--- বিজ্ঞাপন ---

বৃটেনে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার প্রয়োগ

বিশ্বের প্রথম দেশ , দাম ১০ ডলার

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সারা পৃথিবীতে করোনার তান্ডবে দিশেহারা মানুষের পাশে আবশেষে প্রথম এসে দাড়ালো ফাইজার ওষুধ কোম্পানি। ফাইজারের আবিস্কৃত  করোনার টিকা শুরু হচ্ছে বৃটেনে। আগামী সপ্তাহ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু হবে টিকা দেয়ার কাজটি। বৃটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এরই মধ্যে প্রাথমিক প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে। করোনার কারনে মৃত্যু ঝুকিতে রয়েছেন এমন মানুষকে আগে দেয়া হবে। প্রতিটি টিকার দাম পড়বে বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ৮ শ টাকার মতো। অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে দাম ধরা হয়েছে ১০ ডলার।

আনন্দবাজার জানায়, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কোভিড টিকাকরণের জন্য ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিল ব্রিটেন। বুধবার ব্রিটিশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকেই গোটা ব্রিটেন জুড়ে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু করা হবে। তবে এই কর্মসূচি হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। একমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদেরই টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বরিস জনসন সরকার।

বুধবার ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হেনকক টুইটার লিখেছেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে সাহায্য আসছে। আগামী সপ্তাহের গোড়া থেকেই টিকাকরণের কাজ শুরু করতে তৈরি এনএইচএস (ন্যাশনাল হেল্‌থ সার্ভিস)’।

ব্রিটেনের মেডিসিন এবং হেল্থকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইআরএ) জানিয়েছে, ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।বরিস জনসন সরকার ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের ২ কোটি মানুষের টিকাকরণের জন্য ওই সংস্থা থেকে ৪ কোটি ডোজের বরাত দিয়েছে। প্রত্যেককে দু’টি ডোজে টিকা দেওয়া হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর। এ ছাড়া, আগামী কিছুদিনের মধ্যেই ১ কোটি ডোজ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ব্রিটেনে টিকাকরণ শুরু হলেও করোনার বিরুদ্ধে লড়াইতে ঢিলেমি দিলে চলবে না বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। আগের মতোই মাস্ক পরা বা শারীরিক দূরত্ব বজার রাখার মতো সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। একে নতুন ধরনের এমআরএনএ জাতীয় ভ্যাকসিন বলেছেন গবেষকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ভাইরাসের জেনেটিক কোড থেকে ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম এই ভ্যাকসিন।টিকাকরণে কারা অগ্রাধিকার পাবেন, তার প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে ব্রিটিশ সরকার। করোনার বিরুদ্ধে যাঁদের ঝুঁকি রয়েছে এমন স্বাস্থ্যকর্মী এবং ৮০ বছর বয়সি-সহ সোশ্যাল কেয়ার ওয়ার্কারদের প্রথমে এই টিকা দেওয়া হবে।

বিবিসি জানায়, ফাইজার ও বায়োএনটেক বলছে, “বিজ্ঞান ও মানবতার জন্যে এটি অনেক বড় একটি দিন।” এখনও পর্যন্ত ছটি দেশে ৪৩,৫০০ জনের শরীরে এই টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে এবং এতে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু দেখা যায়নি।

কোম্পানি দুটো বলছে, এ মাসের শেষ নাগাদ জরুরি প্রয়োজনে তারা এই টিকা ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে। বর্তমান মহামারি পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য চিকিৎসার পাশাপাশি টিকার ব্যবহারকে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পন্থা হিসেবে দেখা হচ্ছে। সারা বিশ্বে বেশ কিছু টিকা তৈরির কাজ চলছে। তার মধ্যে কয়েকটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

তার মধ্যে এই প্রথম এই টিকাটির এরকম সাফল্যের কথা জানা গেল। এই টিকাটির ক্ষেত্রে একেবারে ভিন্ন ধরনের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে যাতে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে প্রশিক্ষিত করে তোলার জন্য ভাইরাসটির জেনেটিক কোড শরীরে ইনজেক্ট করা হয়। আগের পরীক্ষাগুলোতে দেখা গেছে টিকা দেওয়ার ফলে শরীরে এন্টিবডি এবং রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার আরো একটি অংশ যা টি সেল নামে পরিচিত সেটিও তৈরি হয়।

ব্রিটিশ সরকার, প্রথম দফায় টিকাকরণের পর আগামী বছর ৫০ বছরের বেশি বয়সিদের এবং আগে থেকেই স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা রয়েছে— এমন ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হবে। প্রথম ডোজের ২১ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.