--- বিজ্ঞাপন ---

আফ্রিকায় ১১০ মিলিয়ন ডলারের সাঁজোয়া যান রফতানি করবে তুরস্ক

বাংলাদেশেরও আগ্রহ আছে, বলছে আন্দালু বার্তা সংস্থা

0

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ###

আধুনিক সমরাস্ত্র শিল্পের বিশ্ব বাজারে নিজেদের একটি অবস্থান দখল করতে চলেছে তুরস্ক। এতদিন আমেরিকা, রাশিয়া, চীন কিংবা ইসরাইলের দখলে ছিল বিশ্বের একচেটিয়া অস্ত্রবাজার। সম্প্রতি ইউক্রেনে ড্রোন রফতানির বড় চুক্তির পর এখন আফ্রিকায় ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি বড় অর্ডার পেল তুরস্ক। সেদেশের অন্যতম অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানী অটোকার এর নতুন অত‌্যাধুনিক মডেল ‘আর্মা’ ও ‘কোবরা-২’ নামের সাঁজোয়া যান। পোল্যান্ডের সামরিক পত্রিকা ডিফেন্স-২৪ সহ ইউরোপের বিভিন্ন সামরিক পত্রিকা ৩০ অক্টোবর শুক্রবার এই রফতানির অর্ডার সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করে । ঐসকল প্রতিবেদনে আফ্রিকার অস্ত্র বাজারে এবার তুরস্কের প্রবেশ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে পশ্চিমা মিডিয়াসমূহকে উষ্মা প্রকাশ করতে দেখা যায়। আফ্রিকার দেশসমূহে একসময় পশ্চিমা অস্ত্র নির্মাতাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেখানে তুরস্ক প্রবেশ করতে শুরু করেছে। কোন দেশ এই চুক্তি করল এটা গোপণ রাখা হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। চুক্তি মোতাবেক কোবরা সাঁজোয়া যান ও আর্মা ৮ পূরণ ৮ ট্রান্সপোর্টার ২০২১ সালে প্রেরণ শুরু হবে এবং শেষ হবে ২০২২ নাগাদ। তবে অটোকার নির্মিত আগের মডেল কোবরা-২ সাঁজোয়া যান ইতিমধ্যেই আলজেরিয়া, বার্কিনা ফাসো, ঘানা, মৌরিতানিয়া, নাইজেরিয়া ও রোয়ান্ডা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অস্ত্র নির্মাতা অটোকার জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে দেশগুলিতে  বরাবরই আমেরিকা, বৃটেন, ফ্রান্স ও জার্মানীর বড় বড় অস্ত্র নির্মাতাদের একপ্রকার দখলে। যদিও তুরস্ক বর্তমানে কাতারে বিভিন্ন অস্ত্র পাঠিয়েছে। তবে এধরনের সাঁজোয়া যান এর আগে বাহরাইনে রফতানি করেছিল তুরস্ক। ২০১০ সালে ৭৪ মিলিয়ন ডলারের ৭৩টি সাঁজোয়া যান রফতানি করে দেশটি। এদিকে তুরস্কের প্রথম সারির সাঁজোয়া যান নির্মাতা অটোকার সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেদেশের  একটি কোম্পানীকে প্রযুক্তি  হস্তান্তর ও যৌথভাবে আর্মা সাঁজোয়া যানের আরও ভারী মডেলের যান তৈরীতে হাত দিয়েছে বলে জানা গেছে। এই সাঁজোয়া যানের নাম দেয়া হয়েছে ‘রাবদান’।  সংযুক্ত আরব আমিরাতের সেনাবাহিনী হচ্ছে এর ক্রেতা। পুরো প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে এটি একটি বড় অস্ত্র চুক্তি হতে যাচ্ছে। ৭০০টি সাঁজোয়া যানের জন্য মূল্য ধরা হয়েছে ৬৬১ মিলিয়ন অর্থাৎ ৬৬ কোটি ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার। হামভি চেসিসের উপর নির্মিত কোবরা-২ মডেলের ৩০০ সাঁজোয়া যান বর্তমানে তুরস্কের সেনাবাহিনী ব্যবহার করছে। নির্মাতা সূত্র আরও জানায়, কোবরা-২ সাঁজোয়া যানের জন্য ঘানা, তিউনেশিয়া ও বাংলাদেশের আগ্রহ রয়েছে।

তুরস্কের অস্ত্রের প্রতি আগ্রহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির

সম্প্রতি তুরস্কের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত অনলাইন সমরাস্ত্র প্রদর্শনীতে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশও তুরস্ক থেকে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র ক্রয় করার বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তুরস্কের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলি করোনার কারণে অনলাইনে ‘ডিফেন্স পোর্ট টার্কি-সাউথ এশিয়া ফেয়ার’ নামে গত ২৬-২৮ অক্টোবর তিনদিনব্যাপী ঐ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। তুরস্কের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা আন্দালু আয়োজকদের উদ্ধৃতি দিয়ে গত ৩০ অক্টোবর এ সংবাদ দেয়।

আন্দালু বার্তা সংস্থা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুরস্কের বিভিন্ন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তৈরী অস্ত্রশস্ত্র ক্রয়ের আগ্রহের সংবাদও জানায়। এতে আগ্রহী কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানায়, According to the information received by Anadolu Agency from the organizers, Bangladesh Navy Commander Mahbub-ul Islam said they are interested in helicopter ships and patrol boats made by Turkish companies.”We are pleased to work with Aselsan, Havelsan and Roketsan. Havelsan’s command control center is also very successful,” he said.

প্রদর্শনীতে তুরস্কের বড় বড় অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানী আসেলসান, হাভেলসান এবং রকেটসানের তৈরী বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রের প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির পক্ষ থেকে আগ্রহ দেখানো হয়। আন্দালু বার্তা সংস্থা আরও জানায়, আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি তুরস্ক থেকে সেদেশের অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেকেটসান ডিফেন্স এর তৈরী রেটিনার রাডার ও আলফা ইলেক্ট্রো মেটাল প্রভৃতি সরঞ্জামের প্রতি আগ্রহ দেখায়। অপরদিকে শ্রীলংকার সামরিক কর্মকর্তারা তুরস্কের সাঁজোয়া যানের প্রতি তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তান আগে থেকেই তুরস্কের তৈরী বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা। ২০১৮ সালে পাকিস্তান তুরস্কে তৈরী ৩০টি এ্যাসল্ট হেলিকপ্টার ক্রয়ের জন্য ১৫০ কোটি ডলারের একটি বড় চুক্তি করে। আরও অন্যান্য অস্ত্র ক্রয় ছাড়াও দেশটি তুরস্ক থেকে মিলজেম শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ তৈরীরও বড় চুক্তি সম্পন্ন করেছে। ### ২.১১.২০

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.