বিশেষ প্রতিবেদন##
আমেরিকার সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দুরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। আমেরিকা মনে করছে এ সংস্থা চীনকে প্রাধান্য দিচ্ছে বেশি। অথচ সংস্থাকে সবচেয়ে বেশি টাকা দেয় আমেরিকা। করোনা টিকা নিয়েও আমেরিকা এ সংস্থার উপর ক্ষোভ ঝাড়লো। বলছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) যেখানে আছে সেখানে কোনও কাজই করবে না আমেরিকা। টিকা উৎপাদন, বিতরণ তো নয়ই। ভ্যাকসিন বন্টন নীতিতেও হু-এর মতামত নেবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সাফ জানিয়ে দিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
করোনা সংক্রমণের কথা চেপে গিয়ে হু চিনের সঙ্গে দিয়েছে, এমন অভিযোগ আগেও তুলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে ঠাণ্ডা লড়াই এখনও চলছে। সম্পর্ক কার্যত ছিন্ন। হু-কে অর্থ সাহায্য দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন সরকার। সব মিলিয়ে এখন পরিস্থিতি বেশ গরম। তাই হু যে কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেবে সেখানে কাজ করতে নারাজ ট্রাম্প প্রশাসন।বিশ্বের কোন দেশ আগে ভ্যাকসিন পাবে, কোথায় কী পরিমাণ ভ্যাকসিনের ডোজ পাঠানো হবে সে নিয়ে বৃহত্তর পরিকল্পনা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ১৭০টি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। টিকার দ্রুত উৎপাদন ও সামঞ্জস্য বজায় রেখে সব দেশেই সমানভাবে তার বন্টন প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন কর্মসূচী তৈরি হয়েছে–‘কোভিড ভ্যাকসিন গ্লোবাল অ্যাকসেস’ তথা ‘কোভ্যাক্স’ । এর উদ্দেশ্য হল চাহিদা অনুযায়ী সব দেশেই করোনার টিকা পৌঁছে দেওয়া, বিশেষত যে দেশগুলিতে সংক্রমণের হার ও মৃত্যু বেশি তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
কোভ্যাক্সের নেতৃত্বে আছে হু। তাদের সঙ্গে ভ্যাকসিন বন্টন ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করবে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডনেস ইনোভেশন ও আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গাভি। ভারত, নরওয়ে, বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ারডনেস ইনোভেশন। অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, উদ্যোগপতিদের সাহায্যে গরিব ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলিতে টিকা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছে গাভি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগ রেখেই কাজ করে গাভি। কোভ্যাক্স কর্মসূচীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি ও ইউরোপিয়ান দেশগুলিকে যোগ দেওয়ার আবেদন করেছিল হু। কিন্তু এখানেই বেঁকে বসেছেন ট্রাম্প।হোয়াইট হাউসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হু-এর নেতৃত্বে ভ্যাকসিন বন্টন ব্যবস্থায় যোগ দেবে না তারা। ট্রাম্পের বক্তব্য, চিন-ঘেঁষা হু-এর সঙ্গে করোনার টিকা সংক্রান্ত কোনও প্রকল্পেই যোগদান করতে চায় না আমেরিকা।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্রের কথায়, “বন্ধু দেশগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভাইরাসকে প্রতিহত করবে আমেরিকা, কিন্তু যেখানে দুর্নীতিগ্রস্থ হু-এর হাত রয়েছে সেখানে কোনও কাজ করব না।”
করোনা নিয়ে চিন ঘেঁষা অবস্থান এবং গাফিলতির অভিযোগ তুলে গত ১৪ এপ্রিল হু-কে অর্থ সাহায্য দেওয়া বন্ধ করে আমেরিকা। বলা হয়, করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে হু। চিনের উপর ভরসা রেখে ভুল করেছে তারা। সেই কারণেই আমেরিকায় ভাইরাসের সংক্রমণ এত বেড়ে গেছে। করোনাভাইরাস চিন থেকে ছড়িয়ে পড়ছে জেনেও মুখ বন্ধ করেছিল হু, এমন অভিযোগও করেন ট্রাম্প। তবে এই নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় আমেরিকাকে।##৩.৯.২০