--- বিজ্ঞাপন ---

আমেরিকায় বেড়েই চলেছে হামলার ঘটনা, প্রাণ হারাচ্ছে সাধারন মানুষ

0

একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে আমেরিকার বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে। এ বছরের শুরু থেকে করোনার মধ্যেও থেমে নেই হামলা। গত তিন মাসে বন্দুকদারিদের হামলায় মারা গেছে ২৫ জনেরও বেশি। সহজ বন্দুক আইনের কারনে বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতার ঘটনাও। ফলে পুরো আমেরিকা জুড়ে বন্দুক আইন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার চেয়েও বর্ণ-গোত্র বিদ্বেষ প্রভাব ফেলছে এমন অপরাধে। গত বছরের মে মাসে মিনেসোটায় জর্জ ফ্লয়েডকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভ চরমে উঠেছিল।

আনন্দবাজার জানায়, ক্ষমতায় এসেই অস্ত্র আইন কঠোর করতে উদ্যোগী হয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আদৌ তার বাস্তবায়ন হবে কি না তা নিয়ে যদিও প্রশ্ন রয়েছে। তার মধ্যেই আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজ হামলা। এ বার ইন্ডিয়ানাপোলিসে এক শ্বেতাঙ্গ তরুণের গুলিতে প্রাণ হারালেন ৮ জন, যার মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অমরজিত জোহাল (৬৬), জসবিন্দর কউর (৬৪), অমরজিত সখোঁ (৪৮) নামের ৩ শিখ মহিলা এবং জসবিন্দর সিংহ (৬৮) নামের ১ শিখ ব্যক্তিও শামিল। গুরুতর জখম অবস্থায় আরও ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি। এর মধ্যে ১ জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। হামলাকারী নিজেও ঘটনাস্থলে আত্মঘাতী হয়েছে।

গত ২২ মার্চ কলোরাডোর একটি দোকানে বন্দুকবাজের হামলায় ১০ জন প্রাণ হারান। তার পর এক মাসও কাটেনি ইন্ডিয়ানাপোলিসে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে গেল, যাতে একসঙ্গে এত জন মানুষ প্রাণ হারালেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ সেখানে পণ্য সরবরাহকারী সংস্থা ফেডএক্স-এর দফতরে হামলা চালায় ব্র্যান্ডন হোল নামের এক তরুণ। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ি থেকে নেমেই গুলি চালাতে চালাতে দফতরের ভিতরে ঢোকে ব্র্যান্ডন। দফতরের একেবারে ভিতর পর্যন্ত যদিও ঢুকতে পারেনি সে। কিন্তু মাত্র কয়েক মিনিটে সামনে যাঁকেই পেয়েছে, তাঁকেই লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে সে। তাতেই ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।

ইন্ডিয়ানাপোলিস পুলিশ জানিয়েছে, ফেডএক্স-এর ওই দফতরের অধিকাংশ কর্মীই ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং তাঁদের মধ্যে সিংহভাগই শিখ। হামলার সময় ওই দফতরে ১০০-রও বেশি কর্মী ছিলেন। এলোপাথাড়ি গুলির শব্দে হুলস্থুল পড়ে যায় সেখানে। যে যেখানে পারেন মাথা বাঁচাতে ছুটে যান। খবর পেয়ে অন্তত ৩০টি গাড়ি ভর্তি পুলিশ সেখানে গিয়ে পৌঁছয়। কিন্তু ভিতরে ঢুকে ব্র্যান্ডনের নিথর দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। তাঁর শরীরে গুলির ক্ষত ছিল। হামলা চালানোর পর সে নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হয় বলেই ধারণা পুলিশের।

হামলার ঘটনা বাড়ছে

আমেরিকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে বন্দুক হামলাসহ সহিংসের ঘটনা। দেশটিতে বিগত ফেব্রুয়ারী ও মার্চে সাতটি বন্দুক হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। কলোরাডোতে বন্দুক হামলা হয়েছিল।  বোল্ডার শহরে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা নিরাপদে থাকলেও একের পর এক হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত তারা। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন যথাযথভাবে কার্যকর করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

জর্জিয়ার আটলান্টায় তিনটি ম্যাসাজ পার্লার ও স্পাতে ৬ এশীয় নারীসহ ৮ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সপ্তাহ না ঘুরতেই আবার কলোরাডোর বোল্ডার শহরে বন্দুক হামলায় ১০ জন নিহত হন। স্তম্ভিত আমেরিকার মানুষ। কলোরাডোয় বসবাস করা আরেক লেখক মনে করেন, বন্দুক আইন পরিবর্তন এবং অস্ত্র বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এ ধরনের হামলা বন্ধ করা কঠিন।

মার্চ মাসের গত ১৬ তারিখ আটলান্টায় ৮ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ২০ মার্চ টেক্সাসের ডালাসে একটি নৈশক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় এক তরুণী নিহত হন। একই দিন পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় একটি আবাসিক এলাকায় বন্দুকধারীর গুলিতে মারা যান আরও একজন। এসব ঘটনায় আহত হন আরও অনেকে।

আমেরিকায় বর্ণবৈষম্য, বিদেশিদের প্রতি ঘৃণা এবং নারীবিদ্বেষের মতো ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। এতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এ ঘটনা গুলোকে আমেরিকা আর মেনে নিতে পারে না। তাহলে কী করবেন বাইডেন? সবাই তাকিয়ে আছেন সেদিকে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.