--- বিজ্ঞাপন ---

আমেরিকা থেকে ড্রোন কেনার কথা ভাবছে ভারত

দাম পড়বে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা!

0

বিশেষ প্রতিনিধি ##

আমেরিকা থেকে ড্রোন কেনার কথা ভাবছে ভারত। চীন ও পাকিস্তানের সামরিক শক্তির দিকে পাল্লা দিতে হলে ভারতে সামরিক শক্তিতে ড্রোন যোগ করতে হবে। ভারতের সেনাবাহিনী এমনটা মনে করছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে ভারতে অর্থনৈতিক যে অবস্থা তাতে ড্রোন কেনা কত সহজ হবে এ নিয়ে চলছে আলোচনা। কারন ভারতের চাহিদা মতো ৩০ টি আধুনিক এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের দাম পড়বে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা!

ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়,  নয়াদিল্লী আমেরিকার সঙ্গে মঙ্গলবার গুরুত্বপূর্ণ বেকা (বিইসিএ) চুক্তি সেরেছে ভারত। দু’বছর আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে কমকাসা চুক্তি সেরে রেখেছে দিল্লি। আর এই দুই চুক্তির দৌলতে রিপার্স বা প্রিডেটর্সের মতো দূরপাল্লার অত্যাধুনিক সশস্ত্র ড্রোন আমেরিকার থেকে কিনতে পারবে ভারত। তবে বিপুল দামের কারণে এগুলি ভারতের পক্ষে কেনা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান নানা মহল। প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে প্রযুক্তিগত বিনিময় নিয়ে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। তাই ড্রোনগুলি কেনা নিয়ে পদ্ধতিগত সমস্যা কেটেছে। কিন্তু এখন সম্পূর্ণ বিষয়টি নির্ভর করছে অর্থ সরবরাহের উপর।’
চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে এই ধরনের ড্রোনের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে দরবার করেছে সেনা। ৩০টি এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বহুদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে। এগুলি কিনতে ৩০০ কোটি ডলার প্রয়োজন। জরুরি ভিত্তিতে এখনই অন্তত ছ’টি ড্রোন চাইছে বাহিনী। তবে দামের কথা ভেবে এখনও বিষয়টি নিয়ে ফয়সালা হয়নি বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে, ভারতকে নৌবাহিনীর জন্য এফ-১৮ যুদ্ধবিমান দিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করল আমেরিকা। কয়েক বছর আগে আইএনএস বিক্রমাদিত্যের জন্য ৫৭টি নৌ যুদ্ধবিমান কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিল ভারত। তবে সেবার বিষয়টি নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি আমেরিকা। বুধবার সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ভারতকে এফ-১৮ যুদ্ধবিমান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা।

জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরের আগে বেশ বড় ‘উপহারই’ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উপহার হিসেবে ‘এমকিউ-৯ রিপার’ নামে একটি প্রিডেটর গার্ডিয়ান ড্রোন পাঠান তিনি। এরপর ভারতে অনুরূপ প্রিডেটর ড্রোন বিক্রির অনুমোদনও দেন। ট্রাম্পের ড্রোন বিক্রির অনুমোদনকে ‘গেম চেঞ্জার’ বলে মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই অস্ত্র চুক্তির ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক আরও মজবুত হওয়ারই ইঙ্গিত পাওয়া গেল। ‘এমকিউ-৯ রিপার’ ড্রোনগুলো ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় ১,৭৪৬ কেজি ভর নিয়ে একটানা ২৭ ঘণ্টা ধরে উড়তে পারে। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, ড্রোনগুলোর মাধ্যমেই ভারত তার সাড়ে ৭ হাজার কিলোমিটার উপকূল রেখায় নজরদারি চালাবে। ‘জেনারেল অ্যাটমিক্স’ নির্মিত এই প্রিডেটর ড্রোন আমেরিকা ছাড়া সম্প্রতি ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেনের বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে। এবার সেই তালিকায় ঢুকতে চলেছে ভারতের নামও। মার্কিন অস্ত্রের অন্যতম বড় ক্রেতা ভারত। নতুন এই চুক্তির মাধ্যমে ‘ন্যাটো’ জোটের বাইরে থাকা কোনো দেশের সঙ্গে এই প্রথম এ ধরনের চুক্তি করবে আমেরিকা।ভারত মহাসাগরে ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর নজরদারির জন্য এসব ড্রোন ব্যবহার করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২০০৮ সাল থেকে ভারত আমেরিকার সঙ্গে ১৫০০ কোটি ডলারের অস্ত্রচুক্তি করেছে। এর মধ্যে সি-১৩০জে, সি-১৭ সামরিক পরিবহন বিমান, পি-৮ আই মেরিটাইম প্যাট্রোল বিমান, হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র এবং অ্যাপাচি ও চিনুক হেলিকপ্টার কেনার বিষয়টিও রয়েছে। চীনকে মোকাবেলায় আমেরিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাচ্ছে ভারত। মোদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ নিয়ে চারবার আমেরিকায় সফর করছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে মোদি দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।## ২৯.১০.২০

 

 

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.