--- বিজ্ঞাপন ---

বিশ্বের মিলিটারি ড্রোন বাজারে চীনের নজর

0

বিশ্বে সামরিক ড্রোন মার্কেটের দিকে নজর দিচ্ছে চীন। ২০২০ সালে চীনের টার্গেট দেশে দেশে সামরিক ড্রোন সরবরাহ। এ লক্ষ্যেকে সামনে রেখে তারা তৈরি করছে সামরিক ড্রোন। এরই মধ্যে চীন সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ড্রোন সরবরাহ করতে এজেন্ট নিয়োগ করছে। চীনের বিভিন্ন কারখানায় ড্রোন নির্মানের কাজও জোরেশোরে শুরু হয়েছে। চীন প্রতি বছর তার ক্লায়েন্টদের কাছে বৃহত সামরিক ড্রোনসহ ২০০টি মাঝারি আকারের ড্রোন সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এশিয়া টাইমস।

এরই মধ্যে এ সামরিক ড্রোনের নাম দেয়া হয়েছে রেইনবো সিএইচ-৪।  ড্রোনগুলির প্রথম ব্যাচটি ইতিমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং শিগগিরই সরকারী এজেন্সিগুলিতে পৌঁছে দেওয়া হবে। চীনের এরোস্পেস বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি একাডেমি সব কিছুর নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। অক্টোবরের শেষের দিকে চীনের তাইজহু প্লান্টে  প্রথম সিএইচ -৪ উৎপাদনের কাজ জরুরীভাবে শেষ করা হয়। সাতটি ড্রোন ব্যবহারের উপযোগী হয়। যার দাম ধরা হয়েছে সাড়ে ২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চীনের ন্যাশনাল জিওমেটিক্স সেন্টারের সাথে চুক্তির মাধ্যমে এগুলো সরবরাহ করা হবে।  ইতোমধ্যে চীনের ঝুহাইয়ের ১২ তম চীন আন্তর্জাতিক বিমান চালনা ও মহাকাশ প্রদর্শনীতে এর প্রযুক্তিগুলি প্রদর্শন করা হয়েছিল, যা সারা বিশ্বের নজর কাড়ে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এসব ড্রোন না বানানোর জন্য বিগত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। মার্কিন অস্ত্র বিক্রির পক্ষের সমর্থকরা সশস্ত্র ড্রোনগুলির উপর কঠোর রফতানি নিষেধাজ্ঞার জন্য অনেকটা কান্নাকাটি করে। কিন্ত চীন সেগুলো পাত্তা না দিয়ে তাদের কাজ করে যায়। ধারনা করা হচ্ছে, চীনের এ ড্রোন কিছুটা হলেও মার্কিন অস্ত্র বাণিজ্যে ভাগ বসাবে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন নির্দ্বিধায় সশস্ত্র ড্রোন বাজার দখলের চেষ্টা করছে।

এসআইপিআরআইয়ের সিনিয়র গবেষক সিমোন ওয়েজম্যান এশিয়া টাইমসকে বলেছেন, “চাইনিজরা প্রশ্ন না করেই বিক্রি করবে। “চাইনিজরা আপনার দিকে একবার নজর দেবে এবং আপনাকে বিক্রি করবে। পশ্চিমা সরবরাহকারীরা আপনার দিকে নজর দেবে এবং শর্তগুলির তালিকা দেবে ”

জানা গেছে, সিএইচ -৪ স্থল এবং সমুদ্রের উপরে উচ্চ-উচ্চতা মিশনের জন্য উপযুক্ত, এবং এটির সর্বাধিক ১২ হাজার ৬০০ কেজি ওজনের এবং ১১০ কেজি পেডলড ক্ষমতা রয়েছে। সিএইচ -৪ সিরিজের জন্য সহনশীলতা ৩০ঘন্টা পর্যন্ত দাবি করা হচ্ছে। এর ডানা ১৮ মিটার, একটি টেক অফ ওজন ১ দশমিক ৩ টন এবং একটি পেডলোড ৩৫০ কেজি। চাইনিজ ইউএভি ল্যান জিয়ান ((ব্লু অ্যারো)) লেজার-গাইডেড এয়ার-টু-সারফেস মিসাইল, টিজি ১০০ লেজার / আইএনএস / জিপিএস-গাইডেড বোমা এবং এআর -১ / এইচজে -১০ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল সহ পে-লোড বহন করতে পারে । অনেকটা আমেরিকান তৈরি হেলফায়ার ক্ষেপনাস্ত্রের সমান । এটির বিশেষত্ব হলো,স্থল এবং সমুদ্রের উপরে উচ্চ-উচ্চতার মিশনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং এটি ৫০০০ মাইল অবধি তার অস্ত্রটিকে চালিত করতে পারে।

দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে, সশস্ত্র ড্রোন বাজারে চীনের ক্রমবর্ধমান অংশ প্রদর্শনীতে রয়েছে। আজ অবধি, কেবল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ইতালি এমকিউ -৯ রিপারের একটি সশস্ত্র সংস্করণ কিনেছে, অন্যদিকে জর্ডান সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য মিত্ররা সিএইচ -৪এর মতো চীনা ড্রোনও উড়ানোর চেষ্টায় লিপ্ত।পেন্টাগন সম্প্রতি চীনের ডিজেআই দ্বারা নির্মিত ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে এবং শীঘ্রই সমস্ত চীনা নির্মিত ড্রোনের সামরিক ব্যবহারও নিষিদ্ধ করতে পারে।

সিএনবিসি জানিয়েছে,চাইনিজরা যে কোনও ইচ্ছুক ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে সক্ষম হওয়া ছাড়াও বাজারে সর্বনিম্ন দামের অফার দেয়,। লন্ডনের রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের ভূমি যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ জ্যাক ওয়াটলিংয়ের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের আমেরিকান সশস্ত্র ইউএভি বিক্রি করতে অস্বীকার করার পর সংযুক্ত আরব আমিরাত চীনা ড্রোন ক্রয় শুরু করেছিল। উপসাগরীয় সামরিক বাহিনীর আমেরিকান ড্রোন রয়েছে, তবে সেগুলো লক্ষ্যবস্ত ধ্বংস করতে সক্ষম নয়।

সামরিক ড্রোন দিয়ে চীন শেষপর্যন্ত কতদুর যেতে পারে এটাই এখন দেখার বিষয়।###৩১.১২.১৯

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.