--- বিজ্ঞাপন ---

আকাশ যুদ্ধের রাজা বলে খ্যাত জেট ফাইটারগুলোর মূল্য আসলে কতো

0

বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে ব্যয়বহুল জেট ফাইটার হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফ-২২ সুপার স্টিলথ র‍্যাপ্টার জেট ফাইটারকে বিবেচনা করা হয়। এফ-২২ র‍্যাপ্টার একটি অবিক্রয়যোগ্য জেট ফাইটার এবং একটি আজ পর্যন্ত কোন দেশের কাছেই হস্তান্তর করা হয়নি। তবে লকহীড মার্টিন এভিয়েশন কর্পোরেশনের তৈরি এফ-২২ র‍্যাপ্টারের উৎপাদন ব্যয় ১৬২ মিলিয়ন ডলার এবং এর পে-লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং কস্ট প্রায় ৫৫,০০০ ডলার। মার্কিন জয়েন্ট স্টাইক এফ-৩৫এ লাইটনিং-২ স্টিলথ জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে গড় বিক্রয়মূল্য ৯০ মিলিয়ন ডলার, এফ-৩৫বি ১০৫ এবং এফ-৩৫সি ১১৫ মিলিয়ন ডলার। তাছাড়া এফ-৩৫ সিরিজের জেট ফাইটারের পে-লোড ক্যাপাসিটি ৮,১০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট আনুমানিক ৩৬,০০০ ডলার। জয়েন্ট স্টাইক এফ-১৫ ঈগল জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ১০০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ১০,৪০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ২২-২৪ হাজার ডলার। এফ-১৮ সুপার হর্নেট জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৭০-৭৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৯,০০০ ডলার।

এদিকে রাশিয়ার তৈরি একমাত্র সুপার এডভান্স এসইউ-৫৭ স্টিলথ জেট ফাইটারের জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৬৫-৭০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৯,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট আনুমানিক ২০,০০০ ডলার। তাছাড়া এসইউ-৩৫এস এডভান্স জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৭০-১০০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ২৪-২৬ হাজার ডলার। রাশিয়ার এসইউ-৩০ সিরিজের জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৬৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ১৪-১৮ হাজার ডলার। আবার রাশিয়ার তৈরি মিগ-৩৫ জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৫৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৬,৫০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৭,৭০০ ডলার। আবার গ্রাউণ্ড এ্যাটাক ফ্যাসালিটির এসইউ-৩৪ জেট ফাইটারের জেট আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৬০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ১০,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ১৫,০০০ ডলার।

ফ্রান্সের তৈরি রাফাল জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৮০-১০০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৯,৫০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ১৮,০০০ ডলার। আকাশের রাজা ইউরোফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ১২৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৯,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৯-১০ হাজার ডলার।

তবে কাগজে কলমে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পে-লোড ধারণ ক্ষমতার অধিকারী জেট ফাইটার হচ্ছে চীনের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি জে-২০ স্টিলথ জেট ফাইটার। এর প্রডাকশন কস্ট আনুমানিক ১২০ মিলিয়ন ডলার, পে-লোড ক্যাপাসিটি ১১,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং কস্ট প্রায় ২২-২৪ হাজার ডলার। তাছাড়া চীনের জে-১১ জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৪০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৯,০০০ ডলার। ক্যারিয়ার বেসড জে-১৫ জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৫৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ১০,০০০ ডলার।

তবে সিঙ্গেল ইঞ্জিন জেট ফাইটারের মধ্যে রাজাদের রাজা বলতে বুঝায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন জেট ফাইটারকে। এ মুহুর্তে বিশ্বের ৩০টি দেশের বিমান বাহিনীতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রায় ২,৬০০টি পর্যন্ত সার্ভিসে থাকা জেট ফাইটারের রেকর্ড দখল করে রেখেছে এফ-১৬ জেট ফাইটার। এফ-১৬ ব্লক-৭০/৭২ এর আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৬৫ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৭,৭০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৭,০০০ ডলার। তাছাড়া জাপানের এফ-২ জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ১২০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৮,০০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৯,০০০ ডলার। ইউরোপের দেশ সুইডেনের সাব গ্রীপেন-ই এডভান্স জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য ৫০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৫,৩০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট ৪,৭০০ ডলার। তবে সাব গ্রীপেন-ই সুইডেনের নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি করা হলেও এর ইঞ্জিন, রাডার এবং এভিয়নিক্সসহ প্রায় ৮০% পর্যন্ত যন্ত্রাংশ, ওয়েপন্স, কিট এণ্ড ডিভাইস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, যুক্তরাজ্য, জার্মানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

আবার ভারতের লাইট হাল তেজাস জেট ফাইটার ভারত নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি করলেও এর ইঞ্জিন, রাডার এবং এভিয়নিক্সসহ ৫৫% গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম অন্য দেশ থেকে আমদানি করে তৈরি করা হয়। তেজাস জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রয়মূল্য আনুমানিক ৪০ মিলিয়ন ডলার, পে লোড ক্যাপাসিটি ৫,৭০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং এণ্ড মেইটেনেন্স কস্ট আনুমানিক ৬,৫০০ ডলার। এদিকে চীন-পাকিস্তানের যৌথভাবে তৈরি জেএফ-১৭ থাণ্ডার লাইট জেট ফাইটারের অধিকাংশ প্রযুক্তি চীনের এবং ইঞ্জিন রাশিয়ার কিমভ আরডি-৩৩/৯৩। জেএফ-১৭ থাণ্ডার লাইট জেট ফাইটারের আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য ৩০ মিলিয়ন ডলার এবং এর পে-লোড ক্যাপাসিটি ৫.৫০০ কেজি এবং পার আওয়ার অপারেটিং কস্ট প্রায় ৫,৫০০ ডলার।

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.