রোটারীর সিলেটের সম্মেলন নিয়ে টালমাটাল এখন জেলা ৩২৮২। বাংলাদেশে রোটারীর দুটি জেলা। বৃহত্তর চট্টগ্রাম নিয়ে হচ্ছে ৩২৮২। এই জেলার সম্মেলন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো। আর এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দু’প্রার্থীর মধ্যে শুরু থেকে ছিল উত্তেজনা। তবে নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে রীতিমতো আশাবাদী ছিলেন রোটারীয়ান জাহাঙ্গির চৌধুরী। কিন্ত সমস্যা হয়ে গেলো অন্যখানে। তা হলো বাতিল ভোট। এই বাতিল ভোটই এখন বড় ধরনের ইস্যু হয়ে দাড়িয়েছে। রোটারীয়ান জাহাঙ্গীর চৌধুরীর অভিযোগ টিক ও ক্রস চিহ্নের ফাদেঁ যেসব ভোট বাতিল করা হয়েছে তাতে সঠিক মতামতের প্রতিফলন হয়নি। ফলে সম্মেলনে হৈচৈ শুরু হয়। জেলা গর্ভনর হিসেবে রোটারীয়ান রুহেলা খানকে ঘোষণা করার পর পর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রোটারীয়ান জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা।
এদিকে যে দু’জন প্রার্থী নিয়ে এ তুলকালাম হচ্ছে তারা দু’জনই চট্টগ্রামের। একজনকে যিনি বিজয়ী তাকে তার সমর্থিত পক্ষ সম্বর্ধনা দিচ্ছেন, অন্যদিকে যিনি মনে করছেন তাকে হারানো হয়েছে তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে আলোচনায় রয়েছেন। দু’জনের সমর্থকদের কর্মকান্ডে রোটারী জগতে নেমে এসেছে হতাশার ছায়া। উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে কথাবার্তা। এরই মধ্যে জেলার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন রোটারীয়ান আজিজুল হক। তিনি দোষারোপ করেছেন বর্তমান জেলা গর্ভনর রোটারীয়ান পীর আতাউর রহমানকে। তিনি এক স্ট্যটাসে উল্লেখ করেছেন, গর্ভনর হিসেব তিনি যে ভুমিকা রাখার কথা সেটা রাখতে পারেন নি। তাই একজন ব্যর্থ গর্ভনরের হয়ে কাজ করার চেয়ে পদত্যাগই ভালো। অপর দিকে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে এসিসট্যান্ট গভর্নর রোটারীয়ান মিনহাজও পদত্যাগ করেছেন।
এদিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিস্তারিত তুলে ধরেন গভর্নর প্রার্থী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি ১২৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছি। আমার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রুহেলা খান চৌধুরী পেয়েছেন ১২৪ ভোট। কিন্তু ফল হ্যাক করা হয়েছে। আমার পাঁচটি ভোট অবৈধভাবে বাতিল করে দুই পক্ষকে ১২৪-১২৪ দেখিয়ে ফল টাই করা হয়। এরপর গভর্নরের এক ভোট প্রয়োগ করে নির্বাচন কমিশন ও গভর্নর যোগসাজসে প্রতিপক্ষকে বিজয়ী ঘোষণা করেন যা সম্পূর্ণ বেআইনী ও রোটারি ইন্টারন্যাশনালের নির্বাচন পদ্ধতির লঙ্ঘন।’ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর অভিযোগ করে বলেন, ‘নির্বাচনের গণনা শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়ার উদ্যোগ নেয়। এছাড়া বাতিলকৃত ৫টি ভোটের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বললেও নির্বাচন কমিশন ও গভর্নর এ নিয়ে নূন্যতম আলাপ-আলোচনা না করে পুলিশ ডাকে এবং তড়িঘড়ি করে বিতর্কিত ফল ঘোষণা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।’ লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ভোট দেয়ার সময় ব্যালটে টিক চিহ্ন নাকি নম্বর লিখবে নির্বাচন কমিশন স্পস্টভাবে তা ব্রিফ করেনি। একটি ক্লাবের ৩টি ভোট আমার পক্ষে টিক চিহ্ন দিয়ে সমর্থন করার পরও তা বাতিল করা গভর্নর ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ নীল নকশার বাহিপ্রকাশ।
