--- বিজ্ঞাপন ---

অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠলো, অপ্রতিরোধ্য হবে ইরান

২০১৯ সালে ইরান সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ১৮.৪ বিলিয়ন ডলার

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ##

ইরানের উপর জাতিসংঘ আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ১৩ বছর পর রোববার সকালে উঠে গেল। তবে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার বিপক্ষে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সাথে কোন দেশ লেনদেন করলে ওয়াশিংটনের  নিজস্ব নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে দেখে যুক্তরাষ্ট্র গত ৮ অক্টোবর ইরানের ১৮টি  অর্থ লেনদেনকারী ব্যাংককে বয়কটের তালিকায় এনেছে। ফলে ব্ল্যাকলিস্টকৃত ব্যাংকগুলির মাধ্যমে ইরান সহসা বিশ্বব্যাপী ব্যবসা বাণিজ্য বিশেষ করে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় করতে পারছেনা। ইউরোপীয় দেশগুলি, রাশিয়া ও চীনের সমর্থন থাকায় তেহরান প্রায় ১৩ বছর যাবৎ চলতে থাকা জাতিসংঘের এই নিষেধাজ্ঞা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫টি দেশের মধ‌্যে ১৪টি দেশই ইরানকে সমর্থন করে। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিরোধিতা করেছে। এটা জাতিসংঘে আমেরিকার জন‌্য বিরাট পরাজয়ের সামিল।                                                                                                                                      এর আগে  ২০১৫ সালের ১৫ অক্টোবর ইরানের সাথে মার্কিন যুুক্তরাষ্ট্রসহ বাকী পাঁচটি দেশ বৃটেন, জার্মানী, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া দেশ ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব এ্যাকশন’ নামক চুক্তি সম্পন্ন করে। ইরান যাতে পরমাণু শক্তির দেশে পরিণত না হয় সেজন্যই ঐ চুক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ক্ষমতায় থাকার সময় চুক্তিটিতে সই করলেও পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তি মানতে অস্বীকার করেন। কূটনীতিকরা বলছেন, অনেকটা ইরান বিরোধী দেশ ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর চাপে ট্রাম্প গত ২০১৮ সালের  ৮মে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দেন। চুক্তির বাকী দেশগুলি যুক্তরাষ্ট্রের এই একক সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি তারা ইরানের সাথে চুক্তিটি বলবৎ রাখেন। এরই মেয়াদ শেষ হল ১৮ অক্টোবর রোববার।

ইসরাইলের হুমকি

এদিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বিকল্প প্রধানমন্ত্রী বেনি গেঞ্জ রোববার অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইসরাইল ইরানকে এ অঞ্চলে সামরিক ক্ষমতা অর্জন করতে দেবেনা। তার মতে ইরান বিশ্বের জন্য এমনকি উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির জন্যও হুমকি। সেদেশের জেরুজালেম পোস্ট পত্রিকা জানায়, বেনি গেঞ্জ আরও বলেছেন, একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি ইরানের সামরিক শক্তি অর্জন রোধ ও সম্প্রসারণকে প্রতিরোধ করতে যা যা দরকার তার দেশ করবে।

ইরানের সাথে ক্রমাগত বিরোধে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ৮ জানুয়ারী ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আইন আল আসাদ ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায় ১৬টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে নিঁখুতভাবে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো লক্ষবস্তুতে আঘাত হানায় আমেরিকা ও ইসরাইল রীতিমত ইরান ভীতিতে রয়েছে। ইরান ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার কিয়াম-১ নামক ক্ষেপণাস্ত্র ঐ ঘাঁটিতে হামলায় ব্যবহার করেছে বলে সামরিক সূত্র জানায়।ইরান-চুক্তির বিরোধিতার ক্ষেত্রে মি. ট্রাম্প যেন একেক সময় ব্যাপারটাকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন। ওই চুক্তির অন্যতম রূপকার তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে একসময় নিয়মিত নানা রকম বিদ্রুপ করতেন মি ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হবার পর থেকেই মি. ট্রাম্প তার পূর্বসুরীর বড় বড় অর্জনগুলোর প্রায় প্রতিটিকেই নস্যাৎ করতে উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হবার এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ট্রান্স প্যাসিফিক বাণিজ্য আলোচনা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। জুন মাসে তিনি ঘোষণা করেন, জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোর প্যারিস চুক্তি থেকেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়ে আসতে চান। বারাক ওবামার সময় অনিবন্ধিত অভিবাসীদের জন্য সুরক্ষাগুলোও তুলে নেন তিনি। আর ওবামার স্বাস্থ্য বীমা বাতিলের চেষ্টা তো আছেই, যদিও তা খুব একটা সফল হয় নি। এ ছাড়া কিউবার ওপর ভ্রমণ বিধিনিষেধও নতুন করে আরোপ করেন মি. ট্রাম্প। এসবের পর ওবামা-যুগের একমাত্র বড় উত্তরাধিকার হিসেবে টিকে ছিল এই ইরান চুক্তি, এবার সেটাতেও হাত দিলেন মি. ট্রাম্প।

