--- বিজ্ঞাপন ---

কিউবাকে সহ্য করতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র

0

আরিফ আনজুম #

সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র কী শক্তিশালী রাষ্ট্র? আজ একসাথে দুটো শত্রুর বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে সমাজতান্ত্রিক কিউবাকে। একটা তার বিপ্লবের সময় থেকে শত্রু, মাত্র ১৪৫ কিলোমিটার দূরের প্রতিবেশী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আর একটা করোনা মহামারী। করোনা মহামারী সম্পূর্ণ অচেনা এক প্রাকৃতিক শত্রু। এই মহামারী গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে, পুঁজিবাদ নির্ভর অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। একমাত্র সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো ছাড়া কেউই এর সাথে ঠিকঠাক মোকাবেলা করে উঠতে পারছে না। ২০২০ সালের শুরু থেকেই মহামারী রোধে কিউবার ভূমিকা গোটা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। প্রতি দশ লক্ষে মৃতের সংখ্যা মাত্র ১৩৯ জন, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৃতের হিসাব  প্রতি দশ লক্ষে ১৮৭১ জন। নিজের দেশ ছাড়াও অন্য দেশগুলোতে একমাত্র দেশ হিসাবে মেডিকেল টিম পাঠিয়ে মহামারী সামাল দেওয়ার অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছে কিউবা। গোটা বিশ্বের বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে কিউবার মেডিকেল টিমকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার জন্যও। যদিও কিউবার কাছে এটা নতুন নয়, এর আগে আফ্রিকার ইবোলা মহামারীর সময়েও একই কাজ করেছিল কিউবা। আসলে এটা মার্কসবাদের নিরন্তর অনুশীলন যা কিউবাকে শিখিয়ে গেছেন ফিদেল। পৃথিবীতে একমাত্র হাভানার রাস্তাতেই বিলবোর্ডে শ্লোগান লেখা দেখতে পাওয়া যায়- ‘নিজের দেশের জনগণের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করা মহৎ, আর অন্য দেশের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করা মহত্তর।’ গত এক বছরে কিউবা একাই প্রস্তুত করেছে পাঁচটি ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট, যার মধ্যে একটির সাফল্যের মাত্রা করোনা প্রতিরোধে ৯২ শতাংশ। উচ্ছসিত প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।এবার আসা যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রসঙ্গে। সেই মহান কিউবা বিপ্লবের পর থেকেই ১৯৬২ সালে কিউবার ওপরে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ চাপিয়ে বসে আছে আমেরিকা। দীর্ঘ ৬০ বছর পার করেও সেই অবরোধ শুধু বজায়ই রাখেনি আমেরিকা, উল্টে আরও কঠিন করেছে। মোট ২৪৩টি বাণিজ্যিক অবরোধ, জ্বালানি অবরোধ, ডলার অবরোধ চাপিয়ে রেখেছে। এমনকি, ২০২০ সালে বিশ্ব মহামারী শুরুর পরেও ট্রাম্প প্রশাসন নতুন কিছু অবরোধ চাপিয়ে দেয়। সেই সময়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাত সদস্যের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি চিঠি লিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানায়- দয়া করে কিউবার ওপর থেকে এই নিষ্ঠুর মার্কিনী অবরোধগুলো তুলে নেওয়ার জন্য, কারণ মহামারীর সময় প্রত্যেক দেশেরই অর্থনৈতিকভাবে অস্তিত্ব রক্ষার সময়। স্বাভাবিক ভাবেই বৃহৎ পুঁজির রক্ষাকর্তা আমেরিকা তাতে পাত্তা দেয়নি। উল্টে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তা মাইক পম্পিও কূটনীতিকদের কাছে বলেছিলেন- “কিউবার সরকার তাদের দেশের মানুষের ‘মানবাধিকার’ রক্ষায় সচেষ্ট নয়, তাই এই কড়া অর্থনৈতিক অবরোধ দরকার, ওখানে দুর্ভিক্ষ এলে তবেই না সরকার পাল্টাবে’! এমনকি লাতিন আমেরিকা মহাদেশে কিউবাতেই প্রথম করোনা ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পরেও তার কাঁচামাল জোগান ও সরবরাহে বারংবার বাধার সৃষ্টি করে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

