--- বিজ্ঞাপন ---

৮৫ সালে ইরানের আকাশে চক্কর মেরেছিল অজানা আকাশযান

0

১৯৮৫ সালের দিকে মধ্যপ্রাচ্যের দুই মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইরান ও ইরাক তখন এক দীর্ঘ মেয়াদী ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী যুদ্ধে লিপ্ত। ঠিক সেই বছর ইরানের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের উপর দিয়ে উড়ে যায় একটি অদ্ভুত পিরিচাকৃতির এক অজানা আকাশযান বা ইউএফও (সসার)। একে নামিয়ে আনার জন্য ইরানিয়ান বিমান ঘাঁটির রাডার স্টেশন থেকে পাঠানো রেডিও বার্তা কোন সারা না দিয়েই ফিরে আসে।

তারপর এতে কাজ না হওয়ায় ইরানিয়ান বিমান বাহিনীর ২.২৩ ম্যাক গতি সম্পন্ন দুটি এফ-৪ ফ্যান্টম উড়ে যায় এই আজান আকাশযানকে ইন্টারসেপট করতে বা নামিয়ে আনতে। আসলে নিউক্লিয়ার অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র বহণে সক্ষম তৎকালীন সময়ের মার্কিন এই এফ-৪ ফ্যান্টম জেট ফাইটার ছিল আকাশ যুদ্ধের রাজা। কিন্তু আকাশে উড়ে ইরানিয়ান বিমান বাহিনীর এফ-৪ ফ্যান্টম ফাইটারের পাইলটেরা মিসাইল ফায়ার সুইচ টিপে দেখেন তা বিকল হয়ে গেছে। তবে ঐ অজানা আকাশযান বা সসার চলে গেলে যুদ্ধবিমান দুটি আবার সচল হয়ে যায়।

সেই সময়ে ইরান দাবি করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল কিংবা তার পশ্চিমা মিত্রের কেউ তাদের পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করার জন্য আকাশে এই নতুন আকাশযান পাঠিয়েছে। তখনো কিন্তু আকাশে ড্রোন পাখা মেলেনি। তবে ইরানের এই দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তাদের হাতে অন্য কোন যুদ্ধবিমান বা আকাশযানকে জ্যামিং বা আকাশেই অচল করে দেবার মতো কোন উন্নত প্রযুক্তি নেই।

তাছাড়া অন্য কোন দেশও ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর আকাশযান পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তবে যাই হোক না কেন, সেই সময়ে বিশ্বের মিডিয়াগুলো এই ঘটনাকে অন্য কোন গ্রহ থেকে আগত সসার বা ইউএফও বলে চিৎকার করতে থাকলেও বাস্তবে তা ছিল অন্য কিছু। মজার একটি বিষয় হলো, মার্কিন যুক্তিরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ১৯৮৩ সালের শেষের দিকে একেবারে ব্যাতিক্রমী ডিজাইনের এফ-১১৭ নাইটহক স্টিলথ এট্যাক ফাইটার জেট সার্ভিসে আনে। তখন বিশ্বের অধিকাংশ দেশই মার্কিন এই বিমানটি সম্পর্কে কিছুই জানত না। এখন এই এফ-১১৭ নাইটহক স্টিলিথ জেট ফাইটারটিকে আরো কিছুটা মোডিফাইড করে হয়ত পরীক্ষামুলক ইরানের আকাশে চক্কর মেরে থাকতে পারে।

আবার এরিয়া-৫১ এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অনেক গোপন মিশন এবং নতুন নতুন গোপন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। সেখান থেকে কোন অজানা মার্কিন আকাশযান যে ইরানের আকাশে নজরদারি চালায় নি তাও কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তাছাড়া তৎকালীন সময়ে সভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু হাইপারসনিক গতির এভিয়েশন প্রজেক্ট নিয়ে অত্যন্ত গোপনে কাজ করতে থাকে। যা কিনা অনায়াসে রাডারকে ফাঁকি দিতে সক্ষম এবং অন্য বিমান জ্যামিং করার প্রাথমিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলতে থাকে। এখানে অন্য গ্রহ থেকে আসা আনআইডিন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) বা সসার ইত্যাদির নাটকটি ছিল হয়ত নিছক অপপ্রচার বা প্রপাগাণ্ডার একটি অংশ মাত্র।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.