--- বিজ্ঞাপন ---

রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন

0

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইউক্রেন সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে রাশিয়ার পুতিন সামরিক বাহিনীর প্রায় লক্ষাধিক সেনা, হাজার হাজার ট্যাংক, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং ভারী সামরিক যান মোতায়েন সম্পন্ন করেছে। রাশিয়া যে কোন মুহুর্তে ইউক্রেনে ভয়াবহ সামরিক আগ্রাসন বা হামলা শুরু করতে পারে বলে প্রবল আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো এবং তার ন্যাটো জোট। তবে যে কোন মূল্যে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন রুখে দিতে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, তুরস্ক এবং কানাডার মতো দেশগুলো রাশিয়ার প্রবল আপত্তি উপেক্ষা করে এখন এক রকম প্রকাশ্যেই ইউক্রেনে ব্যাপকভাবে অস্ত্র ও সামরিক সাজ সরঞ্জাম পাঠাতে শুরু করে দিয়েছে।
এদিকে আমেরিকার গ্রীন সিগন্যাল পেয়ে যুক্তরাজ্য কিন্তু আকাশ পথে জার্মানির সীমা এড়িয়ে শতাধিক স্বল্প পাল্লার অত্যাধুনিক জ্যাভলিন এন্টি- ট্যাংক মিসাইল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিক্রেট ডিফেন্স ডিভাইস ইউক্রেনে পাঠিয়েছে। এদিকে তুরস্ক থেকে ইতোমধ্যেই শতাধিক কমব্যাট, রিকর্নিসেন্স এন্ড স্পাই ড্রোন সংগ্রহ করেছে ইউক্রেন। যা কিনা ইউক্রেনকে যুদ্ধের ময়দানে আকাশ পথে নিশ্চিতভাবেই কৌশলগত সুবিধা দিবে এবং রাশিয়ার সামরিক বহরের জন্য একটা বড় ধরনের বিপর্যয় বা ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিতে পারে।
তবে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্য দেশ জার্মানি কিন্তু রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ময়দানে সরাসরি অবস্থান নিতে এবং ইউক্রেনে সামরিক সহায়তায় অংশ নিতে অস্বীকার করে আসছে। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, জার্মান কোন অবস্থাতেই ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ করবে না। যদিও অস্বীকৃতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য জার্মানি এখন তার ইউরোপীয় মিত্র ও তার ন্যাটো জোটের কাছ থেকে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে।
ইউক্রেনে যে কোন অজুহাতে সামরিক আগ্রাসন শুরু করলে রাশিয়ার ওপর এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০২১ সালের শুরুতে শপথ নেওয়ার এক বছর পূর্তিতে এক ভাষণে রাশিয়াকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের দিকে আর এক পাও না বাড়াতে সতর্ক করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও।
মার্কিন বাইডেন প্রশাসন ২০২২ সালের নতুন সামরিক বাজেটে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার জন্য ২০০ মিলিয়ন ডলারের এক বিশেষ প্রতিরক্ষা সহায়তা ফান্ড বরাদ্দ দিয়েছে এবং রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন চালালে প্রয়োজনে যে কোন আপদকালীন মুহুর্তে ইউক্রেনকে বড় ধরনের সামরিক সহায়তার পাশাপাশি ট্যাংক ও ভারী অস্ত্র সরবরাহের স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে আমেরিকার বাইডেন সরকার।
অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য ভয়াবহ যুদ্ধ কিংবা সামরিক আগ্রাসনের কথা মাথায় রেখে ইউক্রেনের পশ্চিমা পন্থী সরকার সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সামরিক সাজ সরঞ্জাম ক্রয় বা সংগ্রহ করে যাচ্ছে। আর এই সামরিক কেনাকাটার তালিকায় রয়েছে ফাস্ট লাইট এ্যাটাক কমব্যাট এণ্ড স্পাই ড্রোন, সারফেস টু এয়ার মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম, যুদ্ধের ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম, জ্যামার, রাডার এবং সাইবার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রয়েছে। এছাড়া ইউক্রেন ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপণযোগ্য ব্যালেস্টিক এবং ক্রুজ মিসাইল ক্রয়ের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করছে। যেগুলো একই সাথে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তাই আগে ২০১৩/১৪ সালে কৌশলে ক্রিমিয়া দখলের মতো বর্তমানে ইউক্রেনে সামরিক হামলা করাটা রাশিয়ার জন্য মোটেও সহজ কিছু যে হবে না তা কিন্তু এক রকম নিশ্চিত বলা চলে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.