--- বিজ্ঞাপন ---

খাদ্যশস্য উৎপাদনে বড় ধরণের সাফল্য ভারতের

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

বলা হয়ে থাকে যে, ভারতের কাছে বর্তমানে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে তা দিয়ে সারা বিশ্বের সকল মানুষের ৬ মাস খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তবে এই কথাটি কতটুকু সঠিক তা বলতে না পারলেও বাস্তবে ভারত কিন্তু খাদ্যশস্য উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় বড় ধরণের সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষ করে দীর্ঘ মেয়াদী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের উত্তাপে বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়লেও তাতে আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতের ব্যাপক মাত্রায় খাদ্যশষ্য উৎপাদন ও রপ্তানি কৌশল। বৈশ্বিক মহামন্দার মধ্যে সংকটময় বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন এবং রপ্তানিতে বর্তমানে এক অতি সম্ভবনাময় ও গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ভারত।

ভারতের সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সারা বিশ্বে ভারত অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ৫০.২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের কৃষি পন্য ও খাদ্য সারা বিশ্বে রপ্তানি করে। যেখানে ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট কৃষি পন্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল কিনা ৪১.৮৭ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরের মার্চ মাস শেষে ভারত মোট প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শুধু কৃষিজাত পন্য ও খাদ্য সারা বিশ্বে রপ্তানি করতে পারবে বলে প্রত্যাশা করে দেশটি। যদিও অবশ্য আসলে গত ২০২২ সালে ভারত খাদ্য রপ্তানিসহ সারাবিশ্বে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মোট পন্য রপ্তানি করেছিল।

ভারত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৭.৮৫ মিলিয়ন টন গম রপ্তানি করলেও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের উত্তাপে বৈশ্বিক খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়ায় ভারত চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মার্চ মাস পর্যন্ত মোট প্রায় ১২ থেকে ১৫ মিলিয়ন টন গম রপ্তানি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রতি টন গমের রপ্তানি মূল্য গড়ে ৫৫০ ডলার হিসেব করলে ২০২৩ সালের মার্চ মাস শেষে ভারত শুধু ৮.২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের গম সারা বিশ্বে রপ্তানি করতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ভারত সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে ভারতের চিনি রপ্তানির পরিমাণ ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে ১০৯.৮ লাখ টন চিনি রপ্তানি করেছে দেশটি। এর মাধ্যমে একমাত্র ব্রাজিলের পর বিশ্বে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ চিনি রপ্তানিকার দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে ভারত। তাছাড়া ভারত ২০২১ সালে রেকর্ড পরিমাণ ২১.৫ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে সার বিশ্বে। তবে অল ইন্ডিয়া সুগার ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন (এআইএসটিএ) এর তথ্যমতে, দেশের অভ্যন্তরে চীনের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি ২০২২-২৩ বিপনন অর্থবছরের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৭.৮৩ লাখ টন চিনি রপ্তানি করেছে ভারত। যার শীর্ষ ক্রেতা ছিল বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া।

এদিকে ভারতের আগ্রিকালচারাল এন্ড প্রসেস ফুড প্রডাকটস এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট অথিউরিটি (এপিইডিএ) এর দেয়া তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিজাত এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩.৬ বিলিয়ন ডলার। তবে দেশটি চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসেই (ডিসেম্বর/২২ পর্যন্ত) ১৯.৬৯৪ বিলিয়ন ডলারের দেশীয় কৃষিজাত এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সারাবিশ্বে রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে। যা একটি মাইলফলক অর্জন হিসেবে দেখছে ভারতের সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.