--- বিজ্ঞাপন ---

এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আমেরিকা

0

:: আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::

আন্দ্রে হিল নামের একজন কৃষ্ণাঙ্গ এর মৃত্যুতে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আমেরিকা। অভিযোগ উঠেছে অ্যাডাম কয় নামের একজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের সংগঠন ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার এরই মধ্যে বিক্ষোভ করেছে। তারা আন্দ্রের মৃত্যু ঘটনার সাথে জড়িতকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।

সোমবার গভীর রাতে ওহায়ো শহরের রাজধানী কলোম্বাসে একটি বাড়ির গ্যারেজে গুলিবিদ্ধ হন বছর সাতচল্লিশের আন্দ্রে হিল। তাঁকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে অ্যাডাম কয় নামে এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। সে রাতে হিল এলাকারই একটি বাড়িতে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা। এলাকায় কোনও এক সাধারণ অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে যায় পুলিশ। তবে তাদের নিশানায় হিল কী করে এলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে ঘটনার বডি ক্যাম (পুলিশের পোশাকের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা) ভিডিয়োর ফুটেজটি বুধবার প্রকাশ করা হয় পুলিশের তরফে। যা দেখার পরেই বৃহস্পতিবার থেকে রাস্তায় নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। ওই ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হিল একটি গ্যারেজ থেকে বেরিয়ে আসছেন। তাঁর বাঁ হাতে মোবাইল, ডান হাতটি দেখা যাচ্ছে না। এর মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই এক পুলিশ আধিকারিকের ছোড়া গুলিতে বিদ্ধ হন তিনি। তবে ফুটেজে গুলির শব্দ রেকর্ড হয়নি। পাশাপাশি হিলের উদ্দেশে কয় কোনও নির্দেশ দিয়েছিলেন কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। কারণ, অভিযুক্ত তাঁর পোশাকে লাগানো ক্যামেরাটি অফ করে রেখেছিলেন। কিন্তু স্বয়ংক্রিয় ‘লুক ব্যাক’ প্রযুক্তিতে সেটি নিজে থেকে শব্দ ছাড়াই ঘটনার ছবি তুলে নেয়।

ফুটেজে আরও দেখা গিয়েছে, গুলি লাগার পরে মাটিতে পড়ে ছটফট করছেন হিল। তবে এই অবস্থায় বেশ কয়েক মিনিট কেটে গেলেও তাঁকে উদ্ধারে পুলিশের তরফে কেউ এগোয়নি। এর কিছুক্ষণ পরে নিজের বডি ক্যামেরার অডিয়ো রেকর্ডিং চালু করেন কয়। যার ফলে শোনা গিয়েছে, কখনও আহত হিলকে পেটের উপর ভর করে শুতে বলছেন তিনি, কখনও তাঁর হাত পাশে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দিচ্ছেন। এর ঘণ্টাখানেক বাদে একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয় হিলের।

আহতকে সাহায্য না-করা পুলিশের আদর্শ বিরুদ্ধ, এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়কে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন শহরের মেয়র অ্যান্ড্রু গিনথার। এই অভিযোগের পাশাপাশি কর্মরত অবস্থায় একাধিক নিয়ম ভাঙায় কয়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহরের পুলিশ প্রধান টমাস কুইনলান। উল্লেখ্য, এই শহরেই চলতি মাসের চার তারিখে পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হন বছর তেইশের এক আফ্রিকান আমেরিকান, কেসি গুডসন জুনিয়র। অভিযোগ, তাঁর হাতে থাকা একটি স্যান্ডউইচকে বন্দুক ভেবে ভুল করে গুলি চালায় পুলিশ।

আমেরিকায় সর্বশেষ গত মে মাসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডকে একজন পুলিশ হাটুর নিচে চেপে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করলে ব্যাপক আন্দোলন হয়। ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে মারা গেছে ১০১৪ জন এবং বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে নিহতদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান।

উল্লেখ্য, ম্যাপিং পুলিশ ভায়োলেন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার চালানো জরিপে দাবি করা হয়েছে যে আমেরিকায় পুলিশের গুলিতে শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তিনগুণ বেশি মারা যায় কৃষ্ণাঙ্গরা। দেশটিতে পুলিশি নির্মমতার প্রতিক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে গড়ে উঠেছে # BlackLivesMatter (কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনওমূল্যবান) নামের আন্দোলন। গায়ক বিয়োন্সে, বাস্কেটবল খেলোয়াড় লেব্রন জেমসের মত তারকারা এই আন্দোলনকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। সূত্র: বিবিসি/আনন্দবাজার/ ছবি: রয়টার্স

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.