আসলে কিউবার সাফল্য মানেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গাত্রদাহ। কারণ মানব উন্নয়ন সূচকের বেশির ভাগ বিভাগেই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তারা এগিয়ে। যেমন-প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশুপুষ্টি, শিশুমৃত্যু রোধ নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি। আর শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ গুরুত্বপূর্ণ সবকিছ্ইু সেখানে বিনামূল্যে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রাথমিক শর্তাবলি মেনেই। মহামারী সময়কালে আমেরিকা তাই ভেবেছে এইবার কিউবাকে জব্দ করা যাবে। এমনিতেই অনুন্নত কৃষি ক্ষেত্রের সৌজন্যে কিউবাকে আজও দেশের ব্যবহৃত খাদ্যশস্যের ৭০ শতাংশ আমদানি করতে ৭ হয়। মহামারীর সময়ে আমদানি ক্ষেত্রে নানা বিধি নিষেধ, তার ওপরে মার্কিনী অবরোধ সেই কাজে বাধা সৃষ্টি করে ত চলেছে । দেশের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন ক্ষেত্র। গত দেড় বছর গোটা বিশ্বেই পর্যটন ব্যবসা ধুকছে, ফলে সেখান থেকেও আয় অনেক কমে গেছে। আবার একইসাথে মহামারীর চিকিৎসার জন্য ব্যয়ও কয়েকগুণ বেড়েছে যেটা সরকারের আগাম হিসাবের মধ্যে ছিল না। কিউবার অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী আলেজান্দ্র ফারনান্দেজের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী করোনার জন্য যাদের হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হয় তাদের জন্য প্রতিদিন সরকারের আনুমানিক খরচ হয় ২০০ থেকে ৫০০ ডলার। এক্ষেত্রে বলাবাহুল্য, কিউবায় চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্প‚র্ণ বিনাম‚ল্যে। ফলে সব মিলিয়ে কিউবা কিছুটা আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে স্বাভাবিকভাবেই। আর ঠিক এই সময়টাই কাজে লাগাতে চেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের গত ৬০ বছরের দাবি কিউবায় শাসক বদলের (রেজিম চেঞ্জ), কারণ একদম নাকের ডগায় একেবারে খাঁটি সমাজতন্ত্র। ফলে তাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস মতো পুঁজিবাদের প্রতি কোনও ‘অবাধ্য’ দেশকে নিজেদের কবজায় নিতে গেলে প্রাথমিকভাবে একটু সরকার বিরােধী বিক্ষোভ সংগঠিত করে দিয়ে পরে ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা’র নাম করে সোজা এফ ১৬ বিমান নিয়ে চলে আসা এই ছকেই খেলতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হাজার হাজার ভুয়ো টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ‘এসওএস কিউবা টুইট আর রিটুইটে  বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারপর একতরফা অতিরঞ্জিত খবর পরিবেশন এবং সবশেষে হাস্যকরভাবে কিউবা বিপ্লবের সমর্থনের জমায়েতের ছবিকে সরকার বিরোধী বিক্ষোভের ছবি বলে চালানো- সিআইএ কিছুই বাদ রাখেনি গত ১১ জুলাই, মাত্র একদিনের মধ্যে। মার্কিনী প্রচারযন্ত্রের এমনই মহিমা যে বিশ্বখ্যাত গার্ডিয়ান পত্রিকা অবধি ভুল ছবি ছেপে পরে দুঃখপ্রকাশ করতে বাধ্য হয়। আসলে ‘এসওএস কিউবা’- টুইটারে এই হ্যাসট্যাগটা তৈরি করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি কেন্দ্রিক একটি সংস্থা, আর তাতে সরাসরি টাকার জোগান দেয় রিপাবলিকানদের ফ্লোরিডা প্রদেশ সরকার। যে মুহ‚র্তে এই ‘এসওএস কিউবা’ বিশ্ব সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, একদম কালক্ষেপ না করেই এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের মতামত ও দেবার আগেই মিয়ামির মেয়র ফ্রান্সিস্কো সুয়ারেজ টুইট করে বসেন- “কিউবার সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে দরকারে এয়ার স্ট্রাইকের কথাও ভাবা যেতে পারে। আসলে এয়ার স্ট্রাইকটাই সবক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসনের কাছে সহজলভ্য উপায়।” একটু পরেই আসরে নেমে মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন টুইট করেন- “এতাে দেখছি কিউবার মানুষের সত্যিকারের স্বাধীনতার জন্যই দাবি। আমরা পাশে থাকব কিউবার জনগণ ও তাদের স্বাধীনতার দাবির সঙ্গে। বাইডেনের এই টুইট যতটা না কিউবানদের জন্য, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই প্রযােজ্য। কারণ কিউবানরা দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই মার্কিন অর্থনৈতিক অবরােধ থেকে স্বাধীনতা চাইছে। গত ২৩ জুন রাষ্ট্রসঙ্ঘে কিউবার ওপরে মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধ তোলার ভোটাভুটিতেও একঘরে হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অবরোধ তোলার পক্ষে ভোট পড়েছে ১৮৪টি আর বিপক্ষে মাত্র ২ টি। ফলে অবৈধ মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধকে বৈধ করে তুলতে এরকম সংগঠিত বিক্ষোভের আয়োজন করতেই হতো ওয়াশিংটনকে।

