--- বিজ্ঞাপন ---

সন্তানেরা বড় হয়েছে অনেক মা-বাবা তা মানতে চান না

0

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান রিয়া ছোট থেকেই খুব আদরে মানুষ। সময়ে খাবার, ফল, ড্রাই ফ্রুটস, ঘুরতে যাওয়া, টিউশন, নাচের ক্লাস, আঁকার ক্লাস কোথাও কোনও খামতি ছিল না। স্কুলে আসা-যাওয়া, টিউশনে ছাড়তে যাওয়া সবই করত রিয়ার মা-বাবা। মাধ্যমিকের পর যখন দেখল সব বন্ধুরা একাই আসা যাওয়া করছে এদিকে তার বাড়ির লোক কিছুতেই তাকে একা ছাড়তে নারাজ তখন তার খুবই দুঃখ হত। এদিকে বন্ধুরা বেশ একা একা বাসে যাতায়াত করত। এমনকী টিউশনেও তাকে কিছুতেই একা ছাড়ত না। রিয়া ভাবল কলেজে বোধহয় খানিকটা রেহাই পাবে এই বাঁধন থেকে। কিন্তু সেখানেও দেখে একই অবস্থা। প্রথম প্রথম ভাবল বুঝি বাড়ির থেকে কলেজ একটু দূরে বলে বোধহয় মা-বাবা চিন্তা করে। এদিকে বন্ধুদের সব রঙিন জীবন।

ক্যান্টিনে ঘুরতে যাচ্ছে খেতে যাচ্ছে, শপিং, সিনেমা-কিছুই বাকি নেই। কিন্তু রিয়াকে এখনও মা বাড়ি থেকে টিফিন দিয়ে দেয়। সেদিন যখন শিঞ্জিনী তাকে সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা বললো আর বাড়ি থেকে অনুমতি দিলো না সেদিন যেন বাড়িতে দক্ষযজ্ঞ বেঁধে গেল। রিয়ার সঙ্গে মায়ের খুবই ঝগড়া হল। এভাবে তাকে আগলে রাখা, তার মতামতকে গুরুত্ব না দেওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে বেরোতে না দেওয়া এসবের তীব্র প্রতিবাদ জানাল। সে এখন বড় হয়েছে, তার নিজস্ব কিছু মতামত আছে, নিজের ইচ্ছে আছে, শখ আছে এভাবে তাকে তাই আটকানো যাবে না। কিন্তু মা নাছোড়বান্দা। তাঁর মনে হয়েছো আগল ঢিলে করলেই মেয়ে অমানুষ হয়ে যাবে। মায়ের ধারণা মেয়ে এখনও সঠিক মানুষ চিনতে শেখেনি। শুধু রিয়া নয়। রিয়ার মতো ভুক্তভোগী এরকম আরও অনেকেই আছে। অনেক মা-বাবা মনে করেন সন্তানের ভালো মন্দ বোঝার বয়স হয়নি। একমাত্র তাঁরাই সন্তানের ভালো মন্দ বুঝতে পারেন সবথেকে ভালো। শুধু তাই নয়, সন্তানের নিজের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষমতা নেই বলেই তাঁরা মনে করেন। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। কিন্তু কীভাবে বোঝাবেন মা-বাবাকে

আপনিও যে দায়িত্ব নিতে পারেন তা বাড়িতে বোঝান

বেশিরভাগ বাড়িতেই মা-বাবা ঠিক করেন সন্তান ভবিষ্যতে কী নিয়ে পড়বেন। দ্বাদশ শ্রেণির পর যখন ভবিষ্যতের পথ শুরু হয় তখন কিন্তু অনেকেই তাঁদের পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাননা। কারণ সেই বাড়ির লোক। গতে বাঁধা বিষয়ের পরিবর্তে অন্য কিছু নিয়েও যে কেরিয়ার তৈরি করা যায় তা অনেক মা-বাবাই বুঝতে চান না। এখান থেকেই সন্তানকে দায়িত্ব নিতে হবে। মা-বাবাকে বোঝাতে হবে কেন আপনি সেই বিষয় নিয়ে পড়তে চান। আপনি যে নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম তা বাড়িতে অবশ্যই বোঝাবেন।

বাবা-মায়ের মতামত অবশ্যই নেবেন

মা বাবা কিন্তু সন্তানের সব সময় মঙ্গল চান। হতেই পারে তাঁদের সঙ্গে আপনার মতের মুল হচ্ছে না। কিন্তু তাঁদের মতও অবশ্যই নেবেন। হাজার হোক তাঁরা আপনার থেকে অভিজ্ঞ। এতে তাঁদের সঙ্গে সম্পর্কও ভালো থাকবে। উভয়ের মধ্যে বোঝাপড়াও ঠিক থাকবে।

মা-বাবার মধ্যে সহানুভূতি কম?

যখন মা-বাবারা বাচ্চার অত্যধিক খেয়াল রাখেন তখন তাঁরা ভুলে যান কোথাও গিয়ে সহানুভূতি হারিয়ে যাচ্ছে। সন্তানও বড় হচ্ছে। তার নিজস্ব ভালোলাগা, মতামত অবশ্যই থাকবে। আজ না হলেও দুদিন পর তো তাকে বাইরে ছাড়তেই হবে। কিন্তু সহানুভূতি কম থাকলে চলবে না। প্রয়োজনে রাগারাগি করবেন।

মা-বাবা যদি গোপনীয়তা বজায় রাখতে না দেন

একটা বয়সের পর প্রত্যেক মানুষের Privacy প্রয়োজন হয়। কিন্তু অনেকেই তা মানতে নারাজ। ছেলে বা মেয়ে কোনও কারণে দরজা বন্ধ করে থাকলে তাঁরা বার বার এসে টোকা দেন। ছেলে মেয়ে বড় হলে তার যে নিজস্ব স্পেসের প্রয়োজন হয় এটা অনেক মা-বাবাই বুঝতে চান না। কিছু ব্যাপারে বড়ই অবুঝ তাঁরা। আর তাই এই বিষয়ে নিজেকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সূত্রঃ এই সময়

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.