--- বিজ্ঞাপন ---

রাশিয়া থেকে ভারত আনছে অত্যাধুনিক “একে-২০৩” অ্যাসল্ট রাইফেল

0

বিশেষ প্রতিবেদন##

রাশিয়া থেকে ভারত আনছে অত্যাধুনিক “একে-২০৩” অ্যাসল্ট রাইফেল।  মোট সাড়ে ৭ লক্ষ ইউনিট কেনার কথা রয়েছে।এরই মধ্যে প্রথম দিকে ৪০ হাজার ইউনিট রাশিয়া থেকে আমদানি করা হবে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। এসব অস্ত্রের প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা। বাকিগুলি যৌথ উদ্যোগে ভারতেই তৈরি হবে। অমেঠির কোরবায় উঠে আসা অর্ডন্যান্সের নতুন কারখানায় উৎপাদন করা হবে বাকি ইউনিটগুলি।

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে,এটা নিয়ে অনেকদিন ধরে দর কষাকষি চলছিল। ফলে আটকে যায় সবকিছু। শেষপর্যন্ত ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া কালাশনিকভ-চুক্তি আলোর মূখ দেখে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী অক্টোবর মাস থেকেই সেনার হাতে অত্যাধুনিক “একে-২০৩” অ্যাসল্ট রাইফেল চলে আসতে পারে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রের দাবি, আগামী অক্টোবরে ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারতে আসার কথা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পুতিন দুজনে মিলে ভারতের জন্য নির্মিত প্রথম একে-২০৩ রাইফেলের উদ্বোধন করতে পারেন।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় সেনায়, বিশেষ করে ইনফ্যান্ট্রিতে ভাল গুণমানের রাইফেলের আকাল রয়েছে। সেনার তরফে কেন্দ্রের কাছে দীর্ঘদিন ধরে রাইফেল কেনার বিষয়ে দাবি পেশ করা হয়েছে। একাধিক রিপোর্টের মাধ্যমে বলা হয়েছে, অবিলম্বে ফৌজের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র তুলে দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতীয় সেনা দীর্ঘদিন ধরে চাইছে, দেশে তৈরি ইনস্যাস রাইফেলকে সরিয়ে এমন অত্যাধুনিক রাইফেল কিনতে যা আগামী বেশ কয়েক বছর ভারতীয় বাহিনীর প্রধান অস্ত্র হবে একইসঙ্গে রক্ষণাবেক্ষণ খরচও কম হবে। ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরিতে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ইনস্যাস প্রভুতভাবে ভারতীয় বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু, তার গুণমান নিয়ে বিস্তর অভিযোগও উঠেছে।

একটা সময় এটাই সেনার অন্যতম প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছিল। অনেকে বলতেন, এটাই কালাশনিকভের ভারতীয় সংস্করণ। কিন্তু, সময়ের গ্রাসে এখন বর্তমান যুগে ইনস্যাসের কার্যকারিতা কমে গিয়েছে। উপরন্তু, ইনস্যাসের তেমন একটা আধুনিকীকরণও সম্ভব হয়নি। যে কারণে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে বাহিনীকে। অপরদিকে, শত্রুর হাতে এখন আরও আধুনিক অস্ত্র আসায় বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করে।

ইনস্যাস নিয়ে সেনার মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই এই রাইফেল নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়নি। বিশেষ করে, জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসদমন অভিযানে জঙ্গিদের এরে-৪৭ এর সামনে ব্যর্থ হয়েছে ইনস্যাস। যে কারণে, তড়িঘড়ি ১ লক্ষ এক-৪৭ কিনতে হয়েছিল সেনাকে।

এই পরিস্থিতিতে, ২০১৮ সালে প্রথমবার “একে-২০৩ ৭.৬২ এমএম ২০০ সিরিজ” অ্যাসল্ট রাইফেল কেনার বিষয়ে উদ্যোগী হয় কেন্দ্র। সেই বছর অক্টোবর মাসে পুতিনের ভারত সফরের সময় ইন্টার-গভর্নমেন্টাল এগ্রিমেন্ট (আইজিআই) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ওই সময় প্রচণ্ড উন্মাদনা ছিল, এই সম্ভাব্য চুক্তি ঘিরে। কিন্তু, দর কষাকষিতে অনেকটা সময় চলে যায়। উভয় পক্ষই সুনির্দিষ্ট রফাসূত্রে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়। যে কারণে, চুক্তির বাস্তবায়ণ নিয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়।

জট কাটাতে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করে কেন্দ্র। কিন্তু, তাতেও সমাধান সেই তিমিরেই থেকে যায়। এদিকে, বাহিনীতে রাইফেলের চরম সঙ্কট দেখা দেয়। যে কারণে, আপৎকালীন ভিত্তিতে গত বছর সেনা বাধ্য হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৭২ হাজার ৪০০ “সিগ সয়ার ৭১৬” অ্যাসল্ট রাইফেল আমদানি করে।

তবে, এতে বেশি অর্থ খরচ যে হয়, তাতে সন্দেহ নেই। কারণ, গোটা প্রক্রিয়াটা হয়েছে জরুরি ভিত্তিতে কেনার শর্তে। যার জেরে উৎপাদন খরচ বেড়ে গিয়েছে। ভারতকেও বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। সেই রাইফেল ইতিমধ্যেই চলে এসেছে। এদি্কে, কালাশনিকভ জট অব্যাহত থাকায় সেনা আরও সম-পরিমাণ সিগ রাইফেল দ্বিতীয়বার বরাত দেয়।

এ অস্ত্র ভারতের সারমিক অবস্থানকে আরও শক্ত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।###৪.৯.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.