কাতারে বন্ধ হয়ে গেছে জনশক্তি রফতানি

দক্ষ কর্মীর অভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে জনশক্তি রফতানির বাজারটি বন্ধ হয়ে গেছে। ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের জন্য ১৪টি স্টেডিয়াম ও বেশ কয়েকটি হোটেল মোটেল নির্মাণ কাজের জন্য বাজারটিতে এক সময় বিপুল সংখ্যক কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে কাতারের বাজারে কোন কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। বাংলাদেশের কর্মীরা অদক্ষ বলে কাতার কর্তৃপক্ষ অন্য ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে কর্মী নিয়োগ করছে। যদিও কাতার কর্তৃপক্ষ চায়, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে। কিন্তু দেশটিতে এখন যে ধরনের কর্মীর প্রয়োজন সেই ধরনের দক্ষ কর্মীর জোগান দিতে পারছে না বাংলাদেশ। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাতারের শ্রমবাজার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শ্রম সম্পর্ক জোরদার করার জন্য কয়েক দফা উদ্যোগ নেয়া হয়। দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর বিষয়ে কাতার কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। কিন্তু এতে কোন ফল হয়নি।

কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানিয়েছে, কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর দেশটি অর্থনৈতিকভাবে একটা সমস্যায় পড়ে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তাদের বেশ কয়েক বছর সময় লেগেছে।এরপর থেকে দেশটিতে কর্মী কমতে শুরু করেছে অবরোধের চেয়ে বড় কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, কাতারে নির্মাণাধীন অধিকাংশ প্রকল্প শেষ হওয়ার পথে রয়েছে। এখন নতুন করে তারা অদক্ষ কর্মী না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে দেশটিতে ১৪টি স্টেডিয়ামসহ হোটেল মোটেল নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। বর্তমানে স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে। এ কাজে দক্ষ কর্মী ছাড়া অন্য কোন কর্মীর প্রয়োজন নেই বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ কর্মী নিয়োগ অর্ধেকে নামিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রায় বন্ধ করেই দিয়েছে। যদিও দূতাবাসের পক্ষ থেকে কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ আলোচনা করা হচ্ছে, দেশটিতে যাতে বাংলাদেশী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

যদিও দূতাবাসের প্রতিবেদনে অবরোধের বিষয়টি প্রাধান্য পায়নি। পেয়েছে-কাতারে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ নিয়ে। দেশটিতে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার জন্য নির্মাণ কাজের মহাযজ্ঞ শেষ পর্যায়ের কথাটি গুরুত্বের সঙ্গে বলা হয়েছে। নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেলে দেশটিতে খুব বেশি কর্মীর প্রয়োজন নেই। কাতারে যেসব নির্মাণাধীন বৃহৎ প্রকল্প রয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই এখন শেষের পথে। ফলে এসব প্রকল্পে এত দিন অদক্ষ জনশক্তির চাহিদা থাকলেও এখন শেষ হওয়ার পর এসব প্রকল্পের কারিগরি কাজ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি সরবরাহে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ মনে করছেন। সূত্রঃ কাতারের বাংলা খবর (২৯.১২.১৯)

কাতারজনশক্তিমধ্যপ্রাচ্যে
Comments (০)
Add Comment