--- বিজ্ঞাপন ---

নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্রই কি পৃথিবী ধ্বংসের কারন হবে (১ম পর্ব)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬১৮৫টি নিউক্লিয়ার এন্ড থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়ারহেড মজুত আছে!!

0

বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং অতি মাত্রায় ধ্বংসাত্মক অস্ত্র হিসেবে নিউক্লিয়ার এণ্ড থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্রকেই বিবেচনা করা হয়। মনে করা হয় বিশ্বের সুপার পাওয়ার দেশগুলোর কাছে যে বিপুল পরিমাণ নিউক্লিয়ার অস্ত্র মজুত রয়েছে তা ভবিষ্যতে মানবজাতির বিলুপ্তির অন্যতম কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াসহ বিশ্বের মোট দশটি দেশের অস্ত্র ভান্ডারে মজুদ রয়েছে আনুমানিক ১৬ হাজারের কাছাকাছি নিউক্লিয়ার ও থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্র এবং ওয়ারহেড। যা সমুদ্র ভিত্তিক সাবমেরিন ও সাইলো বেসড এন্ড মোবাইল লাউঞ্চ লং রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম), মিডিয়াম ও সর্ট রেঞ্জ ট্যাকটিক্যল মিসাইল এবং সর্বোপরি বোম্বার ও সুপার বোম্বার ভিত্তিক বোম্ব ও ওয়ারহেড এর উপযোগী করে গোপনে সংরক্ষণ এবং মোতায়েন করা হয়ে থাকে।
আবার বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের সর্বোচ্চ ৮৯% মজুদ রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। তাছাড়া, কৌশলগতভাবে ভবিষ্যতে যে কোন ভয়াবহ যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও মার্কিন সামরিক বাহিনী অত্যন্ত গোপনে আনুমানিক ১,৮০০ এর কাছাকাছি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড স্ট্যাটিজিক্যাল নিউক মিসাইলে সংযুক্ত করে সার্বক্ষণিকভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার উদ্দেশ্যে গোপন কোন ঘাঁটিতে কিম্বা সাবমেরিনে সক্রিয়ভাবে মোতায়েন করে রেখেছে। যা ভবিষ্যত মানব সভ্যতার জন্য এক মারাত্বক হুমকী হিসেবে থেকেই যাচ্ছে। এ মুহুর্তে বিশ্বের পারমাণবিক ক্ষমতাধর দেশগুলোর কাছে যে পরিমান নিউক অস্ত্র মজুদ রয়েছে তা দিয়ে নিশ্চিতভাবে আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীকে কমপক্ষে শতাধিকবার ধ্বংস করা যাবে তাতে কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্টকহোম ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনিস্টিউট, বিজনেস ইনসাইডার, জেনস রিপোর্ট, গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারসহ অন্যান্য সামরিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিংক ট্রাঙ্ক বিশ্বের মোট ৯টি দেশের কাছে কি পরিমাণ ও সক্ষমতার নিউক্লি়য়ার ও থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্র ও ওয়ারহেড মজুদের বিষয়ে যে তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান প্রদর্শন করে তা কিন্তু সম্পূর্ণ গবেষণামুলক বিশ্লেষণ ও অনুমানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা। যার কোন বাস্তব ভিত্তি বা গ্রহনযোগ্য কোন প্রমান নেই। আবার বিশ্বের পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশগুলো কিন্তু কৌশলগত কারণে তাদের নিউক সক্ষমতা ও মজুত নিয়ে কোন তথ্য উপাত্ত সকলের সামনে প্রকাশ করে না। বৈশ্বিক মিডিয়ায় আমরা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে যে ডাটা পাই তা নিশ্চিতভাবেই অনুমান নির্ভর এবং তা বাস্তবে অনেকের ক্ষেত্রে বড় ধরণের কম বেশি হতে পারে। এমনকি সুপার পাওয়ার দেশগুলো নিজের প্রভাব ও কৌশল খাটিয়ে চাতুরতার সাথে নিজেদের নিউক সক্ষমতা অতিরঞ্জিত অকারে প্রকাশে কাজ যে করছে না তাও নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।