আত্মপ্রত্যয়ী কিউবা জানে কিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে। ফিদেলের শিক্ষা থেকেই কিউবা এটা জানে, এবারও তার সফল প্রয়োগ করে দেখিয়ে দিয়েছে। একটা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রধান হিসাবে মিগুয়েল দিয়াজ কেনেলের যা করার কথা উনি সেটাই করেছেন- সরাসরি দেশের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যে কোনও ম‚ল্যে মহান কিউবা বিপ্লবকে রক্ষা করতে হবে। সকল কমিউনিস্ট দেশপ্রেমিক মানুষ রাস্তায় নামুন। হাভানা সহ যেখানে যেখানে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল সেখানে তো বটেই, গোটা কিউবা জুড়েই লক্ষ লক্ষ মানুষ ‘মহান বিপ্লব’কে রক্ষা করতে লাল শার্ট পরে ফিদেল এবং হােশে মার্তির বড় বড় ছবি সহ রাস্তায় নেমে গোটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা তাদের সমাজতান্ত্রিক সরকারের পাশেই আছেন। রাস্তায় নেমেছেন কমরেড রাউল কাস্ত্রো, দিয়াজ কেনেল নিজেরাও। এক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো, মাত্র নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় সরকারবিরােধী বিক্ষোভ হয়িেছল আর সেখানে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল হাজারে (মার্কিন সংবাদপত্রেরই দাবি)। কিউবার রাষ্ট্রপতি দিয়াজ কেনেল পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন- বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সকলেই আমেরিকার অনুগত নন, কেউ কেউ সত্যিই মহামারী জনিত হতাশায় ভুগছেন, কেউ কেউ দেশের ভবিষ্যতের জন্যও চিন্তিত, তাদের আমরা আশ্বস্ত করছি।

কিন্তু কোনও প্রতিবিপ্লবী বা ভাড়াটে খুনিকে সাধারণজনগণের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। এই বিক্ষোভকারীদের মডেলটা নয়াউদারবাদী মডেল যেখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সমস্তকিছুর বেসরকারিকরণ করা হবে এবং কেবলমাত্র অর্থের বিনিময়েই পরিসেবা পাওয়া যাবে। তাই আমরা আমাদের দেশের ও জনগণের স্বাধীনতা ও দেশের সার্বভৌমত্বকে কোন মতেই আত্মসমর্পণ করতে দিতে পারি না। এই দেশে আমাদের মধ্যে অনেক বিপ্লবী আছেন যারা এই মহান বিপ্লবকে রক্ষা করতে নিজেদের জীবনও দিতে রাজি এবং এটি নিছক কোনও শ্লোগান নয়, এটি একটি দৃঢ় প্রত্যয়। কিউবার রাস্তালো বিপ্লবীদের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। পার্টি দ্বারা পরিচালিত বিপ্লবী সরকার, আলােচনার জন্য, বিতর্কের জন্য এবং সর্বোপরি জনগণের সাথে একসাথে সমস্যাগুলোর সমাধানে অংশ নিতে আগ্রহী, কিন্তু আমাদের বিভ্রান্ত হওয়ার কোনও অবকাশ নেই। সঙ্কটে পড়লেও সমাজতন্ত্রের নিজের মধ্যেই তা থেকে উত্তরণের পথ রয়েছে।

