--- বিজ্ঞাপন ---

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস কোথায় আঘাত হানবে

0

আগামী বুধবার ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ‘ইয়াস’। আবহাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সেটি ভারতের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। এটি দিঘা থেকে পারাদ্বীপের মাঝে স্থলভাগের দিকে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। এই ঘূর্ণিঝড়ের বিস্তৃতি অনেকটা বেশি বলেই বেশি এলাকায় ক্ষতির আশঙ্কা বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।

গতকাল শনিবার (২২ মে) ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি জানান, এটা এখন লঘুচাপ অবস্থায় আছে। ২৩ থেকে ২৪ মের মধ্যে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এরপর ঘূর্ণিঝড় হয়ে ভূমিতে আঘাত হানবে ২৬ মে। ওই সময় ঝড়ের গতিবেগ ১২০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার হতে পারে। প্রতিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকেই এর মূল ডিরেকশন। তবে আক্রান্ত হতে পারে খুলনাও। আমরা ওয়েল প্রিপেয়ার্ড, লক্ষ্য- জিরো ডেথ।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, ২৫ মে থেকে দেশের কোথাও কোথাও ঝোড়ো হাওয়াসহ কিংবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। পরিস্থিতি বলছে, সারাদেশেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব দেখা যাবে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে খুলনায়, সবচেয়ে কম হওয়ার কথা চট্টগ্রামে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামি বুধবার সকাল থেকেই উত্তর বঙ্গোপসাগর উপকূলে দাপট দেখাবে এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ আজ, রবিবার অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এটি উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে সোমবার পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড়ে। বুধবার উত্তর বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে তা আছড়ে পড়তে পারে বাংলা-ওড়িশা উপকূলে। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছে আবহাওয়া দফতর ।

গত ২২ মে শনিবার একটি নিম্নচাপ তৈরি হয় পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে। আন্দামান সাগর সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে আজ, রবিবার এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ক্রমশ এই গভীর নিম্নচাপ সোমবার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। প্রথমে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম অভিমুখ থাকলেও পরে অভিমুখ পরিবর্তন হতে পারে। এখনও পর্যন্ত এই ঘূর্ণিঝড়ের যা অভিমুখ তাতে বাংলা -ওড়িশা উপকূল এলাকাতেই আছড়ে পড়ার প্রবল সম্ভাবনা। বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড়ের বিস্তৃতি বাংলাদেশ থেকে উত্তর ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত হবে। সেক্ষেত্রে সুন্দরবনের সাগরদ্বীপ দিয়েও স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। । ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সুন্দরবনের বাংলাদেশ উপকূল থেকে ওড়িশা উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত।

 কীভাবে এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘ইয়াস’ হল?

আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে, যে মহাসাগরে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, তার অববাহিকার দেশগুলি সেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে। একবিংশ শতাব্দীর গোড়ায় এই পদ্ধতি শুরু হয়। সেইমতো বিশ্বে ১১ টি প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করে।

এরইমধ্যে ২০০০ সালে ওমানের মাসকটে ওয়ার্ল্ড মেটেরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন/ইউনাইটেড নেশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড পেসিফিকের (WMO/ESCAP) ২৭ তম বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল। বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে উৎপত্তি হওয়া সব ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করতে সেই বৈঠকে রাজি হয়েছিল সংগঠনটি।

সেই মতো ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে উত্তর ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হয়েছিল। সেই সময় আটটি দেশ নামের পরামর্শ দিত। পরবর্তী সময়ে সেই সংগঠনে আরও পাঁচটি দেশ যোগ দেয়। আপাতত ওই সংগঠনের দেশগুলি হল – বাংলাদেশ, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মায়ানমর, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং ইয়েমেন।’ইয়াস’-এর নামকরণ এবং অর্থ?

এবার ‘ইয়াস’-এর নামকরণ করেছে ওমান। ‘ইয়াস’ হল একধরনের গাছ। যার গন্ধ আছে। ইংরেজিতে যার অর্থ জুঁইয়ের কাছাকাছি।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.