--- বিজ্ঞাপন ---

অত্যাধুনিক ৩০টি জেট ফাইটার কিনছে মিশর, প্রতিটির দাম ১৫০ মিলিয়ন ডলার

0

মিশরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায় যে, মিশরের বিমান বাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে সাম্প্রতিক সময়ে আনুমানিক ৩.৭৫ বিলিয়ন ইউরো বা ৪.৫০ বিলিয়ন ডলার চুক্তিমূল্যে নতুন করে ৩০টি অত্যাধুনিক এবং ৪++ প্রজন্মের রাফাল জেট ফাইটার ক্র‍য়ের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। সে হিসেবে একেবারে নতুন সিরিজের রাফাল জেট ফাইটারের প্রতি ইউনিট কস্ট হচ্ছে ১৫০ মিলিয়ন ডলার। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান অস্থিতিশীল যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখে মিশর তার বিমান বাহিনীর জন্য বিশ্বের সেরা এবং উচ্চ প্রযুক্তির টুইন ইঞ্জিন ডেডিকেটেড পশ্চিমা জেট ফাইটার ক্রয়ে চেষ্টার কোন ত্রুটি করছে না।

তাছাড়া মিশর ২০১৫ সালে ফ্রান্স থেকে সহজ শর্তে এবং একেবারে স্বল্প মূল্যে ৯৫০ মিলিয়ন ইউরো বা ১.১৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ব্রাণ্ড নিউ মিস্ত্রাল ক্লাসের দুটি এম্ফিবিয়াস এসাল্ট শিপ বা কমব্যাট হেলিকপ্টার ক্যারিয়ার সংগ্রহ করে। বর্তমানে মিশরের আল ফাত্তা আল সিসি সরকারের সাথে ফ্রান্সের গভীর সামরিক এবং কূটনৈতিক সহযোগিতা মুলক সম্পর্ক বিদ্যামান রয়েছে। ফ্রান্স বর্তমানে মিশরকে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় অন্যতম অংশীদার এবং সহযোগী দেশ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে।

মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্ক এবং ইরান বিরোধী শিবিরের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ হিসেবে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি মিশর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এদিকে মিসরের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ফ্রান্সের ড্যাসাল্ট এভিয়েশন কর্পোরেশন সাথে নতুন করে ৩০টি সুপার এডভান্স রাফায়েল জেট ফাইটার ক্রয়ের চুক্তির আর্থিক মূল্য সুস্পষ্টভাবে না প্রকাশ করলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন সূত্রে এর চুক্তিমূল্য ৪.৫ বিলিয়ন ডলার বলে জানা যায়। তাছাড়া মিশর মধ্যপ্রাচ্যে ফ্রান্সের অগ্রধিকারমুলক সামরিক অংশীদার হওয়ায় সহজ শর্তে এবং আগামী ১০ বছর পর্যন্ত রাফায়েল জেট ফাইটারের মূল্য পরিশোধের বিশেষ সুযোগ পাচ্ছে।

চলতি ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ফ্রান্সের সাথে মিশরের রাফাল জেট ফাইটার ক্রয়ের চুক্তিটি চূড়ান্ত করে এবং এ চুক্তি সম্পাদনের জন্য মিশরের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল প্যারিস সফরে যান।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে মিশরের বিমান বাহিনীকে বিপুল সংখ্যক অত্যাধুনিক এবং বিশ্ব মানের ফিকসড উইংস জেট ফাইটার এবং এ্যাটাক যুদ্ধবিমান দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে। বিশেষ করে মিশরীয় বিমান বাহিনীর এয়ার ফ্লীটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন জেট ফাইটার সার্ভিসে রয়েছে মোট ২১৮টি, ফ্রান্সের মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ১৯টি এবং অত্যাধুনিক রাফায়েল জেট ফাইটার রয়েছে ২৪টি। তাছাড়া রাশিয়ার তৈরি আপগ্রেডেড মিগ-২৯ রয়েছে ৪৪টি এবং রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ২১টি হাইলি ম্যানুভারেবল এ্যাটাক এসইউ-৩৫ জেট ফাইটার ক্রয়ের অর্ডার দিয়ে রেখেছে। তার পাশাপাশি অদূর ভবিষ্যতে নতুন করে আবার সংগ্রহ করা হবে ৩০টি এডভান্স রাফাল জেট ফাইটার।

তবে এখানে প্রকাশ থাকে যে, মিশরীয় বিমান বাহিনীতে বিপুল সংখ্যক প্রায় ২১৮টি এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন জেট ফাইটার সার্ভিসে থাকলেও সেগুলো কিন্তু অধিকাংশই পুরনো বি/সি/ডি ভ্যারিয়েন্টের এবং বেশ পুরনো। মিশরের বিমান বাহিনী প্রায় এক দশক আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের বিমান বহরে থাকা সকল এফ-১৬ জেট ফাইটার আপগ্রেড করার জন্য জড়ালোভাবে অনুরোধ এবং চেষ্টা করে গেলেও বাস্তবে ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা এবং স্বার্থ ভবিষ্যতে বিপর্যস্ত হতে পারে এমন প্রবল আশাঙখায় মার্কিন প্রশাসন মিশরের বিমান বাহিনীর এফ-১৬ জেট ফাইটার আপগ্রেডিং করতে অস্বীকার করে।

এমনকি ভবিষ্যতে যে কোন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর ক্ষতি হতে পারে এমন চিন্তা মাথায় রেখে মিশরের শত অনুরোধ সত্ত্বেও এফ-১৬ এর গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে এআইএম-১২০সি/ডি সিরিজের এডভান্স এয়ার টু এয়ার (বিভিআর) মিসাইল এবং আধুনিক গ্রাউন্ড এ্যাটাক মিসাইল বিক্রি, সরবরাহ কিংবা হস্তান্তর করা থেকে বিরত থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মিশরের বিমান বাহিনীর এফ-১৬ জেট ফাইটার সেই আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকের কেনা স্বল্প পাল্লার এআইএম-৭ স্প্যারো এবং এআইএম-৯ সাইড উইণ্ডার মিসাইল নিয়ে কমব্যাট মিশন পরিচালনা করে যাচ্ছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.