--- বিজ্ঞাপন ---

কথা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রামবাসী এখন ৪ ডিসেম্বরের অপেক্ষায়

0

সময়টা ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর। জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ২৫ মিনিট বক্তব্য রেখেছিলেন। এরপর তিনি আসেন ২০১২ সালের ২৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর পর জনসভায় ভাষণ দিতে চট্টগ্রাম আসছেন। তবে তিনি তারঁ মূল্যবান কথাগুলো বলেছিলেন ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসেবে। এ সময় নির্বাচনের আগে দিয়েছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবার তিনি ১৪ বছর আগে দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখবেন। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে এরই মধ্যে প্রস্তত চট্টগ্রাম। তারঁ আগমনে চলছে উৎসব। চট্টগ্রামবাসী এখন ৪ ডিসেম্বরের অপেক্ষায়।

প্রায় ১৪ বছর আগে চট্টগ্রাম ছিল অবহেলিত এক জনপদ। একের পর এক সরকার এলেও চট্টগ্রামের দিকে নজর দেয় নি কেউ। শুধু প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছিল। সাবেক বিএনপি সরকারের আমলে চট্টগ্রামকে ঘিরে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখান বিএনপি নেতারা। কিন্ত পরবর্তিতে চট্টগ্রামবাসী শুধু ধোকাই খেয়েছে। উন্নয়ন তো দুরের কথা, বিদ্যুৎ ও পানির দাবিতে প্রায় প্রতিদিন ছিল মানুষের মিছিল। চট্টগ্রামের মানুষ বিএনপি নেতাদের কথা বিশ্বাস করে আসনও কম দেননি। চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাদের মধ্যে প্রভাবশালী মন্ত্রীও হয়েছেন অনেকে। কিন্ত নিজেদের উন্নতি হলেও চট্টগ্রামের উন্নয়ন হয়নি। তাই মানুষ ছিল হতাশ। এরই মধ্যে ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা লালদীঘির জনসভায় চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। এ সময় বিশাল জনসমুদ্রে শেখ হাসিনা বলেছিলেন,‘গত জোট সরকার আমলে দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে চট্টগ্রামের কোনো উন্নয়ন হয়নি। আজ থেকে চট্টগ্রামের সব উন্নয়নের দায়িত্ব আমি নিজে নিয়েছি। মহাজোট ক্ষমতায় গেলে চট্টগ্রাম হবে সত্যিকারের বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন, পানি সমস্যার সমাধান, কর্ণফুলীতে টানেল নির্মাণসহ চট্টগ্রামকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যা যা প্রয়োজন সবই করা হবে। আপনার ভোট দিয়ে মহাজোটকে জয়যুক্ত করুন।’

