--- বিজ্ঞাপন ---

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সরাসরি লিখিত পরীক্ষা নিষিদ্ধ করেছে চীন

0

প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে শিশুর মানসিক চাপ কমাতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সরাসরি লিখিত পরীক্ষা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। মুলত চীনের প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়গুলোতে একেবারে প্লে বা নার্সারী ক্লাস থেকেই শিশুর উপর অতি মাত্রায় মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এমন কঠিন ও ব্যয়বহুল প্রতিযোগিতামুলক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে অনেক আগে থেকেই। যা থেকে ধীরে ধীরে বেড়িয়ে এসে একটি আধুনিক, সহজ এবং শিশুবান্ধব প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিগত এক দশক থেকে বেশকিছু নতুন ও যুগোপযোগী শিক্ষা পরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে দেশটির শি জিং পিং সরকার।

আর তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক শিক্ষায় অহেতুক প্রতিযোগিতা ঠেকাতে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন ধারা আনতে কাজ করে যাচ্ছে তারা। আর তাই অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ওপর প্রবল মানসিক চাপ কমানোর লক্ষ্যে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে আনুষ্ঠানিক চূড়ান্ত মূল্যায়ন বা পরীক্ষা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে দেশটির সম্মানিত সরকার।

বর্তমানে চীনের প্রাথমিক স্তরের প্রথম শ্রেণি থেকে একেবারে উচ্চ শিক্ষার বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার মাধ্যমেই তার যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়। তবে বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের উপর মাত্রাতিরিক্ত পড়াশুনার এই চাপ শিক্ষার্থীদের শরীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করে চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত বেশকিছু গবেষণা থেকে জানা যায় যে, চিনের বড় বড় শহর অঞ্চলে বেশির ভাগ বিদ্যালয়গুলোতে মাত্রাতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা চাপিয়ে দেয় শিক্ষার্থীর উপর, যা কিনা শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে।

চিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন শিক্ষা নীতির আলোকে এখন থেকে দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনো ধরণের লিখিত পরীক্ষা নিতে পারবে না। তবে তৃতীয় শ্রেণি থেকে অন্যান্য শ্রেণিতে প্রতি সেমিস্টারে একটি চূড়ান্ত মূল্যায়ন বা পরীক্ষা নেওয়া হবে। আবার জুনিয়ার হাই স্কুলে নেওয়া হবে মিড-টার্ম পরীক্ষা। যদিও প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের ক্ষেত্রে কোনো আন্তঃস্কুল কিংবা আঞ্চলিক পর্যায়ে পরীক্ষার কোন অনুমতি দিবে না দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং তার সরকার। তাছাড়া চিনের নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী দেশের সকল জুনিয়ার হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের কোনো সাপ্তাহিক, পাক্ষিক বা মাসিক পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। এমনকি একাডেমিক রিসার্চ বা অন্য কোনো নামের আড়ালেও শিক্ষার্থীদের উপর অহেতুক চাপিয়ে দেওয়া পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিবেনা দেশটির প্রশাসন।

এদিকে আমাদের দেশের সরকার ২০২২ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে দেশের নতুন শিক্ষানীতি এবং কারিকুলামের আওতায় দেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তর থেকে একেবারে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ঢেলে সাঁজাতে যাচ্ছে। যার আওতায় উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিশুর আনুষ্ঠানিক মূল্যায়ন বা চূড়ান্ত পরীক্ষা নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে। তার সাথে বর্তমানে চালু থাকা পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাবলিক বা সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করে শুধুমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ে দশম শ্রেণীর শিক্ষা শেষে (এসএসসি) পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা আনুষ্ঠানিক পাবলিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.