-- বিজ্ঞাপন ---

১৬ বছরের নিচে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করেছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার একটি কঠোর আইন প্রস্তাব করেছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এই উদ্যোগটি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বলে দাবি করেছেন। এই নতুন আইনের অধীনে, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, এবং এক্স (পূর্বে টুইটার) সহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই ও সীমিত করার দায়িত্ব নিতে হবে। আইনটি আগামী নভেম্বরে পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত হবে এবং পাশ হওয়ার এক বছরের মধ্যে কার্যকর হবে।

এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মগুলোকে বাচ্চাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারে বাধা দেওয়ার পদ্ধতি তৈরি করতে বলা হয়েছে। তবে, সমালোচকরা বলছেন, এটি কিশোরদের শিক্ষামূলক ও সহায়তামূলক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এই উদ্যোগ অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন সুরক্ষা আইনের একটি সম্প্রসারণ, যা ২০২১ সালে চালু হয়েছিল এবং বর্তমানে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করে।
ছোটদের জন্য সমাজমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিল অস্ট্রেলিয়া সরকার। ১৬ বছরের কমবয়সিরা অস্ট্রেলিয়ায় আর সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না। ফেসবুক, টিকটক, এক্স, স্ন্যাপচ্যাট, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি সব প্রচলিত সমাজমাধ্যমের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। অস্ট্রেলিয়ার সেনেটে এই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। আইন করে ছোটদের সমাজমাধ্যম ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। সমাজমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই ধরনের আইনি পদক্ষেপ বিশ্বে প্রথম। এর আগে আর কোনও দেশ এই পথে হাঁটেনি।

অস্ট্রেলিয়ার নতুন আইনে বলা হয়েছে, আগামী দিনে ১৬ বছরের কমবয়সি কাউকে সমাজমাধ্যম ব্যবহার করতে দেখা গেলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। ছোটদের অ্যাকাউন্ট খোলা নিষিদ্ধ করার দায়িত্ব সংস্থাগুলিরই। তারা তা না করতে পারলে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিন কোটি ৩০ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ নির্দিষ্ট করা হয়েছে ওই সংস্থাগুলির জন্য।

সমাজমাধ্যম ছোটদের জন্য নিষিদ্ধ করার বিল বুধবার অস্ট্রেলিয়ার সংসদের উভয়কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। সেনেটে এই বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৪টি এবং বিপক্ষে ভোট পড়েছে ১৯টি। এ ছাড়া, হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টেটিভ্‌সে এর পক্ষে ১০২টি ভোট এবং বিপক্ষে ১৩টি ভোট পড়েছে।

অস্ট্রেলিয়া সরকার জানিয়েছে, কিছু শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিটির তরফে এই বিলের বিরোধিতা করা হয়েছে। তবে দেশের ৭৭ শতাংশের বেশি মানুষ শিশুদের জন্য সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।

অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এক্সের মালিক ইলন মাস্ক আমেরিকার নতুন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি এই সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে এর আগে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর মতে, এ ভাবে পরোক্ষে অস্ট্রেলিয়া সরকার ইন্টারনেট ব্যবহারকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে।

অস্ট্রেলিয়ার মতো উন্নত দেশে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মূলত শিশুদের মানসিক ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, যা “বাস্তব ক্ষতি” করছে। বিশেষ করে সাইবার বুলিং, অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম, এবং অনলাইনে ক্ষতিকারক কনটেন্টের সহজলভ্যতা কিশোরদের মানসিক চাপ বাড়াচ্ছে।

গবেষণা অনুযায়ী, অনেক শিশু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে হতাশা, উদ্বেগ, এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবের মতো সমস্যায় পড়ছে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার মনে করে, এই মাধ্যমগুলোতে কিশোরদের প্রবেশাধিকার সীমিত করা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে এবং ক্ষতিকারক অভিজ্ঞতাগুলো এড়াতে সাহায্য করবে।

এছাড়া, অস্ট্রেলিয়া শিশুদের অনলাইনে সুরক্ষার জন্য আগেও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন অনলাইনে ভুয়া তথ্য ও গভীর ভুয়া (deepfake) কনটেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞা। এই সিদ্ধান্তটিও তারই একটি ধারাবাহিকতা। তবে, সমালোচকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত ভারসাম্যহীন হতে পারে এবং কিশোরদের উপযুক্ত ডিজিটাল শিক্ষা ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম তৈরির ক্ষেত্রে আরও কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে​।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.