শেখ হাসিনা যখন ২০০৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর বক্তব্য রাখছিলেন তখন চট্টগ্রামের সার্বিক অবস্থা ছিল আসলেই করুন। কারন বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলের বছরগুলোতে আশানুরূপ কোন বিনিয়োগ হয়নি চট্টগ্রামে। প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার অভাবে বিদেশীদের অনেকে বিনিয়োগের পরিবর্তে চট্টগ্রাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। একে একে চট্টগ্রাম থেকে চলে গেছে অনেক বহুজাতিক কোম্পানি। মূলত গ্যাস, বিদ্যুৎ ও প্রশাসনিকসহ অবকাঠামোগত নানা সুযোগ-সুবিধার অভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে পেছনে পড়ে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের উন্নয়নের সাথে জড়িত বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক), চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক), চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ বছরের পর বছর ধরে আটকে থাকে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তানা বছরের পর বছর মন্ত্রণালয়ে ফাইল নিয়ে ঘুরাঘুরি করেও কোন সুরাহা করতে পারেন নি। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহায়ক নীতিমালা প্রণয়নের ফলে সত্তর দশকের শেষার্ধে ও আশির দশকে দেশে অনেক প্রতিশ্রæতিশীল শিল্পোদ্যোক্তার আবির্ভাব ঘটেছিল চট্টগ্রামে। যারা মাঝারী আকারের অনেক রপ্তানীমুখী শিল্পোদ্যোগ গ্রহণ করে। দেশে রপ্তানীমুখী শিল্পোদ্যোগের নব জাগরণের এই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে স্থাপিত হয় দেশের একমাত্র রপ্তানী প্রক্রিয়াজাত করণ অঞ্চল। আশির দশকের শেষভাগে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা এবং নব্বই দশকের শুরুত ৭০০ মিলিয়ন ডলারের কাফকো প্রজেক্ট স্থাপনের পর বিশ^ব্যাপী বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি পড়ে চট্টগ্রামের দিকে। চট্টগ্রামের পরিচিতি ঘটে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উন্নত অঞ্চল হিসেবে। সাঙ্গুতে বিশাল সামুদ্রিক গ্যাস ফিল্ড আবিস্কারের ফলে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিশে^র দরবারে অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের উন্নয়নের পর আরো একধাপ এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম। কিন্ত পরবর্তীতে অনেকটা পরিকল্পিতভাবেই চট্টগ্রামের সব অর্জনগুলো নষ্ট হতে থাকে। ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষণা করার পর সবাই মনে করেছিল এবার চট্টগ্রামের উন্নয়ন হবে। কিন্ত পরবর্তিতে যেসব সরকার এসেছে তারা আর চট্টগ্রামের দিকে নজর দেয় নি। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রাম কাগজে কলমে রয়ে যায়। সাথে সাথে চট্টগ্রামের গৌরব দিনের পর দিন হারিয়ে যেতে থাকে।
১৯৪৭ সালে এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সমাপ্তির অব্যবহিত পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানতম এবং ব্যস্ততম বন্দরে পরিণত হয়। অত্র অঞ্চলের সামগ্রিক ব্যবসায়ীক কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চট্টগ্রামে নতুন আঙ্গিকে আত্মপ্রকাশ করে। পঞ্চাশের দশকে বন্দর ও রেল চট্টগ্রামে তথা তৎকালীন সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে ব্যবসা বাণিজ্যে গতিশীলতা আনায়নের জন্য অনেক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। এই পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় সাতটি নতুনসহ মোট নয়টি জেটি, বেশকিছু সংখ্যক পল্টুন ও মুরিং জেটি স্থাপন করা হয়। তৎকালীন পাকিস্তান আমলে চট্টগ্রামে বৃহৎ ও মাঝারি আকারের কিছু স্টীল মিলস, অয়েল রিফাইনারী, বৈদ্যুতিক তার ও যন্ত্রপাতি উৎপাদনের কারখানা এবং পেপার মিল প্রতিষ্ঠাসহ বেশকিছু খ্যাতনামা বহুজাতিক কোম্পানি তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সে সময় চট্টগ্রামে অনেকগুলো বড় আকারের জুট মিলস স্থাপিত হয় এবং প্রায় সবগুলো ব্যাংক ও বীমা কোম্পানির হেড অফিসও এখানে স্থানান্তরিত হয়। প্রধান আমদানি-রফতানি নিয়ন্ত্রক এবং জয়েন্ট ষ্টক কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ও চট্টগ্রামে ছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও চট্টগ্রাম বিমান বন্দর থেকে চলাচল করতো। গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে চট্টগ্রামের উন্নয়নে এতটুকুও কার্পণ্য হয়নি ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান আমলে। কিন্ত এক সময় দেখা যায় একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ভারী শিল্পগুলো। কয়েক বছরের মধ্যে এশিয়ার বিখ্যাত চট্টগ্রাম স্টীল মিল, কর্ণফুলী রেয়ন মিল, চট্টগ্রাম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স, বাংলাদেশ ক্যান কোম্পানি, এশিয়াটিক কটন মিল, বাক্সলী পেইন্টস, চিটাগাং টেক্সটাইল মিল, জলিল টেক্সটাইল মিলসহ ছোট-বড় অন্তত দুই হাজার শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সে সাথে সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রধান অফিসগুলোও একে একে চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রধান সদর দপ্তর হিসেবে রেলওয়ের প্রধান কার্যালয়, চা বোর্ড, বিপিসি, বিএসসিসহ কিছু প্রতিষ্ঠান থাকলেও এখন নিয়ন্ত্রিত হয় ঢাকা থেকে। এছাড়া অনেকগুলো বহুজাতিক কোম্পানির হেড অফিসও এখানে থাকলেও পরবর্তিতে ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়ে যায়। বিনিয়োগ বোর্ড, বন্ড অধিদফতর, আমদানি-রফতানি ব্যুরো, কন্ট্রোলার অফিসের ক্ষমতা খর্ব করে ঢাকা কেন্দ্রিক করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের বিদ্যুৎ দিয়ে নগরবাসী সহজেই চাহিদা পূরন করতে পারতো। কিন্ত চট্টগ্রামকে