--- বিজ্ঞাপন ---

শরণার্থীদের উপর গ্রীক সরকারের নির্দয় আচরণ, ইয়োরোপীয় দেশগুলির তথাকথিত মানবাধিকার বুলি এখানে দৃশ‌্য‌ত: নীরব!

0

ছবি: গ্রীসের লেসবস দ্বীপের অগ্নিকান্ডে ভস্মিভুত মোরিয়া শরণার্থী শিবিরের আশেপাশে খোলা আকাশের নীচে আশ্রয়রত শিশু নারী-পুরুষের উপর গ্রীক পুলিশের নির্বিচারে টিয়ার গ্যাস সেল নিক্ষেপ।

 

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম: গ্রীসের লেসবস দ্বীপে শনিবার সাম্প্রতিক অগ্নিকান্ডে আশ্রয়হীন হাজারো বিক্ষোভরত শরনার্থীর উপর গ্রীক পুলিশ কাঁদুনে গ্যাসের সেল নিক্ষেপ করে এবং নির্দয়ভাবে চড়াও হয়। শরণার্থীরা লেসবস দ্বীপটি থেকে অন্যত্র আরও নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার দাবীর মুখে গ্রীক কর্তৃপক্ষ তাদের উপর এই হামলা চালায়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত দেশ গ্রীসের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বেও শরনার্থীদের উপর কঠোরতার অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর (ইউনাইটে নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস) দ্বীপটিতে শরণার্থী সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে থাকায় দু বছর আগে থেকেই গ্রীসকে ঐ দ্বীপ থেকে বাড়তি শরণার্থীদের অন্যত্র ইউরোপীয় আশ্রয়দাতা দেশগুলোতে যেতে দিতে আহ্বান জানিয়েছিল। গ্রীক সরকার সেদিক কর্ণপাত করেনি।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম  রয়টার, বিবিসি সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, মূলত: আফ্রিকা ও আফগানিস্থান থেকে আসা প্রায় ১৩ হাজার শরণার্থীর ভারে মোরিয়া শিবিরটি একপ্রকার ঠাসা ছিল। গত সপ্তাহের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শিবিরটি প্রায় ভস্মিভুত হলে তখন থেকে শিবিরের শিশু-নারী-পুরুষরা যত্রতত্র রাস্তার পাশে শুয়ে রাত্রি যাপন করছিল। এদের কারো কারো দেহে কোভিদ-১৯ করোনা থাকায় এর সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। দেখা গেছে, শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) তীব্র রোদ উপেক্ষা করে শিবিরের শত শত নারী পুরুষ ‘ফ্রিডম’, ‘নো ক্যাম্প’ শ্লোগান দিয়ে নতুন শিবির স্থাপনের জন্য বুলডোজারের সাহায্যে মাটি খোঁড়ার কাজের সময় সেখানে সমবেত হয়। বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে কয়েকজনকে লাউডস্পিকারে জার্মান চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল এর দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছিলেন, ‘আমরা মোরিয়া শিবিরের মত নরকে আর ফিরতে চাইনা’, ‘ মিসেস মার্কেল, আপনি কি আমাদের কথাগুলো শুনতে পাচ্ছেন?’।  এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ দ্বীপটির মিটিলিন বন্দরের অভিমুখে রওয়ানা দিতে চাইলে কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করে এবং তাদের যাত্রা রোধ করে দেয়।

জানা গেছে, তুরস্ক থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরবর্তী দ্বীপের এই শিবিরটিতে ধারনক্ষমতার চার গুন অধিক শরনার্থী রয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ এই সর্বশেষ অগ্নিকান্ডের পর এদের অনেকেই এখন মাটিতে রাস্তার ধারে অত্যন্ত মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। তারা যত্রতত্র  শুয়ে রাত্রিযাপন করছে। গ্রীসের এথেন্সের ডাক্তাদের একটি সংগঠন পিরিয়াস হসপিটাল ডক্টরস এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট স্কাই টেলিভিশনে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, এসব শিবিরের মানুষের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তাদের কোন পানির ব্যবস্থা নেই, এমনকি তারা নিজেদের হাতও ধুতে পারছেনা।’

শিবিরের শরনার্থীদের দ্বীপ ত্যাগ করতে দিতে গ্রীক কর্তৃপক্ষের অনমনীয়তা এবং অগ্নিকান্ডে আশ্রয়হীনদের অন্যত্র স্থানান্তরের বিষয়ে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলোর সংগঠন ইইউ সংকটের মুখে। জাতিসংঘের ইউএনএইচসিআর শরণার্থী সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে এ অবস্থার অবনতি হতে পারে সেজন্য গ্রীক সরকারকে ২০১৮ সালেই সতর্ক করে দিয়ে এব্যপারে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।  #

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.