-- বিজ্ঞাপন ---

জঙ্গলযুদ্ধ এবং ড্রোন হামলায় প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি জঙ্গি মায়ানমার থেকে ঢুকেছে মণিপুরে

জঙ্গিদের নিশানায় উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা-আনন্দবাজারের প্রতিবেদন

0

জঙ্গলযুদ্ধ এবং ড্রোন হামলায় প্রশিক্ষিত ৯০০ কুকি জঙ্গি মায়ানমার থেকে ঢুকেছে মণিপুরে। শনিবার প্রকাশ্যে এমনই দাবি করলেন রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ। গোয়েন্দা সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে বলে তাঁর দাবি। আর এই রিপোর্টকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত হবে না বলেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন কুলদীপ।

সূত্রের খবর, প্রশিক্ষিত এই সব জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ নিয়ে গোয়েন্দাদের রিপোর্ট রাজ্যের সমস্ত জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ইতিমধ্যেই পাঠিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই রাজ্যের কাছে গোয়েন্দাদের রিপোর্ট এসেছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্রে প্রশিক্ষিত, ড্রোন থেকে বোমা হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট এবং জঙ্গলযুদ্ধে দক্ষ ৯০০ কুকি জঙ্গি প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার থেকে রাজ্যে প্রবেশ করেছে।

ওই সূত্রের আরও দাবি, বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে জঙ্গিরা রাজ্যে প্রবেশ করেছে। এক একটি দলে ৩০ জন জঙ্গি রয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে যে, মেইতেই প্রভাবিত গ্রামগুলিতে একাধিক হামলার ছক কষেছে তারা। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে জঙ্গি অনুপ্রবেশের এই রিপোর্টকে ১০০ শতাংশ সঠিক বলেই দাবি করেছেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘যত ক্ষণ না এই রিপোর্ট ভুল প্রামাণিত হচ্ছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই রিপোর্টকে ১০০ শতাংশ সঠিক বলেই ধরতে হবে। কারণ কোনও গোয়েন্দা রিপোর্টকে ১০০ শতাংশ সঠিক বলে ধরেই এগোতে হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে। কোনও ভাবেই বিষয়টি হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।’

জঙ্গিদের নিশানায় উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা?

সম্প্রতি এমনই আশঙ্কা নিয়ে একটি ‘উড়ো তথ্য’ এসেছে রেলপুলিশের কাছে। সেই তথ্য কে পাঠিয়েছেন, তাঁর কোনও হদিস এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তবে প্রস্তুত থাকছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। নাশকতার পরিস্থিতি তৈরি হলে, তা মোকাবিলা করতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে নড়চড়ে বসেছে কেন্দ্রও। তাদের তরফে এমন একটি সতর্কতামূলক চিঠিও পাঠানো হয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলকে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, অসমর্থিত সূত্র থেকে জানা গিয়েছে উত্তরবঙ্গে রেলের পরিকাঠামোয় জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় রেললাইনে জিআরপির সঙ্গে আরপিএফের যৌথ নজরদারি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ও ট্রেনগুলিতে প্রশিক্ষণপ্রান্ত কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালানোর কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেক স্টেশনমাস্টারকে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকুমার শর্মার সঙ্গে। ‘উড়ো চিঠি’র প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের একটি তথ্য এসে পৌঁছলেও প্রেরকের হদিস মেলেনি। তবে বিষয়টিকে যে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে, সেটিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

কপিঞ্জলকুমার বলেন, “এটিকে এ ভাবে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। উত্তরবঙ্গের স্টেশনগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট করে তোলা হচ্ছে। আরপিএফ কর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। ডগ স্কোয়াডকেও ব্যবহার করা হচ্ছে। ট্রেনগুলিতে তল্লাশি চলছে। তবে কে ওই তথ্য পাঠিয়েছেন, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও হদিস পাওয়া যায়নি।” নাশকতার আশঙ্কা নিয়ে এই উড়ো তথ্যের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল শিলিগুড়ি জিআরপির সুপার এস সিলভামুরগানের সঙ্গেও। তিনিও জানান, এই ধরনের একটি তথ্য এসেছে তাঁদের কাছে। তবে অযথা উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। রেলপুলিশের সুপার আরও বলেন, “যথেষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি।’’##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.