--- বিজ্ঞাপন ---

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে তুরস্কের তৈরি ড্রোন

0

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে তুরস্কের তৈরি অত্যাধুনিক বায়রাক্তার টিবি-২ লাইট কমব্যাট ড্রোন (ইউসিএভি)। ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান সম্প্রতি গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশ তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি বায়রাক্তার টিবি-২ কমব্যাট ড্রোন (ইউসিএভি) কেনার চুক্তি সম্পন্ন করেছে। তবে মোট কতটি ইউনিট ক্রয় বা সংগ্রহ করা হবে তা এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

জানা গেছে, বর্তমানে সময়ে যুদ্ধক্ষেত্রে অত্যন্ত সফলতার সাথে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে তার্কিস ড্রোন এভিয়েশন জায়ান্ট বায়কার কোম্পানির তৈরি বায়রাক্তার টিবি-২ লাইট কমব্যাট ড্রোন (ইউসিএভি)। মুলত ২০২০ সালের শেষের দিকে নাগার্নো কারাবাখ যুদ্ধে আর্মেনিয়ার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, এমএলআরএস সিস্টেম, বিভিন্ন সামরিক যান ধ্বংস করে বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনার শীর্ষে আসে বায়রাক্তার টিবি-২ লাইট কমব্যাট ড্রোন। সিরিয়া, ইরাক এবং লিবিয়ায় সফলতার সাথে ব্যবহারের পর অতি সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক যান, ট্যাংক এবং আর্টিলারী সিস্টেম ধ্বংসে সরাসরি ব্যবহার করা হয়েছে এই কালজয়ী কমব্যাট ড্রোনটি।

সূত্র মতে, তুরস্ক বিগত এক যুগ থেকে তাদের উচ্চ প্রযুক্তির ড্রোন (ইউসিএভি) উন্নয়ন এবং ডিজাইনে কাজ করে যাচ্ছে। তুরস্কের বায়কার ড্রোন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে বায়রাক্তার টিবি-২ কমব্যাট ড্রোনের (ইউসিএভি) প্রথম ফ্লাইট টেস্ট সম্পন্ন করে। তাছাড়া দেশটির সামরিক বাহিনী ২০১৫ সাল থেকেই এই জাতীয় ড্রোন কার্যকরভাবে ব্যাবহার করে আসছে। ২০১৪ সালে প্রথম ব্যাচে ৬টি এবং ২০১৫ সালে দ্বিতীয় ব্যাচে ৬টি এই জাতীয় কমব্যাট ড্রোন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে বায়রাক্তার টিবি-২ কমব্যাট ড্রোনের যাত্রা শুরু করে তুরস্ক। বর্তমানে তুরস্কের সেনাবাহিনী ১১০টি, নৌবাহিনী ১০টি জেনারেল ডাইরেক্টরেট অব সিকিউরিটি ৬টি এবং জেন্ডারমেরিই জেনারেল কমাণ্ড মোট ১৮টি ইউনিট এই জাতীয় লাইট কমব্যাট ড্রোন অপারেট করছে।

বর্তমানে তুরস্কের পাশাপাশি সীমিত পরিসরে হলেও বিশ্বের মোট ১২টি দেশ এই অত্যাধুনিক বায়রাক্তার টিবি-২ কমব্যাট ড্রোন (ইউসিএভি) অপারেট করছে। তাছাড়া নতুন করে ইরাক ৮টি এবং পোল্যান্ড ২৪টি এই জাতীয় লাইট কমব্যাট ড্রোন ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরী, ওমান এবং কাজাখাস্তানসহ মোট ১০টি দেশ এই কমব্যাট ড্রোন ক্রয়ের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্কের সাথে। এটি গত ২০২১ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত সারা বিশ্বজুড়ে মোট ৪ লক্ষ ফ্লাইট আওয়ার উড্ডয়ন সম্পন্ন করে। এর প্রতিটি ইউনিট কস্ট ৬ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হতে পারে। তবে ২টি গ্রাউণ্ড/কমাণ্ড স্টেশনসহ ৬টি টিবি-২ কমব্যাট ড্রোন, প্রশিক্ষণ, লজিস্টিক সাপোর্ট এবং ওয়েপন্স প্যাকেজসহ আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ৮০-১০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। তুরস্কের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি বায়রাক্তার টিবি-২ ড্রোন হচ্ছে একটি এডভান্স মিডিয়াম এল্টিটিউট লং এন্ডিউরেন্স (এমএএলই) কমব্যাট ড্রোন (ইউসিএভি)। যা কিনা একাধারে ইন্টালিজেন্স, সার্ভেলেন্স, রিকর্নিয়েন্স এবং তার পাশাপাশি শত্রু সীমানায় সরাসরি কমব্যাট বা এট্যাক মিশনে পরিচালনা করার বিশেষ উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ফিট উচ্চতায় একাধারে ২৭ ঘন্টা পর্যন্ত কমব্যাট মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম এবং এর গতি প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ২২০ কিলোমিটার। তুরস্কের বায়কার কোম্পানি এ পর্যন্ত মোট প্রায় ৩২০টি টিবি-২ কমব্যাট ড্রোন তৈরি করেছে। এর পেলোড ক্ষমতা অনেকটা সীমিত হলেও এটি ১৫০ কেজি ওজন পর্যন্ত অস্ত্র ও ৪টি সিরিট মিসাইল বহন করতে পারে। এই ড্রোনের ৪টি হার্ড পয়েন্টে এন্টি-ট্যাংক এণ্ড এন্টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মিসাইল, এল-ইউএমটিএএস, এমএএম-সি/এল প্রেসিসন গাইডেড মিউনিশন, রকেটসান সিরিট ৭০ এমএম মিসাইল সিস্টেমসহ গাইডেড এণ্ড আন-গাইডেড রকেট ও মিউনিশন ইনস্টল করা যায়।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.