমুখি না হয়

মার্কিন সৈন্যরা  সেখানে  কারাগোজাক ব্রীজের কাছে  প্রতিবন্ধক গড়ে তুলে সিরিয়ার বাহিনীকে আটকে রেখেছে।   তুরস্ক ও তার সমর্থিত এসএনএ  বাহিনী ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামের এ অভিযানে   পিকেকে সমর্থিত কুর্দিস্তান সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) এর রসদ সরবরাহের  গুরুত্বপূর্ণ  পথ  বিচ্ছিন্ন করে এম-৪ হাইওয়ের একটি অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এসডিএফ এর সাথে সিরিয়া বাহিনীর এক চুক্তির পর সেখানে সিরিয়ার সরকারী সৈন্য ঐ অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এতে সিরিয়ার সৈন্যরা এখন সরাসরি এখন তুর্কী বাহিনীর মুখোমুখি হচ্ছে। এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে মস্কোতে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। অপরদিকে  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সন্তোষজনক আলোচনার জন্যসেদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী  মাইক পম্পেউকে বুধবার  তুরস্কে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন মঙ্গলবার। সিরিয়ার সৈন্যদের মুখোমুখি অবস্থান বিষয়ে তুর্কী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হুলুসি আকার ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সাথে ফোনে আলাপ হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।  তুর্কী বাহিনীর সৈন্যরা ইউফ্রেটিস নদী পার হওয়ার জন্য ব্রীজ তৈরীর সরঞ্জাম, ভারী ট্যাংক লিওপার্ড-২এ৪ মানবিজ শহরের উত্তরে মোতায়েন করে রেখেছে।

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে। প্রয়োজনে সিরিয়ার বাহিনীকে মোকাবেলা করবে তুর্কী সেনা ও এসএনএ বাহিনী। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে,  তুর্কী বাহিনীর দ্রুত অগ্রসরের মুখে আইন ঈসা ক্যাম্প থেকে আইসিস ইসলামিক স্টেট এর ৭৮৫ বন্দীকে ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে চাইছে এসডিএফ এমর্মে অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এবং সেখানে মার্কিন বাহিনী ইউফ্রেটিস নদীর উপর ব্রীজে সিরীয় বাহিনীকে কোবানী শহরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা ব্রীজের উপর আটকে দেয়া হয়েছে সিরিয়ার সেনা কলামকে।

মর্নিং স্টার পত্রিকা বলছে মার্কিন সৈন্যরা তুর্কী সৈন্যদের মুখোমুখি অগ্রসর হতে কুর্দি অধ্যুষিত রোজাবা অঞ্চলের দিকে যেতে চাইলে সিরিয়ার সামরিক বহরকে মানবিজ ও কোবানির মধ্যবর্তী অংশে নদীর উপর ব্রীজটিতে সাঁজোয়া যান রেখে  আটকে দিতে দেখা গেছে। পত্রিকাটি জানায় প্রাপ্ত ভিডিওতে দেখা গেছে, ৪টি মার্কিন সাঁজোয়া যান ব্রীজের উপর আড়াআড়ি দাঁড়িয়ে প্রতিবন্ধক দিয়েছে। এ সর্বশেষ সংবাদ জানিয়ে বলছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় অভিযান বন্ধ না করায় তুরস্কের বিরুদ্ধে কয়েকটি ক্ষেত্রে  নিষেধাজ্ঞা আরোপ ঘোষণা করেছে। এসব নিষেধাজ্ঞার আওতায় উচ্চপদস্থ তুর্কী  কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। তবে আরো কঠিন নিষেধাজ্ঞা আসছে জানিয়ে আলোচনার জন্য ভাইস পেন্সকে তুরস্ক সফরে পাঠাচ্ছে ওয়াশিংটন। মার্কিন সূত্রে জানা গেছে, তুরস্ক থেকে ষ্টীল আমদানীর উপর আরো বেশী শুল্ক আরোপ এ  নিষেধাজ্ঞায় থাকবে। তুরস্কও  এ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে বলেছে।

 

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সদস্য দেশসমূহকে সিরিয়ায় অভিযানের জন্য তুরস্কের উপর অস্ত্র বিক্রি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছে। ন্যাটো জোটের অন্যতম দেশ তুরস্কের বিরুদ্ধে অস্ত্র বিক্রী বন্ধ রাখার কথা বলেছে। জার্মানী, ফ্রান্স, ইটালী, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে অস্ত্র বিক্রী স্থগিত রাখার ঘোষণা দিলেও বৃটেন এতে সায় দেয়নি।  ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন ও জার্মানীর  চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মারকেল এ ব্যাপারে জোরালো ভুমিকা নেন। দেশ দুটি তুরস্কের শত্রু পিকেকে ও কুর্দি দেশগুলির সমর্থক।  এর সাথে ফোনে এব্যাপারে তার দেশের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন বলে সেদেশের সংবাদ মাধ্যম জানায়। যুদ্ধে এপর্যন্ত ৫৬০ কুর্দি ও তাদের সমর্থিত যোদ্ধা নিহত হয়েছে। অ

পরদিকে অভিযানে তুরস্কের ৬ জন সৈন্য নিহত  ১২ জন এনএসএ যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে তুরস্কের সেনাবাহিনী বলছে। পত্রিকাটি জানায়,  তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিচিপ তায়িফ এরদোয়ান বলেছেন, তুরস্কের সেনাদের এ অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে কুর্দীদের দ্ধারা বিতাড়িত এসব অঞ্চল থেকে যেসকল মানুষ তুরস্কে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে তাদের জায়গায় ফিরিয়ে আনা। এবং   তুরস্কে আশ্রয় নেয়া  ৩৬ লক্ষ সিরীয় শরণার্থীকে দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করে এসকল অঞ্চলে তাদেরকে পুনর্বাসন করা।

## শহীদ, ১৬.১০.২০১৯ইং।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.