কিউবার অভ্যন্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অশান্তি তৈরির চেষ্টার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের কমিউনিস্ট, বাম ও প্রগতিশীল মহল প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে। লাতিন আমেরিকার ভেনেজুয়েলা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, নিকারাগুয়া প্রভৃতি দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা সরকারিভাবে প্রতিবাদ জানান। ‘এসওএস কিউবা’র পাল্টা টুইটে ভরে যায় ‘আমরা সবাই কিউবান’। কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় ইরান এবং আফ্রিকারও অন্যান্য দেশ। বিশ্বের অন্যতম দুই শক্তিধর দেশ চীন ও রাশিয়া তাদের দেশে অবস্থিত কিউবার রাষ্ট্রদ‚তকে ডেকে পাঠিয়ে আশ্বস্ত করে যে তারা এই অবৈধ মার্কিন দাদাগিরির বিরুদ্ধে সবসময় কিউবার পাশে আছে। চীন সরাসরি বলে। যে- অবৈধ মার্কিন অর্থনৈতিক অবরোধের জন্যই কিউবা সঙ্কটে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে রাশিয়ার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী সেরগেই রেভকভ পরিষ্কারভাবে বলেন যে, কিউবার অভ্যন্তরে কোন রকম মার্কিন আগ্রাসন মেনে নেওয়া হবে না এবং খুব শীঘ্রই যাতে কিউবা তার এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে তার জন্য রাশিয়া সর্বতোভাবে কিউবার পাশে থাকবে।

কুমিরের কান্নার মতো দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দাবি কিউবাতে নাকি ‘মানবাধিকার’ নেই। বিপ্লবী কমরেড রাউল কাস্ত্রো কয়েক বছর আগে এর একটা জবাব দিয়েছিলেন। রাউল বলেছিলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরাবর দাবি করে কিউবায় মানবাধিকার নেই, এটাই তাদের অর্থনৈতিক অবরোধ তোলার ক্ষেত্রে নাকি প্রধান প্রতিবন্ধকতা। আমাদের কাছে মানবাধিকারের অর্থ  হলো- সমকাজে সমমজুরি, পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য পুঁজিবাদী দেশে এটা নেই। মহিলারা সেখানে পান কম মজুরি। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিসেবা কিউবায় অন্যতম একটি প্রধান মানবাধিকার। বেশিরভাগ দেশে এটা কোনও মানবাধিকারই নয়। বরং, ব্যবসা। আমাদের দেশে শিক্ষাও মেলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। বিশ্বে আর ক’টি দেশ আছে, যেখানে বিনামূল্যে শিক্ষা মেলে? এটাও সব দেশে ব্যবসা।

আসলেই তাই । যেমন, এই জুলাই মাসেও কিউবায় প্রত্যেক পরিবার আগের মতোই জনপিছু একটা কফির প্যাকেট, নির্দিষ্ট পরিমাণ চাল, ভোজ্য তেল, চিনি, দুধ, ডিম এবং পাউরুটি পেয়েছে। এই জুলাই মাসেও প্রতি মহল্লায় নাগরিকদের নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজও হয়েছে। গত এক বছরে প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস হয়ে কিউবার অর্থনীতি সঙ্কটে থাকলেও সমাজতান্ত্রিক সরকার তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদেরই চাপানো অবরোধের জন্য এই সাময়িক সঙ্কটকে ব্যবহার করে কিউবাকে মেরে ফেলতে চাইলেও তা সম্ভব নয়, কারণ ওখানে বিপ্লবের শিকড় অনেক গভীরে পুতে রেখেছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.