--- বিজ্ঞাপন ---

ফ্রান্সের সহায়তায় ভারতের যুদ্ধবিমান আধুনিক ও শক্তিশালী করা হচ্ছে

0

ভারতের বিমান বাহিনী তাদের মিরেজ-২০০০ এয়ার ফ্লীটকে আরো আধুনিক এবং শক্তিশালী করে গড়ের তুলতে ফ্রান্স থেকে নতুন করে ২৪টি পুরনো মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান সংগ্রহ করতে যাচ্ছে। মুলত ভারতের এয়ার স্কোয়াডন ফ্লীটের ঘাটতি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৩৫ বছরের পুরনো মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান একেবারে নামমাত্র মূল্যে বা ফ্রীতে মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ভারতকে সরবরাহ করবে ফ্রান্স। এ নিয়ে দেশ দুটি ইতোমধ্যেই একটি চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এই ২৪টি মিরেজ-২০০০ এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ২৭ মিলিয়ন ইউরো বা ৩০ মিলিয়ন ডলার। এই পুরনো সিরিজের মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমানগুলো ফ্রান্সের বিমান বাহিনী দীর্ঘদিন ব্যবহার করে অবসরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। তবে প্রকাশ থাকে যে, ফ্রান্স তার শত্রুভাবাপন্ন দেশে আপদকালীন সময়ে পারমাণবিক অস্ত্র হামলা চালানোর স্বার্থে কমপক্ষে ৭৫টি হাইলী আপগ্রেডেড মিরেজ-২০০০এন সিরিজের যুদ্ধবিমান সারা দেশে মোতায়েন করে রেখেছে।

এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে যে, ২৪টি মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের মধ্যে ৫টি সম্পূর্ণভাবে এয়ার কমব্যাট মিশনের জন্য (ফ্লাইট কন্ডিশান) শতভাগ প্রস্তুত রয়েছে। ৮টি মিরেজ-২০০০ কে মেজর রিপিয়ার এণ্ড আপগ্রেডিং করে আগামী ২ বছরের মধ্যে অন ফ্লাইট কন্ডিশনে আনা সম্ভব। যা কিনা পরবর্তী এক দশক ভারতের বিমান বাহিনীতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সার্ভিস দিতে পারবে বলে মনে করা হয়। তাছাড়া অবশিষ্ট্য ১১টি মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমানগুলোকে পার্ট বাই পার্ট খুলে নিয়ে এর গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ এবং ডিভাইস ভারতের বিমান বাহিনীতে আগে থেকে সার্ভিসে থাকা ৪৯টি মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের রুটিন মাফিক আপগ্রেডিং, রিপিয়ার এণ্ড মেইন্টেনেন্সের জন্য ব্যবহার করা হবে।

ফ্রান্সের ড্যাসাল্ট এভিয়েশন কর্পোরেশন ১৯৮৪ সালের জুলাই মাসে মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ফ্রান্সের বিমান বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে এটিকে প্রথম সার্ভিসে আনে। ২০০৭ সালের এর প্রডাকশন লাইন চূড়ান্তভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে আশির দশকে রাজিব গান্ধী সরকারের আমলে পাকিস্তানের এফ-১৬ জেট ফাইটারের যোগ্য প্রতিদ্বন্দী হিসেবে ১৯৮৫ সালের ২৯শে জুন প্রথম মাত্র ৭টি সুপারসনিক ২.২ ম্যাক গতির গতির মিরেজ-২০০০এইচ সিরিজের যুদ্ধবিমান সার্ভিসে আসার মাধ্যমে ফ্রান্সের বাহিরে এই যুদ্ধবিমানের প্রথম কোন আন্তর্জাতিক ক্রেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ভারত। ভারতের বিমান বাহিনীতে এখনো পর্যন্ত মোট ৪৯টি মিরেজ-২০০০ জেট ফাইটার অপারেশনাল রয়েছে। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ২০১৯ সালে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি আস্তানায় বিমান হামলায় বেশ সফলতার সাথেই ভারত তাদের এয়ার ফ্লীটের মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে।

সারা বিশ্বে এখনো পর্যন্ত মিরেজ-২০০০ সি/ডি/এন/বি সিরিজের ফ্রান্স মোট ৩১৫টি, ভারত ৪৯টি এইচ/টিএইচ সিরজের, সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬৭টি, ব্রাজিল ১২টি, পেরু ১২টি, তাইওয়ান ৬০টি, মিশর ২০টি এবং গ্রীস ৪৪ যুদ্ধবিমান এখনো সার্ভিসে রেখেছে। তবে কাতার তার এয়ার ফ্লীটে থাকা ১২টি মিরেজ-২০০০ইডিএ/ডিডিএ সিরিজের যুদ্ধবিমান মাত্র কয়েক বছর আগে ফ্রান্স থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে আধুনিকায়ন করে নেয়। তবে বর্তমানে তাদের বিমান বহরে নতুন প্রজন্মের প্রায় ৯৬টি (এফ-১৫, রাফায়েল এবং ইউরোফাইটার তাইফুন) যুদ্ধবিমান পর্যায়ক্রমে আসতে থাকায় বিমান বহরে থাকা পুরনো  মিরেজ-২০০০ যুদ্ধবিমানগুলো অবসরে পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতারের আল থানি সরকার।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.