--- বিজ্ঞাপন ---

সিরিয়ায় চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল

0

২০২১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর শুক্রবার ইসরায়েলর বিমান বাহিনী সিরিয়ায় দামেস্কের আশেপাশে বেশকিছু সামরিক স্থাপনা এবং ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। যদিও সিরিয়ার আসাদ বাহিনী তাদের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করার দাবি করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায় নিI তবে আসাদ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে এটি ছিল ইসরাইলের দ্বিতীয় বার বিমান হামলাI

গত শুক্রবারের রাতে মাত্র ১.২৬ মিনিটের এই ভয়াবহ বিমান হামলায় সিরিয়ার যৎসামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও আক্রমণ স্থলে বিকট শব্দে সারা শহর কেঁপে উঠে এবং বেশ কিছু জেয়গায় কালো ধুয়ার কুন্ডলি দেখা যায়। তবে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এ ব্যাপারে তাৎক্ষনিক কোনো মন্তব্য করে নিI

২০১০ সাল থেকে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ইসরাইল আসাদ সরকারকে উৎখাতে এক রকম নিয়মিতভাবে প্রতিমাসে দুই থেকে তিন বার সিরিয়ায় থাকা সামরিক স্থাপনা এবং ঘাঁটিতে বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ মেয়াদী এই বিমান হামলায় সিরিয়ার সরকারি সামরিক বাহিনী মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও বর্তমানে ইসরাইলের মূল টার্গেট কিন্তু সিরিয়ায় থাকা ইরান ও তার সহযোগী হিজবুল্লাহ বা স্বেচ্ছাসেবক কুদস মিলিশিয়াদের ঘাঁটি এবং অস্ত্র গুদামগুলো। ইসরাইল মুলত সিরিয়ায় বেছে বেছে ইরানের সামরিক স্থাপনার নিয়মিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিমান হামলার ক্ষেত্রে ইসরাইল কিন্তু সব সময়ই সিরিয়ায় থাকা রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে এড়িয়ে চলে।

সিরিয়ায় থাকা ইরানের সামরিক ঘাঁটি, স্থাপনা এবং অস্ত্র গুদামে ইসরাইলের নিয়মিত বিমান হামলায় এ পর্যন্ত মোট কতজন সেনা ও স্বেচ্ছাসেবী মৃত্যুবরণ করেছেন তার কোন সঠিক তথ্য বা পরিসংখ্যান পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। তাছাড়া ইরানের সংবাদ মাধ্যম ইসরাইলের বিমান হামলায় এবং বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধে ইরানী সেনা হতাহতের বিষয়ে কোন ধরণের তথ্য উপাত্ত জনসম্মুখে প্রকাশ করে না।

তবে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে ইরানের কিছু ওয়েবসাইট এবং সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয় যে, সিরিয়াতে থাকা ইরানের সামরিক উপদেষ্টা এবং ইরানের বিপ্লোবী বাহিনী (আইআরজিসি) সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে ইরানের সেনা ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্য নিহতের তালিকা দেয়। তাতে তারা জানায় যে, ২০১১ সাল থেকে চলমান সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে ইরানের প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজারের কাছাকাছি ইরানী সেনা মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও বাস্তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশী হয়ে থাকতে পারে বলে আশাঙ্খা করা হয়।

২০১৭ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানী সেনাদের পরিবারের সদস্যরা বেশ কয়েক বার বিক্ষোভ করেছিল। তার মূল কারণ সিরিয়ায় নিযুক্ত হওয়ার পরে সেই সেনার আর কোন দিনই খোঁজ পাওয়া যায় নি। এ নিয়ে ইরানের সরকারের তরফে কোন ধরণের তথ্য জন সম্মুখে আজ অব্ধি প্রকাশ করা হয়নি। তাছাড়া সিরিয়ায় নিহত সব সেনার মৃতদেহ তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয় না এবং এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে অত্যন্ত কৌশলে তথ্য লুকাচ্ছে ইরানের সরকার।

এদিকে ইরান থেকে আগত কুদস বাহিনীর নিহতের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে। যদিও এই তথ্যটিও শতভাগ নিশ্চিত করার কোন উপায় নেই। তবে ২০১৫ সাল থেকে বিশেষ করে ইসরাইলের বিমান বাহিনী যেভাবে প্রতি মাসেই বেছে বেছে সিরিয়ায় থাকা ইরানের সামরিক ঘাঁটি, রসদ সরবরাহ ব্যবস্থা এবং অস্ত্র গুদামে যে ভয়াবহ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ হামলায় শত শত সেনা ও কর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন বলে আশঙ্খা করা হয়।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.