--- বিজ্ঞাপন ---

কোরিয়ায় সম্মাননা পেলেন ১৫ বাংলাদেশী ইপিএস কর্মী

দূতাবাসের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালন

0

বিশেষ প্রতিনিধি,দক্ষিণ কোরিয়া

১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল-এর উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হয়। আজকের এই দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘মুজিববর্ষের আহ্বান, দক্ষ হয়ে বিদেশ যান’। বাংলাদেশ দূতাবাস, সিউল-এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পনের (১৫) জন বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীকে এবং সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশী ইপিএস কর্মী নিয়োগের জন্য এগার (১১) জন কোরিয়ান নিয়োগকর্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ায় কোভিড-১৯ মহামারীর ক্রমশঃ ঊর্ধ্বমূখী সংক্রমণের কারণে এদেশের সরকারের সামাজিক দূরত্ব সংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করে, সম্মাননা প্রাপ্তদের ক্রেস্ট ও সনদপত্র দূতাবাসের পক্ষ হতে ডাকযোগে প্রেরণ করা হয় এবং স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সীমিত পরিসরে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বৈধ উপায়ে সর্ব্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী পাঁচ (৫) জন ইপিএস কর্মীকে, একই কর্মস্থলে দীর্ঘ দিন অবস্থানকারী তিন (৩)জন কর্মীকে, কোরিয়ান সরকার কর্তৃক পুরস্কার প্রাপ্ত তিন (৩) জন কর্মীকে, কোরিয়ান ভাষায় দক্ষতা অর্জনকারী পাঁচ (৫)জন কর্মীকে, এবং কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততার পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে এ দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য দুই (২) জনসহ মোট ১৫ জন বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীকে এই সম্মাননা ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
পবিত্র ধর্ম গ্রন্থসমূহ পাঠের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির শুভসূচনা করা হয়। এরপর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এবং জাতিসংঘের মহাসচিবের-এর প্রেরিত বাণীসমূহ পর্যায়ক্রমে পাঠ করে শোনানো হয়।
অতঃপর, সম্মাননা প্রাপ্ত ইপিএস কর্মীদের এবং নিয়োগকর্তাদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তাদের কর্মকান্ডের উপর একটি বিশদ উপস্থাপনা প্রদান করেন প্রথম সচিব (শ্রম), মকিমা বেগম।
সবশেষে, রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাঁর সমাপনী বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২০ উপলক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত সকল বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীদের অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাঁদের অবদানের কথা গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন। তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত সকল বাংলাদেশী ইপিএস কর্মীদের কর্মনিষ্ঠা, আনুগত্য এবং দক্ষতার প্রশংসা করেন এবং কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সর্বদা নিরাপদ থাকার জন্য, এ দেশের সকল স্বাস্থ্য বিধি যথাযথভাবে পালন পূর্বক দৈনণ্দিন জীবন-যাপন ও শিল্পকারখানায় কর্ম সম্পাদন করার অনুরোধ জানান।
তিনি আরো বলেন যে, মহামারীর এই সংকটজনক পরিস্থিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, বোয়েসেল এবং দূতাবাসের তৎপরতার কারণে বাংলাদেশে ছুটিতে ও রিলিজে অবস্থানরত ৫৬৬ জন ইপিএস কর্মীকে ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। যেসব কর্মীদের রিলিজের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, দূতাবাসের হস্তক্ষেপের কারণে তাদের অনেকেরই রিলিজের মেয়াদ সংক্রান্ত জটিলতার অবসান ঘটানো সম্ভব হয়েছে এবং পুণরায় তারা নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে সমর্থ হয়েছে। এছাড়া, ভিসা নিষেধাজ্ঞা শিথিলসহ রোস্টারভূক্ত কমিটেড ও রেগুলার ইপিএস কর্মীদের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবেশ দ্বার উন্মুক্ত করবার লক্ষ্যে দূতাবাস অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত আরো বলেন যে, সরকারের নীতি অনুসরণ করে দূতাবাসও অভিবাসী কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ লক্ষ্যে, দূরশিক্ষণের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সাথে যৌথ উদ্যোগে অনলাইন উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করেছে, যা শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মোটিফের ব্যবহারের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.