--- বিজ্ঞাপন ---

ওড়িশা ও দীঘা লন্ডভন্ড, ভারতের একাংশে তান্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

0

ইয়াসে (Cyclone Yaas) লন্ডভন্ড হয়েছে স্বপ্নসুন্দরী দিঘা (Digha)। ঝড়ের দাপটে তছনছ হয়েছে সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা। ভেসে গিয়েছে মন্দারমনি, তাজপুর। নামানো হয়েছে সেনা। কলকাতায় টর্ণেডো সর্তকতা জারী করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিমান বন্দর। এরই মধ্যে ভেঙ্গে গেছে হাজার হাজার ঘরবাড়ী। কোথাও কোথাও ৫ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত ঝলোচ্ছাস দেখা দিয়েছে। সাগর পাড়ের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময় লিখেছে, কথায় আছে ‘স্বপ্নসুন্দরী’ দিঘা (Digha)। কিন্তু, ইয়াসের ধাক্কায় সেই দিঘাই এখন হয়ে উঠেছে ভয়ংকরী। প্রবল গতিতে ধেয়ে আছড়ে পড়েছে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড় ইয়াস (Cyclone Yaas)। যার ফলে সকাল থেকেই লন্ডভন্ড দিঘা। সমুদ্রের প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে দিঘার বিস্তীর্ণ এলাকা। উত্তাল সমুদ্রের জল গার্ডওয়াল টপকে ঢুকছে রাস্তায়। প্লাবিত মন্দারমনি, তাজপুরও। রাস্তা টপকে হোটেলেও ঢুকেছে জল। ডুবে গিয়েছে সমুদ্র সংলগ্ন দোকানগুলিও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ খালি করতে কোমরবেঁধে নেমেছে প্রশাসন। সেনা নামিয়ে চলছে উদ্ধারকাজ।

আনন্দবাজার জানায়,  সকাল ৯টায় ওড়িশার ভদ্রক জেলায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আবহাওয়া দফতর বুধবার জানিয়েছে, আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়াটি শেষ হতে সময় লাগবে আরও প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা। দুপুর ১টার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-এর পুরোপুুরি ঢুকে পড়ার কথা স্থলভূমিতে। ওড়িশার স্পেশাল রিলিফ কমিশনার জানিয়েছেন, স্থল ভাগে ঘূর্ণিঝড়ের হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার। বালেশ্বরেও ওই একই গতিবেগ থাকবে ইয়াসের। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে ওড়িশার উপকূলবর্তী প্রায় ৩৫ কিলোমিটার পরিধি জুড়ে। এই এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনাও রয়েছে । ওড়িশার উপকূল এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই ১৫ লক্ষের বেশি মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ওড়িশা সরকার।

বুধবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ইয়াস-এর স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া। বেলা ১১টার বুলেটিনে মৌসম ভবন জানিয়েছে, আরও ২ ঘণ্টা অর্থাৎ দুপুর ১টার মধ্যে স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া শেষ হবে। অর্থাৎ বালেশ্বর অতিক্রম করে যাবে ঘূর্ণিঝড়। তার পরে তা চলে যাবে ঝাড়খণ্ডের দিকে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইছে। ওড়িশা প্রশাসন জানাল, বালেশ্বর থেকে ময়ুরভঞ্জের দিকে যাবে ইয়াস। তবে বিকেল পর্যন্ত বালেশ্বরের উপরেই অবস্থান করবে এই ঘূর্ণিঝড়।

এই মুহূর্তে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার, সর্বোচ্চ ১৫৫ কিলোমিটার। ইয়াস-এর প্রভাবে ওড়িশা উপকূলে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার বেগে, সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে।
এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান ২১.৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ ও ৮৬.৯৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। গত ৬ ঘণ্টা ধরে ১৪ কিলোমিটার গতিবেগে এগোচ্ছে ইয়াস।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক, কেন্দ্রাপাড়া, জগৎসিংহপুরের মতো উপকূলবর্তী বিভিন্ন জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। অতি ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা পশ্চিবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।

বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডে পৌঁছবে ইয়াস
ওড়িশার সীমান্ত পেরচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বৃহস্পতিবার পৌঁছবে ঝাড়খণ্ডে। ঝাড়খণ্ডে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ভারি বৃষ্টি হবে বলে জানালেন,আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র। ছবিঃ এই সময়

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.