--- বিজ্ঞাপন ---

কানাডা থেকে আনা শ্বেতবলাকা বিমানটি কেমন

0
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে আকাশ পথে বিশ্ব মানের এবং আধুনিক বেসামরিক প্যাসেঞ্জার ও কার্গো পরিবহণ সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। আর তারই ধারাবাহিকতায় গত ৫ই মার্চ শুক্রবার বিকেল ৫টা ৩৬ মিনিটে রাজধানী ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কানাডার তৈরি ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের ‘শ্বেতবলাকা’ নামক অত্যাধুনিক প্যাসেঞ্জার বিমানটি এসে পৌছায়। মুলত কানাডার বিখ্যাত উড়োজাহাজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডি হ্যাভিল্যান্ড এর তৈরিকৃত ড্যাস-৮-৪০০ মডেলের বিমানটি বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর এভিয়েশন ফ্যানফেয়ারের অংশ হিসেবে উড়োজাহাজটিকে ওয়াটার ক্যানন স্যালুট দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জিটুজি চুক্তির আওতায় ক্রয়কৃত মোট ৩টি ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের পরিবহণ বিমানের প্রথমটি গত ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর, দ্বিতীয়টি চলতি ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং সর্বশেষ তৃতীয় বিমানটি ৫ই মার্চ বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের বিমান বহরে যুক্ত হয়। আর ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের অত্যাধুনিক বেসামরিক পরিবহণ বিমানের ‘শ্বেতবলাকা’ নামকরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৭৪টি আসন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের টার্বোপ্রোপ রিজোয়নাল এয়ার লাইনার পরিবহণ বিমানটি তৈরি করে কানাডার বিখ্যাত বিমান উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডি হেভিল্যাণ্ড এভিয়েশন কর্পোরেশন। ১৯৮৩ সালের জুন থেকে বর্তমান পর্যন্ত আনুমানিক মোট ১,২৬০টি ড্যাস-৮-১০০, ড্যাস-৮-২০০, ড্যাস-৮-৩০০ এবং ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের এই জাতীয় বিমান তৈরি করেছে সংস্থাটি। তবে ড্যাস-৮-৪০০ সিরিজের পরিবহণ বিমানটিকে উন্নত প্রযুক্তি এবং আধুনিক সব সুযোগ সুবিধার সমন্বয়ে ডিজাইন করা হয়েছে। ২ জন ককপিট ক্রু এবং ৩ জন কেবিন ক্রু দ্বারা চালিত ড্যাস-৮-৪০০ টার্বোপ্রোপ রিজোয়নাল এয়ার লাইনার পরিবহণ বিমানটি ৬,৫২৬ লিটার জ্বালানী তেল ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ২,০৪০ কিলোমিটার দুরুত্ব পর্যন্ত নিরাপদে যাত্রী পরিবহণ করতে সক্ষম। যা কিনা স্বল্প দুরুত্বে এবং কম খরচে বাংলাদেশের সকল অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ এবং ভুটানসহ বেশকিছু দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।
বিশ্ব মানের প্রযুক্তি ও সব ধরণের আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সমন্বয়ে তৈরি বিমানটির দৈর্ঘ্য ৩২.৮ মিটার এবং উচ্চতা ৮.৪ মিটার। এই টার্বোপ্রোপ পরিবহণ বিমানটি আকাশে উড়ার জন্য অত্যন্ত শক্তিশালী ২টি প্রাট এণ্ড হুইটনী পিডাব্লিউ-১৫০ টার্বোপ্রপ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এর রেঞ্জ ২,০৪০ কিলোমিটার এবং সার্ভিস সিলিং ২৭ হাজার ফিট। এটির ম্যাক্সিমাম পে-লোড ক্যাপাসিটি ৮,৪৮৯ কেজি এবং এর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘন্টায় ৩৬০ নটিক্যাল মাইল বা ৬৬৭ কিলোমিটার। নিরাপদে ল্যাণ্ডিং করার জন্য বিমানটির ১,২৬৮-১,২৮৯ মিটারের রানওয়ে প্রয়োজন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের বিমান বহরে বর্তমানে মোট বিমানের সংখ্যা ২১টি। যার মধ্যে ৪টি মার্কিন বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, ৪টি বোয়িং ৭৮৭-৮, ২টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ৬টি বোয়িং ৭৩৭ এবং ৫টি ড্যাস-৮-৪০০ লাইট পরিবহণ বিমান সক্রিয় রয়েছে।
আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.