--- বিজ্ঞাপন ---

নতুন অস্ত্র কিনতে প্রতিরক্ষা খাতে ইসরাইলের বিশাল বরাদ্দ

0

টাইমস আব ইসরায়েলের দেয়া তথ্যসূত্র অনুযায়ী, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং সরকার সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২.৭৪ বিলিয়ন ডলার বা ৯.০ বিলিয়ন ইসরাইলী সেকেল (এনআইএস) সমপরিমাণ অর্থে নতুন প্রজন্মের প্রচলিত ও স্টিলথ জেট ফাইটার, হেলিকপ্টার এবং যুদ্ধবিমানের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এবং মিসাইল ও অন্যান্য অস্ত্র সংগ্রহ করতে ফাণ্ড বরাদ্দ দিয়েছে। আর এই নতুন অস্ত্র ক্রয়ের প্যাকেজের অর্থের সাথে যুক্ত হবে ইসরায়েলকে দেয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩.৮ বিলিয়ন ডলারের বিশাল আকারের সামরিক সহায়তা বা ফাণ্ড। মুলত মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ ইসরায়েল ১৯৪৮ সালের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে বিশ্বের অন্য দেশগুলো অপেক্ষা অনেকটাই কম মূল্যে অস্ত্র এবং সামরিক সাজ সরঞ্জাম ক্রয়ের সুযোগ পেয়ে থেকে। তাছাড়া একটি সুসংগঠিত এবং উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর সামরিক বাহিনী হিসেবে ইসরায়েল বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে সবার উপরে উঠে এসেছে। এমনকি বিশ্বের সকল সামরিক সুপার পাওয়ার দেশগুলো এখন ইসরায়েলকে অনেকটাই সমিহ করে চলে।
যদিও এই নতুন ভাবে বিশাল আকারের সমরাস্ত্র ক্রয় ইসরাইল কে নিশ্চিতভাবেই অত্র অঞ্চলে আবারো শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে সাহায্য করবে। যেখানে কিনা মধ্যপ্রাচ্যের সকল আরব দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দ্বিগুণের বেশি অর্থ ব্যয় করে অস্ত্র ক্রয় করে থাকে, সেখানে ইসরায়েল অনেক কম অর্থ ব্যয় করে তাদের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে আধুনিক অস্ত্র এবং যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বড় ধরণের সুযোগ পেতে যাচ্ছে। আর এই প্যাকেজের আওতায় একেবার লেটেস্ট ভেরিয়েন্টের এফ-১৫ইএক্স, এফ-৩৫ স্টিলথ জেট ফাইটার, রিফুয়েলিং এয়ার ট্যাংকার এবং চপার হেলিকপ্টার ক্রয় করতে পারে ইসরায়েল।
বর্তমানে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান এবং আকাশ আক্রমণ সক্ষমতা বিশ্বের প্রথম সারির অনেক দেশ থেকেও যথেষ্ট আধুনিক এবং শক্তিশালী বলা চলে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের থাকা ইসরায়েলের আশপাশের যে কোন দেশের সামরিক মেরুদণ্ড এবং এয়ার ফ্লীটকে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ধ্বংস করে দেবার মতো ক্ষমতা রাখে দেশটি। এমনকি ইরান এবং তুরস্কের বিমান বাহিনীর এয়ার ফ্লীট এবং সক্ষমতা ইসরায়েলের ধারেকাছেও আসে না।
এ মুহুর্তে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীতে গ্রাউণ্ড এট্যাক, এয়ার স্টাইক, এয়ার টু এয়ার কমব্যাট অপারেশনের জন্য এফ-৩৫আই স্টিলথ জেট ফাইটার সার্ভিসে রয়েছে ২৪টি (মোট ৫০টি আগামী ২০২৫ সালের মধ্য সার্ভিসে আসবে), বিভিন্ন ভেরিয়েবটের এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন রয়েছে ২২৪টি, স্টাইক ঈগল এফ-১৫ই সিরিজের জেট ফাইটার রয়েছে ২৫টি, এফ-১৫ এ,বি,সি,ডি ভেরিয়েন্টের গ্রাউণ্ড এট্যাক ফাইটার রয়েছে ৫৮টি।
তাছাড়া ইসরায়েলের বিমান বাহিনীতে আর্লি ওয়ারনিং (এইডাব্লিউএণ্ডসি) বিমান রয়েছে ৩টি, রিকর্নিয়েন্স বিমান ৯টি, এয়ার রিফুয়েলিং ট্যাংকার ১৩টি, বড় এবং মাঝারি আকারের সামরিক পরিবহন বিমান রয়েছে ৬২টি।
এদিকে ইসরায়েল বিমান বাহিনীতে ৪৮টি অত্যাধুনিক এএইচ-৬৪ এ্যাপাচী এট্যাক হেলিকপ্টারসহ মোট হেলিকপ্টারে সংখ্যা অবিশ্বাস্যভাবে ১৪০টি। তাছাড়া বিমান বাহিনীর তিনস্তরের নিয়মিত প্রশিক্ষণের জন্য ট্রেইনার জেট ফাইটার সার্ভিসে রয়েছে মোট ৬৭টি। তার সাথে রয়েছে ইসরায়েলের নিজস্ব প্রযুক্তির শতাধিক সার্ভেলাইন্স, রিকর্নিয়েন্স এন্ড কমব্যাট এণ্ড ননকমব্যাট ড্রোনের বিশাল সম্ভার।
এখানে প্রকাশ থাকে যে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ মিশরের বিমান বাহিনীতেও কিন্তু ২১৬টি এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন জেট ফাইটার রয়েছে। তবে মার্কিন প্রশাসন কিন্তু মিশরকে তাদের এফ-১৬ জেট ফাইটারের জন্য কখনই অত্যাধুনিক এআইএম-১২০সি/ডি সিরিজের বিভিআর এয়ার টু এয়ার মিসাইল এবং অন্যান্য উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করেনি শুধুমাত্র ভবিষ্যতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে এমন আশাঙ্খায়। তাছাড়া মিসরের বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও মার্কিন প্রশাসন মিশরের বিমান বাহিনীর এফ-১৬ জেট ফাইটার আপগ্রেড করে দিতে অনিহা প্রকাশ করে আসছে। এদিকে মিশরের কাছে স্বল্প পাল্লার এআইএম-৭ এআইএম-৯ সাইড উইণ্ডার মিসাইল ছাড়া আপাতত এফ-১৬ ফ্লীটের জন্য অত্যাধুনিক কোন এয়ার টু এয়ার মিসাইল আছে কিন সন্দেহ।
মাত্র ৮,৫২২ বর্গমাইল আয়তন এবং ৯১ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আসলে কোন পর্যায়ে রয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তার পাশাপাশি নতুন করে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরও অত্যাধুনিক এবং উচ্চ প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যুক্ত হলে দেশটির সামরিক সক্ষমতাকে মধ্যপ্রাচ্যে একেবারে শীর্ষ অবস্থানে নিয়ে যাবে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.