প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আপোষহীন… এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরশেনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশন অঙ্গীরকার বন্ধ। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরণের সহযেগিতা করা হচ্ছে। নির্বাচনে সরকার কোন ধরণের হস্তক্ষেপ করছে না। সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য বদ্ধ পরিকর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আপোষহীন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাউজানে নোয়াজিষপুর অদুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নব-নির্মিত ১৫ নম্বর নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স শুভ উদ্বোধন-মিলন মেলায় তিনি এসব কথা বলেন । নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.সরোয়ার্দী সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, রাউজান উপজেলার চেয়ারম্যান এ কে এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, স্থানীয় সরকার প্রকৌকলী অধিদপ্তর প্রধান প্রকৌশলী সুশংকর চন্দ্র আচা ও স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম বিভাগ উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভিন তিবরীজিসহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কথা উঠলেই এক সময় ‘বটমলেস বাস্কেটের’ তুলনা টানা হতো। শেখ হাসিনা সরকার দেশের এই দুর্নামটি শুধু দূর করেননি, তার অর্থনীতির উন্নয়নের চাকা ঘুরিয়ে দিয়ে সমালোচক দেশগুলোরও প্রশংসা অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংকও এখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে। বাংলাদেশ এখন বহির্বিশ্বে একটি আলোচিত দেশ। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ২ হাজার ডলার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশগুলোর মতো উচ্চ আয়ের দেশ হবে তাতে সন্দেহ নেই। ২০০১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে ৩৩ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। তখনকার বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা সংসদে বলেছিলেন, আমাদের সরকারের আমলে কোন ঘাটতি ছিলনা। অথচ তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান জবাবে বলেছিলেন, খাদ্য ঘাটতি না থাকলে বিদেশী অনুদান পাওয়া যায় না। তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ৩০ লক্ষ মানুষ ভিক্ষা করে চলার জন্য শহীদ হয়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্ন দেখেছেন একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার। এজন্য তিনি সারাজীবন লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় অল্প সময়ের কারণে পারেননি অনেক কিছু করতে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ উন্নয়ন যাত্রা কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। স্থানীয় সরকার উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, দেশজুড়ে নানা ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রামবাংলার যোগাযোগ ব্যবস্থা, শহর এলাকার সড়ক, ফুটপাত, ড্রেনেজ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন কার্যক্রমে বড় অংশ বাস্তবায়ন করে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন, সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় ভূমিকা পালন করছে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়। তিনি আরো বলেন, জাতির জনককে এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করছে বলে নয় মাসে দেশ স্বাধীন হয়েছে। খাদ্য খাটতি, বিদ্যুৎ সংকট দূর হয়েছে। রাষ্ট্র যখন সফল হবে তখন যখন রাষ্ট্রের নিজ নিজ অধিকারর থেকে বঞ্চিত হবেন না। এ ক্ষেত্রে নেতৃত্বে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। শিল্পয়ন ও ঘরের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মানও বেড়েছে।
মো.তাজুল ইসলাম বলেন, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় শেখ হাসিনা সবসময়ই আপোষহীন। ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনায় দায়িত্ব নিয়ে তার সরকার ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। শত বাধা-বিপত্তি এবং হত্যার হুমকিসহ নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা ভাত-ভোট এবং সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের জন্য অবিচল থেকে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ অর্জন করেছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা। বাংলাদেশ পেয়েছে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা। শেখ হাসিনার অপরিসীম আত্মত্যাগের ফলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে আর্থ-সামাজিক খাতে দেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানবাধিকারের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দূরদর্শিতার আজ দেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকা স্থান করে নিয়েছে। সামনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মধ্যে আয়ের দেশের তালিকায় স্থান করে নিবে। বঙ্গবন্ধু পাঠাগার করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুদান দেয়া হবে। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডে অফিস করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা করা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হক বাবুলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিশু পার্কের জায়গায় এবং অবকাঠামো তৈরি করে দেয়া হবে বলেন মন্ত্রী বলেন।
রেলপদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও রাউজানের সংসদ সদস্য এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের রাউজান হরতাল,চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস মুক্ত উপজেলা। এখানে সন্ত্রাসীদের কোন স্থান নেই। রাউজানে ৩ শত বিদ্যালয়ে ১ লক্ষ শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে ১৮২ টি বিদ্যালয়ে ২০ হাজার দুপুরে টিফিন প্রদান করা হয়। ডেঙ্গু প্রকোপ দেখা দেয়ার প্রত্যেক ইউনিয়নে মশা নিধণের জন্য মেশিন ক্রয় করা হয়েছিল। রাউজান উপজেলা ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া মুক্ত উপজেলা।
পরে তিনি গ্রামীন বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের আধুনিক মার্কেট নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এর জন্য ব্যয় হবে প্রায় ৬ কোটি টাকা।
উপজেলা চেয়ারম্যানদের সম্মেলন উদ্বোধন
এদিকে শনিবার বিকেলে নগরীর ষোলশহর এলজিআরডি মিলনায়তনে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগিয় কমিটি আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সম্মেলনে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। এতে সভাপত্বি করেন রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দর চৌধুরী বাবুল। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার সচিব হেলালউদ্দিন আহমেদ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সুশংকর চন্দ্র আচার্য, এ্যাসোসিয়শনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ হাওরাদার, এ্যাসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিরু প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের তৃনমূল নেতৃবৃন্দ সরকারের উন্নয়নের অংশিদার। স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাপনাগুলো যদি শক্তিশালী করা না যায় তাহলে উন্নত বাংলাদেশ গড়া যাবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিকে মনোনিবেশ করেছন। তিনি উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের বক্তব্য মনযোগ দিয়ে শুনেন এবং সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। মন্ত্রী সবকিছু লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ে পেশ করার জন্য উপস্থিত উপজেলা চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেন।#### ১৮.১.২০২০

Comments (০)
Add Comment