রক্ষণশীল ওয়েবসাইট দি ফেডারেলিস্ট-এ শন ডেভিস লিখেন,  মনে হচ্ছে, মি. ট্রাম্প ঠিক এটাই চান। ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দেয়া উপাত্তও অংশত ব্যবহার করেছেন। শুরুর দিকে ট্রাম্প এ চুক্তিটাকে ‘খারাপ’ বললেও এটা থেকে বেরিয়ে আসার কথা বলেন নি। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু, এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় কট্টর ইসরায়েলি পক্ষের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করার সময় থেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান বদলাতে থাকে। প্রেসিডেন্ট হবার পর ট্রাম্প মার্কিন দূতাবাসকে জেরুসালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার হুমকি দেন। ইরানের সরকারের বিরুদ্ধে তার নিন্দাও চলতে থাকে – এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো তিনি মি. নেতানিয়াহুর তুলে ধরা তথ্য-উপাত্ত উদ্ধৃত করেন।

গত ২১ সেপ্টেম্বর ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও তেহরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টার অভিযোগ করেন। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এবারের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচির লাগাম টেনে ধরতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে পম্পেও যখন নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন তখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিফেন মানুচিন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার তার পাশে ছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যাশা, জাতিসংঘও যেন ইরানের ওপর অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানিও যেন এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে। তবে তার এমন আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইউরোপীয় দেশগুলো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছেন। পরমাণু চুক্তির যৌথ কমিশনের প্রধান হিসেবে তিনি এই চুক্তি অক্ষত রাখতে সর্বশক্তি প্রয়োগের অঙ্গীকার করেছেন।ইরানকে ‘শায়েস্তা করতে’ ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক স্তরে যতই চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, সেই নীতি ততই বাধার মুখে পড়ছে। ২০১৮ সালে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। এখন সেই চুক্তিকে অবলম্বন করে তেহরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চাপানোর জোরালো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। রাশিয়া ও চীন তো বটেই এমনকি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির মতো সহযোগী দেশও ওয়াশিংটনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে নারাজ। তা সত্ত্বেও মার্কিন প্রশাসন দাবি করেছে যে, ইরানের উপর ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলো। এর একদিনের মাথায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সাফ জানিয়ে দিলেন যে, একতরফাভাবে ইরানের উপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা চাপানোর অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই। বরং চুক্তি ত্যাগ করায় তাদের যতটুকু আইনি ক্ষমতা ছিল সেটিও তারা হারিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধানের সঙ্গে মিলে তারা সরকারিভাবে নিজ নিজ দেশের এমন অবস্থান স্পষ্ট করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, তারা পরমাণু চুক্তি অক্ষত রাখতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস-ও ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর মার্কিন প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত না পেলে জাতিসংঘ ইরানের ওপর আবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিরোধী। এমন প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের অনুগত ইসরায়েলের মতো হাতে গোনা কিছু দেশ ওয়াশিংটনের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাবি আশকেনাজি মার্কিন উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে ইরানবিরোধী নিষেধাজ্ঞায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইউরোপীয় দেশগুলির এই জোরালো অবস্থানকে ওয়াশিংটনের জন্য বড় আকারের কূটনৈতিক পরাজয় হিসেবে দেখছে ইরান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান রুহানি বলেছেন, তার দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর লক্ষ্যে জোট গড়ে তোলার মার্কিন উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার অবসান হওয়ায় ইরান খুশী

ইরানের পার্স টুডে বার্তা সংস্থা জানায়, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের ওপর থেকে অন্যায়, ভিত্তিহীন ও বেআইনি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার অবসান হওয়ায় তার প্রশংসা করেছে জাতিসংঘে অবস্থিত ইরানের স্থায়ী মিশন। ২০১৫ সালে সই হওয়া পরমাণু সমঝোতার আওতায়  ১৮ অক্টোবর  (রোববার) এই নিষেধাজ্ঞার অবসান হয়েছে। ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে পরমাণু সমঝোতা সই হওয়ার পর তা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে অনুমোদন দেয়া হয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ইরান যদি সমঝোতা মেনে চলে তাহলে পাঁচ বছর পর তেহরানের ওপর থেকে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে ইরানি মিশন  এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ইরান অস্ত্র বেচাকেনা কিংবা কাউকে অস্ত্র সরবরাহ করছে কিনা বিশ্বের দেশগুলো খুঁটিয়ে দেখতে চায় না। ইরানের ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তার সবই অন্যায় ও বেআইনি বলে মন্তব্য করেছে ইরানি মিশন। ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার জন্য আমেরিকা গত কয়েক মাস ধরে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রায় সব সদস্য ইরানের ওপর এই অন্যায় নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার ছিল না, এমন কি আমেরিকার মিত্র দেশগুলোও এই ইস্যুতে ইরানের পক্ষ নেয়। এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় চীন ও রাশিয়া প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রিতে বেশী লাভবান হবে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করার বিষয়টি প্রায় পাকাপাকি করে রেখেছে ইরান। তবে লন্ডনের দি গার্ডিয়ান পত্রিকার কূটনৈতিক সম্পাদক প্যাট্রিক উইনট্যুর মনে করেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইরান সৌদি আরব কিংবা আরব আমিরাতের মত দেশগুলির মত ঢালাওভাবে অস্ত্র ক্রয় করতে পারবেনা। ইরান এখন ট্যাংক কিংবা আধুনিক জঙ্গী বিমান কিনবেনা তেহরান প্রযুক্তি হস্তান্তর করা যায় এমন স্পল্পসংখ্যক বিশেষ সিস্টেমের উপর জোর দেবে। ২০১৯ সালে ইরান সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ১৮.৪ বিলিয়ন ডলার। # ##১৯.১০.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.