মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশ তুরস্কের উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারির পর এর ফলাফল হিতে বিপরীত হতে পারে। নিষেধাজ্ঞার ঘোষণার পরপরই দেশটির প্রেসিডেন্ট রেজিব তাইয়েপ এরদোয়ান যে কোন মূল্যে তুরস্কের সমরাস্ত্র শিল্পকে পরনির্ভরশীলতা মুক্ত করে সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ করার ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র মিত্র দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞার পর থেকে তুরস্ক বড় বড় অস্ত্র রফতানির অর্ডার পেতে শুরু করেছে। বড় অর্ডার এসেছে আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া ও বলকান দেশ ইউক্রেন থেকে। আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়া ৮ কোটি ডলার মূল্যের তুরস্কের লেটেস্ট মডেলের ‘আনকা’সামরিক ড্রোন ক্রয় করার চুক্তি করেছে।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুরস্কের সমরাস্ত্র শিল্পে বড় কোন প্রভাব ফেলবেনা। বরং তুরস্ক দেশীয় অস্ত্র নির্মাতাদের মাধ্যমে নিজ সমরাস্ত্র শিল্পকে আরও সুসংহত করতে প্রয়াসী হবে। অতীতে যেমনটি দেখা গেছে ইরান ও পাকিস্তানের বেলায়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে ইরান তার পরমাণু কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, ক্ষেপণাস্ত্রসহ নিত্য নতুন অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করে চলেছে। একইভাবে পাকিস্তানের বেলায়ও মার্কিন অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ফল একেবারেই উল্টো হয়েছে। গোপণে পরমাণু বোমা তৈরী করছে এই অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র এফ-১৬ জঙ্গী বিমানসহ আধুনিক সব অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থনৈতিক সাহায্য সহায়তা বন্ধ রেখেছিল বিভিন্ন সময়ে। এতে দেখা গেছে, ফলাফল হয়েছে উল্টো। পাকিস্তান প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে পরমাণু বোমা বানাতে সক্ষমতা অর্জন করেছে এবং মার্কিন এফ-১৬ বিমানের চাইতেও কোন কোন ক্ষেত্রে আরও আধুনিক জঙ্গী বিমান জেএফ-১৭ থান্ডার ফাইটার তৈরী করেছে।তুরস্কের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হেবাতুর্ক গত রবিবার জানিয়েছে, শীর্ষস্থানীয় তুর্কি প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থা তুর্কি অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) তিউনিসিয়ায় তার লেটেস্ট মডেলের দীর্ঘসময় আকাশে উড্ডয়নে স্ক্ষম প্রথম ‘আনকা‘র (ইউএভি) চালান রফতানি করতে চলেছে।
তুরস্কের সংবাদপত্র হেবাতুর্ক জানিয়েছে, টিএআই তিউনিসিয়ার বিমানবাহিনী কমান্ডের কাছে তিনটি আনকা ইউএভি এবং তিনটি গ্রাউন্ড কন্ট্রোল সিস্টেম সরবরাহ করবে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে পরের বছরগুলিতে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রায় দুই বছরের আলোচনার পরে তুর্কি ড্রোনগুলি ক্রয় করা হয়েছে। তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ২০১৯ এর শুরুতে টিএআই থেকে ইউএভিগুলি সংগ্রহের জন্য আলোচনা শুরু করে। রফতানির অর্থায়ন তুরস্কের এক্সিম ব্যাংকের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। ব্যাংকটি রফতানির জন্য তিউনিসিয়াকে ৮০ মিলিয়ন (টিএল ৬২৭.৯২ মিলিয়ন) ঋণ প্রদান করবে। এজন্য প্রায় ৫২ জন তিউনিসিয়ান পাইলট এবং রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীকে রাজধানী আঙ্কারায় টিএআই সেন্টারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে পত্রিকাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে তুরস্ক থেকে মনুষ্যবিহীন সামরিক বিমান (ইউএভি) কেনার পাশাপাশি ইউক্রেন দুই দেশের মধ্যে নতুন চুক্তির জন্য অ্যাডা-ক্লাস শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করার কথা জানিয়েছে। নৌ বাহিনীর জন্য তুরস্কের তৈরী করভেটেস শ্রেণীর যুদ্ধজাহাজ আজব সাগরে দেশটির নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করবে বলে তুর্কি প্রতিরক্ষা শিল্প কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানায় । “তুরস্ক ও ইউক্রেনের মধ্যে প্রতিরক্ষা শিল্পের