এদিকে রোটরীয়ান সাইফুল হুদা সিদ্দিকী তার ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যটাস দেন। তাতে তিনি রোটারীয়ান জুনায়েদ আলমের সূত্র ধরে উল্লেখ করেন, রোটারী ও সত্যের জয়। গত ৪ জানুয়ারি ২০২০ সিলেট কুসিয়ারা কনভ্যেনশন হল এ রোটারী জেলা গভর্ণর ২০২২-২০২৩ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে মোট ২৫৪ ভোট ও প্রার্থী ৪ জন। নির্বাচন কমিশন Preferential voting system, as per Rotary International Manual of Procedure অনুযায়ী ভোটারদের বলেছেন, প্রত্যেকে তাদের পছন্দের ব্যাক্তিকে নামের পাশে (১,২,৩,৪ পছন্দ অনুশারে) লিখার জন্য। কেউ টিক চিহ্ন অথবা ক্রস চিহ্ন ব্যবহার করলে ভোট বাতিল বলে গন্য হবে। ভোটারদের ১ম প্রাপ্ত ভোট- রোটারিয়ান রুহেলা খান চৌধুরী – ১২৩,রোটারিয়ান জাহাঙ্গীর চৌধুরী – ১২০,রোটারিয়ান ফাতেমা জেবুন্নেসা – ৪,রোটারিয়ান জিয়াউল হক জিয়া – ২,বাতিল – ৫ (টিক ও ক্রস চিহ্নের জন্য) । বাতিল হওয়া ভোটের বিষয়ে প্রত্যেক প্রার্থী প্রথমে মেনে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে এটা নিয়ে ১ জন প্রার্থী মত পরিবর্তন করার চেষ্টা করে। এবং রোটারিয়ান জাহাঙ্গীর এর অনূরুধে ৩ বার ভোট গননা করা হয়, যার কারনে ফলাফল পেতে বিলম্ব হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রার্থীরা যদি ৫০% এর বেশি ভোট না পায় তাহলে ভোটারদের ২য় পছন্দ কাউন্ট করা।
১ম ও ২য় যোগ করে প্রাপ্ত ভোট- রুহেলা – ১২৪, জাহাঙ্গীর – ১২৪ । যেহেতু ২ প্রার্থীর ভোট সমান তাই নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান জেলা গভর্ণর ১টি ভোট দিতে পারবে। সে নিয়ম অনুযায়ী বর্তমান জেলা গভর্ণর সকলের সামনে ঘোষনা করেন যে, উনার ভোট টি ভোটারদের ১ম ভোটে যে প্রার্থী বেশি ভোট পেয়েছেন তাকে উনার ভোটটি প্রদান করেন। তারপর নির্বাচন কমিশনার ঘোষনা করেন যে, ভোটারদের ১ম ভোটে সাথে জেলা গভর্ণর এর ১ ভোট যোগ করায় নির্বাচিত জেলা গভর্নর(২০২২-২০২৩) রোটারিয়ান সিপি রুহেলা খাঁন চৌধুরী নির্বাচিত হন। রোটারিয়ানদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই তাদের মূল্যবান ভোটটুকু সঠিক ব্যাক্তিকে প্রদান করায়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে রোটারী ও সত্যের জয় হয়েছে।
উপরের এই স্ট্যটাসকে ঘিরে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র কয়েকজন রোটারীয়ান। তাদের মন্তব্যগুলো হলো..
-
Zonayed Alam Hasina Akter মিথ্যা নয় সত্য তথ্য। আপনি তো ভোটিং এ ছিলেন না। নির্বাচন কমিশনাররা স্পস্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে। আর নতুন ১৪ ক্লাব নিয়ে আপনার খুব চুলকানি। সম্মান করি বলে মিথ্যাকে পসরয় দেইনা।
-
Hasina Akter Zonayed Alam আপনি ভাষায় শালিনতা বজায় রাখুন,যদি রোটারিয়ান হয়ে থাকেন,,অযাচিত কথা বলে নিজের লেবাস উন্মোচন করিয়েন না প্লিজ,,আপনি আমার কথার উত্তর ও দিবেন না,আশা করি ভদ্রতা বজায় রাখবেন।
-
Zonayed Alam Hasina Akter আমি আপনার সম্পর্কে কথা বলতে আগ্রহী না, তবে দয়া করে ১৪ ক্লাব সম্পর্কে কথা বলার আগে ভেবে চিন্তে কথা বলবেন। ভাল থাকবেন।Koyes Ahmed Sumon রুহেলা আপার বিজয়ে রোটারী জিতেছে, কনভেনশন সেন্টারে আমরা ও ছিলাম , সেদিন দেখেছি ভুলিনি কিছুই বলছি না শুধুমাত্র ওরাও নিজেকে রোটারিয়ান দাবি করে বলে সন্মান দেখাচ্ছি , আচরনে ফুটে উঠেছে সব কিছু সাইফুল ভাই অপেক্ষা করছি ধৈর্য ধরে আছি আপনার লেখা দারুন হয়েছে তথ্যভিত্তিক সত্য কথা মিথ্যা বুলি আওড়িয়ে যারা ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে তাদের এটা অনেক উপকারে আসবে।