সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#
২০২০ সালের করোনা মহামারি এবং ২০২২ সাল থেকে চলমান ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহামন্দার মুখেও সারা বিশ্বের অতি ধনী বা বিলিওনিয়ারদের আয়ে খুব একটা ভাটা পড়েনি। ইউকীপিডিয়ার দেয়া তথ্য মতে, বর্তমানে সারা বিশ্বে মোট ২,৬৪০ জন অতি ধনী বা বিলিওনিয়ার রয়েছেন। যাদের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১২.৩ ট্রিলিয়ন ডলার। যদিও ২০২২ সাল অপেক্ষা ২০২৩ সালে এসে অতি ধনীদের সংখ্যা ২৮ জন কমে গেছে এবং তার পাশাপাশি তাদের মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার।
চলতি ২০২৩ সালের ২৮শে মে ‘ব্লুমবার্গ’ বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ৫০০ জন অতি ধনী ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে। তাদের প্রকাশিত তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ধনী ব্যক্তি বা ধনকুবের হলেন ফ্রান্সের নাগরিক ও এলভিএমএইচের সিইও বার্নার্ড আর্নল্ট। ৭৪ বছর বয়সী বার্নার্ড আর্নাল্টের কাছে গচ্ছিত নীট সম্পদের পরিমাণ বর্তমানে ১৯৩ বিলিয়ন ডলার। আর এখন তিনিই হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি।
বার্নার্ড আর্নাল্টের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানীয় ধনী ব্যাক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ইলন মাস্ক। মূলত স্পেস-এক্স ও টেসলা কোম্পানির সিইও ইলন মাস্কের বর্তমান নীট সম্পদের পরিমাণ ১৮৫ বিলিয়ন ডলার। তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজসের সম্পদের পরিমাণ ১৪৪ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া ধনীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের নীট সম্পদ ১২৬ বিলিয়ন ডলার।
বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় ধনীদের মধ্যে ৫ম স্থানে থাকা ওরাকলের সহ প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ল্যারি এলিশনের মোট সম্পদের পরিমাণ ১১৬ বিলিয়ন ডলার। এই তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা মাইক্রোসফটের সাবেক সিইও স্টিভ বলমারের সম্পদের পরিমাণ ১১৫ বিলিয়ন ডলার এবং ৭ম স্থানে থেকে গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের সম্পদের পরিমাণ ১১২ বিলিয়ন ডলার। ৮ম স্থানে থেকে বার্কশেয়ার হেথাওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেটের সম্পদ ১১২ বিলিয়ন ডলার ও ৯ম স্থানে উঠে এসে গুগলের সহ প্রতিষ্ঠাতা সার্জেই ব্রিনের সম্পদের পরিমাণ ১০৭ বিলিয়ন ডলার।
তাছাড়া বর্তমানে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ার জনক ফেসবুকের সহ প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জুকারবার্গের নীট সম্পদের পরিমাণ ৯৫.৫ বিলিয়ন ডলারের নীট সম্পদ অর্জন করে ১০ম স্থানে রয়েছে। ১১ তম স্থানে আমেরিকা মোভিলের প্রতিষ্ঠাতা কার্লোস স্লিম হ্যালুর নীট সম্পদের পরিমাণ ৯২.২ বিলিয়ন ডলার। ১২ তম স্থানে এল’ওরিয়ালের উত্তরাধিকারী ফ্রাংকোস বেটেনকোর্ট মেয়ার্সের সম্পদ ৮৮.১ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া ভারতের রিলায়েন্স গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানির নীট সম্পদের পরিমাণ ৮৬.১ বিলিয়ন ডলার এবং তিনি অতি ধনীদের তালিকায় ১৩ তম স্থানে স্থানে রয়েছেন।
স্পেনের ইনডিটেক্সের প্রতিষ্ঠাতা অ্যামেনসিও ওর্তেগার নীট সম্পদ ৬৭.৮ বিলিয়ন ডলার। আমেরিকান প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের উত্তরাধিকারী জিম ওয়াল্টনের ৬৬.৬ বিলিয়ন ডলার, রব ওয়াল্টনের ৬৫.০ বিলিয়ন ডলার ও এ্যালিস ওয়াল্টনের ৬৪.০ বিলিয়ন ডলারের নীট সম্পদ রয়েছে বলে দেখানো হয়েছে। আবার ভারতের আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানী অতি ধনীদের তালিকায় ১৮ তম স্থানে থেকে ৬২.৯ বিলিয়ন ডলারের নীট সম্পদ অর্জন করেছেন।
চীনের নংগফু স্প্রিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ঝংগ শানশানে ৬১.৫ বিলিয়ন ডলার সম্পদ গড়ে ১৯ তম স্থানে রয়েছেন। তাছাড়া বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ২০ তম স্থানে থাকা আমেরিকার নাগরিক জ্যাকেলিন বাডগার মার্সের নীট সম্পদের পরিমাণ হচ্ছে ৬০.৭ বিলিয়ন ডলার।
আসলে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে শীর্ষ স্থানীয় ৫০০ জন অতি ধনীদের তালিকায় ভারতের মোট ২২ জনের নাম রয়েছে। মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানির পাশাপাশি ভারতের অন্যান্য শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে সাপুর মিস্ত্রী সম্পদের পরিমাণ ২৯.৪ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া শিব নাদার ২৬.৪ বিলিয়ন ডলার, আজিম প্রেমজি ২৩.৯ বিলিয়ন ডলার, লক্ষী মিত্তাল ১৮.০ বিলিয়ন ডলার, সাইরাস পুনাওয়ালা ১৭.৩ এবং রাধাকৃষ্ণ দামানী ১৬.৯ বিলিয়ন ডলারের নীট সম্পদ গড়ে তালিকায় নিজের যোগ্য স্থান করে নিয়েছে।##