প্রথমেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করা যাক। এ মুহুর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হাতে এ মুহুর্তে মোট ৬১৮৫টি নিউক্লিয়ার এন্ড থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়ারহেড মজুত রয়েছে। যার মধ্যে ২৩৮৫টি অবসরে চলে যাচ্ছে, ২০৫০টি রিজার্ভ রাখা হয়েছে এবং অবশিষ্ট্য ১৭৫০টি নিউক্লিয়ার এন্ড থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়ারহেড আপদকালীন যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৬ শতাধিকের কাছাকাছি সামরিক বা বিমান ঘাঁটি এবং মহাসাগর ভিত্তিক সুবিশাল ওহিও কিংবা কলাম্বিয়া ক্লাস পারমানবিক শক্তি চালিত সাবমেরিনে সার্বক্ষণিক মোতায়েন রাখা হয়। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ন্যাটো জোটভুক্ত ৫টি দেশ ইতালি, জার্মানী, তুরস্ক, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডের থাকা তার কৌশলগত সামরিক ঘাঁটিতে ১৫০টি এর কাছাকাছি নিউক্লিয়ার এন্ড থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়েপন্স বা ওয়ারহেড মোতায়েন করে রেখেছে। বিশেষ করে ভবিষ্যতে যে কোন ধরণের যুদ্ধকালীন মুহুর্তে রাশিয়ার পুতিন বাহিনীর পরমাণু হামলার তাৎক্ষণিক জবাবে এহেন রণকৌশলের ছক একে রেখেছে মার্কিন ট্রাম্প বাহিনী। তবে ইউরোপের ৫টি দেশে নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড মোতায়েন করে রাখলেও আশ্চর্যজনকভাবে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটিতে কমপক্ষে ৫০টি বা ইউরোপে মোতায়েন থাকা মোট নিউক্লিয়ার অস্ত্রের এক তৃতীয়াংশ মোতায়েন রাখা হয়েছে তুরস্কের ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটিতে। যদিও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক মার্কিন প্রশাসন এবং তুর্কী এরদোয়ান সরকারের মধ্য চরম মতো বিরোধ এবং এস-৪০০ বিবাদের জেরে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ এবং সিআইএ নিরাপত্তার স্বার্থে ইতোমধ্যেই তুর্কী ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটি থেকে তাঁদের অধিকাংশ নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড অত্যন্ত গোপনে ইউরোপের অন্যান্য সামরিক ঘাঁটিতে সরিয়ে নিয়েছে। তাছাড়া মার্কিন সামরিক বাহিনীর হাতে বিপুল সংখ্যক ১৩ হাজার কিলোমিটার পাল্লার মিনিটম্যান-৩ এবং ১২ হাজার কিলোমিটার পাল্লার সাবমেরিন বেসড ট্রাইডেন্ট-২ ডি-৫ (গতি ম্যাক ২৪) লং রেঞ্জের (আইসিবিএম) মিসাইল থাকলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউক ওয়েপন্স ডেলিভারি সিস্টেম কিন্তু লং রেঞ্জের সুপার বোম্বার ভিত্তিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। যা মার্কিন বিমান বাহিনীর সুপার বোম্বার বি-৫২ ও বি-২ স্পিরিট, বি-১বি ল্যান্সার, জয়েন্ট স্টাইক এফ-৩৫, এফ-১৫ ঈগল, এফ-১৬ এবং এফ-২২ র্যাপ্টার জেট ফাইটার ডেলিভারি সিস্টেম এর উপযোগী করে বিশাল আকারের নিউক বোম্বস এন্ড ডিভাইস ডিজাইন ও মজুত করে রেখেছে। (চলবে)

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.