অন্ধকারে রেখে বিদ্যুৎ নিয়ে যাওয়া হতো গ্রীডলাইনে। চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ১০০০ মেগাওয়াট এর মতো। প্রয়োজন ৫০০ মেগাওয়াট হলেও বর্তমানে বিদ্যুৎ মিলতো ২০০ মেগাওয়াটেরও নীচে। চহিদার তুলনায় দ্বিগুন বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও চট্টগ্রামবাসী বিদ্যুতের আলো পাওয়া থেকে বঞ্চিত ছিল। একই অবস্থা ছিল পানির ক্ষেত্রেও। গত চট্টগ্রাম ওয়াসায় গত ২২ বছরে একটি প্রকল্পও বাস্তবায়িত হয়নি। সরকারী বরাদ্দের ক্ষেত্রেও চট্টগ্রামের প্রতি বৈষম্য ছিল নজরে পড়ার মতো। কর্পোরেশন থেকে প্রতি বছর শতকোটি টাকা চাওয়া হলেও, বরাদ্দ আসতো মাত্র ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা। অপ্রতুল বরাদ্দও অনেক সময় দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় নগরবাসীর উন্নয়নের মাঝে। আবাসন সংকট নিরসনসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড সামলাতে গিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ছিল দিশেহারা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আটকা ছিল চউকের শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। ব্যবসায়ীদেরকে ব্যাংক থেকে কোন বড় ধরনের ঋণ অনুমোদনের জন্য ঢাকায় দৌঁড়াতে হয়। স্থানীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের ঋণ অনুমোদনের ক্ষমতা খুবই সীমিত। এ অবস্থায় নগরবাসী বাণিজ্যিক রাজধানীর ঘোষণাটিকে স্রেফ একটি আইওয়াশ বলে ধরে নেয়। বিএনপি সরকারের উপর থেকে ক্রমশ কমতে থাকে মানুষের আস্থা।
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি আজ থেকে নিজের হাতে নিয়েছেন।’ প্রায় ১৪ বছর পর চট্টগ্রামবাসী দেখলেন,তিনি তাঁর প্রতিটি প্রতিশ্রæতি রেখেছেন। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এসে উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ও সুশিল সমাজের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের কথা জানান। এ সময় তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ঘোষনা দিয়েছেন। নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার কারণে এতদিন বাস্তবায়িত না হলেও বর্তমানে সরকার চট্টগ্রামকে সত্যিকার অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। এ লক্ষে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মূল কাজ হবে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে অতীতে কী কী কাজ হয়েছে এবং কী কী কাজ বাকি আছে সেগুলো খুজেঁ বের করা।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতে ধীরে ধীরে চট্টগ্রামের উন্নয়নের পরিস্থিতি অনেক পাল্টে যেতে শুরু করে। এমন কি বিগত করোনা কালীন সময়েও থেমে থাকেনি চট্টগ্রামের উন্নয়ন। বিশেষ করে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মান ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বঙ্গবন্ধু টানেল ও ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজও শেষের পথে। আর বড় বড় এ প্রকল্পগুলোর কাজ সমানতালে চলছে। কয়েক বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের চেহারা অনেকাংশে পাল্টাতে থাকে। বিদ্যুৎ সমস্যা নেই। চট্টগ্রামে পানির জন্য হাহাকার নেই। যেখানে ২২ বছর চট্টগ্রাম ওয়াসা কোন প্রকল্পের মূখ দেখেনি, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির পর একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করতে থাকে চট্টগ্রাম ওয়াসা। পানিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ এখন চট্টগ্রাম। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করছে সেনাবাহিনী। চট্টগ্রামের বর্জ্য ব্যবস্থপনা ও কর্ণফ‚লি নদী দখল – দূষণমুক্ত করতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দর চলছে দ্রুত গতিতে। আগামীতে চট্টগ্রাম বন্দরকে এ অঞ্চলের ‘হাব’ হিসেবে পরিনত করার লক্ষে কাজ চলছে দ্রতগতিতে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপে সরাসরি পণ্য পরিবহণ হয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে ধরে নেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামের মিরশরাইতে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের কাজ পুরোদমে চলছে। দেশি বিদেশী অনেক কোম্পানি এরই মধ্যে এখানে তাদের কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে লাখো লোকের কর্মসংস্থান হবে এখানে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিজিএমইএ গার্মেন্টস পার্ক ও পিপিপি জোন এবং ৭২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৫০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২০ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার এবং সম্ভাব্য কর্মসংস্থান (বিজিএমইএ গার্মেন্টস পার্ক, বেপজা ও এসবিজি ইকোনমিক জোন) প্রায় ১০ লাখ। শুরু হয়েছে বহু আকাংখিত চট্টগ্রাম -কক্সবাজার রেললাইনের কাজ। মহেশখালির সমুদ্র অঞ্চলে শুরু হয়েছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। বলা হচ্ছে, এ অঞ্চলটি হবে আরেকটি সিঙ্গাপুর। পার্বত্য এলাকার ভেতরে ভেতরে চলাচলের রাস্তা এখন মসৃন হচ্ছে। একসময়ের দুর্গম অঞ্চল বলে ভাবা সেসব অঞ্চলে এখন লেগে আছে পর্যটকদের ভীড়। দ্রুতই যেন বদলাচ্ছে সবকিছু।

কাগজে-কলমে নয় এবার বাস্তবিক অর্থেই চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানী করা হচ্ছে দেখে অনেক আশাবাদী চট্টগ্রামের মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তারঁ কথা রাখায় চট্টগ্রামবাসীও কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রস্তত। আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করার জন্য এখন মুখিয়ে আছে চট্টগ্রামবাসাী।##

 

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.