--- বিজ্ঞাপন ---

অনিশ্চয়তার মুখে পাকিস্তানের নতুন সাবমেরিন ক্রয় প্রকল্প

0
পাকিস্তান তার নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ আধুনিকায় এবং সাবমেরিন ফ্লীটকে শক্তিশালী করার জন্য ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে চীন থেকে ৮টি ইউয়ান ক্লাস (টাইপ-০৩৯বি আপগ্রেডেড) ডিজেল ইলেক্ট্রিক এ্যাটাক সাবমেরিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই পরিকল্পনার আলোকে ঠিক একই বছর ২০১৫ সালের ২৩শে জুলাই চীনের সাথে সুবিশাল ৫.০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের নতুন প্রজন্মের ৮টি ইউয়ান (টাইপ-০৩৯বি আপগ্রেডেড) ক্লাস ডিজেল ইলেক্ট্রিক এ্যাটাক সাবমেরিন ক্রয়ের চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করে। আর এর মাধ্যমে চীন তার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫.০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের বড় ধরণের ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রয় বা রপ্তানির আদেশ হাতে পেল। চুক্তি মোতাবেক প্রথম ৪টি সাবমেরিন চীনের শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশনের (সিএসওসি) শিপইয়ার্ডে তৈরি করা হবে এবং অপর ৪টি সাবমেরিন পাকিস্তানের করাচি শিপইয়ার্ড এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস (কেএসএইডব্লিউ)’তে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে তৈরি করার কথা ছিল। তাছাড়া এই চুক্তির আলোকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ৪টি এবং ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ ৮টি সাবমেরিন পাকিস্তানের নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হবে।
তবে চুক্তিতে পাকিস্তানের চাহিদার ভিত্তিতে চীনের তৈরি এই ইউয়ান সাবমেরিনে চীনের নিজস্ব প্রযুক্তির ইঞ্জিন এবং এআইপি সিস্টেমের পরিবর্তে জার্মানের তৈরি উচ্চ প্রযুক্তির ইঞ্জিন এবং এআইপি সিস্টেম ইনস্টল করার কথা ছিল। জার্মান কিন্তু এই প্রজেক্টে তাদের তৈরি ইঞ্জিন এবং এআইপি সিস্টেম সরবরাহের প্রস্তাব সরাসরি বাতিল করে দেয়। আসলে পাকিস্তানের করাচিতে চীনের ইউয়ান (টাইপ-০৩৯বি আপগ্রেডেড) ক্লাস সাবমেরিন তৈরির ব্যাপারে প্রবল আপত্তি জানায় জার্মানির সাবমেরিন ইঞ্জিন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি এমটিইউ। চীন তার নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাবমেরিন তৈরি করলেও এর ভালো মানের সাবমেরিন ইঞ্জিন ডিজাইন এবং তৈরি করতে পারে না। আর জার্মানীর এমটিইউ কোম্পানির সাথে চুক্তির আলোকে এই কোম্পানির তৈরি অত্যাধুনিক ডিজেল ইঞ্জিন শুধুমাত্র চীনের নিজের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভাল ফোর্সের এ্যাটাক সাবমেরিনে ব্যবহার করা হয়।
২০০২ সালে জার্মানির এমটিইউ কোম্পানির সাথে চীনের সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী চীন কেবল তার অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য তাদের নিদিষ্ট্য বিশেষ কিছু মডেলের সাবমেরিনের ডিজেল ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিন ইনস্টল ও ব্যবহার করতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী এটি তৃতীয় কোন দেশের কাছে বিক্রি বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কোম্পনির অনুমতি নিতে হবে। তাই ২০০২ সালের চুক্তিকে এড়িয়ে বা লংঘন করে পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করা চীনের ইউয়ান সাবমেরিনে জার্মানীর এমটিইউ কোম্পানি তাদের তৈরি ইঞ্জিন ও এআইপি সিস্টেম বিক্রি বা সরবরাহে আপত্তি জানায়। যদিও পাকিস্তান তাদের ৮টি সাবমেরিনের জন্য নতুন প্রজন্মের ইঞ্জিন ও এআইপি সিস্টেম রপ্তানি বা সরবরাহে জার্মানীর কাছে বার বার অনুরোধ করে। তবে জার্মান এখনো পর্যন্ত পাকিস্তানের আহবানে সারা দিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এতে করে পাকিস্তানের নতুন ৮টি ইউয়ান ক্লাস সাবমেরিন তৈরির প্রজেক্ট কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও শেষমেশ চীনের তার নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি সাবমেরিনের ডিজেল ইলেক্টিক ইঞ্জিন এবং এআইপি সিস্টেম ব্যবহার করে সাবমেরিন তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে দেশ দুটি সম্মত হয়েছে বলে মনে করা হয়। আবার এমনো হতে পারে, চীন তার নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি নিম্ন মানের সাবমেরিন ইঞ্জিন এবং এআইপি সিস্টেম পাকিস্তানকে গছিয়ে দেবার কৌশল অবলম্বন করে থাকতে পারে।#
আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.