-- বিজ্ঞাপন ---

জাপানি ট্যুইটার কিলার তাকাহিরো শিরাইশি

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ##

জাপানে এমন ঘটনা সাধারনত আশা করে না কেউ। কারন জাপানের মানুষের সভ্যতা বিশ্বে নজিরবিহীন। সেই জাপানেও এমন বিকৃত মানুষ আছে এমনটা ভাবাও যায় না। এটা কেমন ধরনের অপরাধ তা নিয়ে জাপানে চলছে গবেষণা। কেন এ লোকটির মনে এসব বিষয় আসলো অনেক প্রশ্ন জাপানিদের মনে। ত্রিশ বছরের এক যুবক মৃত্যুরদূত হয়ে ন’জনকে খুন করেছে। আর এসব খুন হয়েছে ডিজিটাল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে।

সিরিয়াল নয়, ট্যুইটার কিলার। হত্যার জন্য কাউকে সুপারি দিত না, নিজেই হাজির হতো মৃত্যুদূত হিসেবে। বেছে বেছে টার্গেট করা হতো আত্মাঘাতী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের। আর সেই ‘শিকার’ খুঁজতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় ট্যুইটার।
মঙ্গলবার জাপানি ট্যুইটার কিলার তাকাহিরো শিরাইশি (৩০)-কে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল টোকিওর এক আদালত। বিড়াল যেমন ইঁদুর শিকার করার জন্য ওত পেতে বসে থাকে, তেমনই ট্যুইটারে ঘাপটি মেরে থাকত তাকাহিরো। কোন ব্যক্তি ট্যুইটারে আত্মহত্যার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন, বেছে বেছে তাঁদের খুঁজে নিত। তারপরেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্যের (খুন) হাত বাড়িয়ে দিত তাকাহিরো। এইভাবে ন’জনকে খুন করেছে সে। একজন বাদে তাদের প্রত্যেকেই নাবালিকা বা তরুণী। বয়স ১৫-২৬ বছরের মধ্যে।
আদালতে খুনের কথা স্বীকার করেছে তাকাহিরো। যদিও তার আইনজীবীদের আবেদন ছিল, মক্কেলকে কারাদণ্ড দেওয়া হোক। বিচারকের কাছে তাঁদের যুক্তি ছিল, নিহতরা ট্যুইটারে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে চেয়েছিলেন। আত্মহত্যায় তাঁদের সম্মতি ছিল। তাকাহিরো শুধুমাত্র তাঁদের সাহায্য করেছে। কিন্তু বিচারক জানিয়ে দেন, নিহত ন’জনের কেউ খুনের সম্মতি দেননি। এমনকী, নীরব সম্মতি পর্যন্ত দেননি। তারপরেই অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন তিনি। বিচারকের সাফ যুক্তি, ন’টি তরতাজা প্রাণ শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত গুরুতর অপরাধ।
তাকাহিরোর টার্গেট ছিল হতাশাগ্রস্ত কিশোরী বা তরুণীরা। সামাজিক মাধ্যমে কেউ আত্মহত্যার ইচ্ছা বা হতাশা প্রকাশ করলেই তাঁদের সঙ্গে ট্যুইটারে যোগাযোগ করত তাকাহিরো। তারপর তাঁদের আত্মহত্যার পরিকল্পনায় সাহায্য করার আশ্বাস দিত। বলতো, নিজেও তাঁদের সঙ্গে আত্মহত্যা করবে। সেইমতো আত্মহত্যায় ইচ্ছুক ব্যক্তিদের বাড়িতে ডেকে পাঠাত তাকাহিরো। অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে নৃশংসভাবে খুন করত সে। এইভাবে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে অন্তত ন’টি খুন করেছে তাকাহিরো। অবশেষে পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যায় সে। তারপরেই জাপানে তার নাম হয়ে যায় ‘ট্যুইটার কিলার’।
তাকাহিরোর সাজা দেখতে মঙ্গলবার টোকিওর আদালতে ভিড় জমিয়েছিলেন প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষ। তাঁদের মধ্যে নিহতদের আত্মীয়দের অনেকেই ছিলেন। বছর পঁচিশের মেয়েকে হারিয়ে আদালতে কান্নাভেজা জনৈক বাবা বলেন, এখনও মেয়ের বয়সি কাউকে দেখলেই মনে হয় আমার মেয়ে। সন্তান হারানোর যন্ত্রণা কখনও ভোলার নয়। আমার মেয়েকে ফিরিয়ে দিন। তাকাহিরো মারা গেলেও আমি ওকে ক্ষমা করতে পারব না। ফাঁসিই ওর উপযুক্ত শাস্তি।সূত্রঃ বর্তমান

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.