--- বিজ্ঞাপন ---

ভয়াবহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঘাটতির মুখে শ্রীলঙ্কা

0

ভয়েস অব আমেরিকা নিউজের দেয়া তথ্যমতে, গত ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে চীন থেকে আমদানি করা মানসম্মত নয় বলে জৈবসারের একটি চালান ফেরত পাঠিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। তবে চীনের পরোক্ষ হুমকির মুখে সার ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হলেও এর মূল্য বাবদ চীনের একটি কোম্পানীকে ৬.৮৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা। যেখানে কিনা কয়েক বছর থেকেই চরম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা।

দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত পিপল’স ব্যাংক অফ শ্রীলঙ্কা জানায় যে, নিম্ন মানের ও দূষিত সারের চালানটির বিষয়ে আদালতের বাইরে হওয়া একটি গোপন সমঝোতার অংশ হিসেবে দেশটি চীনের কিংডাও সিউইন বায়োটেক গ্রুপকে ৬.৮৭ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় সারা দেশজুড়ে তীব্র সারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে চীন থেকে আমদানি করা জৈব সারের নমুনা খালাসের পূর্বে পরীক্ষা করে দেখা যায় এটি একেবারে নিম্ন মানের ও দূষিত। সেক্ষেত্রে দেশটির প্রশাসন চীন থেকে আমদানি করা দূষিত সার শ্রীলঙ্কার কোথাও খালাস করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে এর পাল্টা জবাব হিসেবে চীন কিন্তু সরাসরি শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্র পরিচালিত ব্যাংকটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে এবং কলম্বোর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিতে থাকে। শ্রীলঙ্কার প্রশাসন এহেন বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য অনেকটা বাধ্য হয়েই চীনের প্রতিষ্ঠানকে গোপন সমাঝোতা মাফিক অর্থ পরিশোধ করে দেয়।

চীন বর্তমানে শ্রীলঙ্কার প্রধান উন্নয়ন সহযোগী এবং দেশটিতে চীন বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। তবে চীনের এহেন অর্থায়নকে সরাসরি বিনিয়োগ না বলে এক কথায় গোপন ও জটিল শর্তের আড়ালে চড়া সুদের ঋন প্রদান বললে ভূল কিছু হবে না। এদিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, বিনিয়োগের নামে শ্রীলঙ্কা নিশ্চিতভাবেই চীনের ভয়ঙ্কর ঋণের ফাঁদে পা দিতে চলেছে। যদিও উভয় দেশই এমন শঙ্কার বিষয়টি একেবারে নাকচ করে দিয়েছে। চীন বিগত কয়েক দশকে শ্রীলঙ্কায় মোট আনুমানিক ১৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। অতি সাম্প্রতিক সময়ে শ্রীলঙ্কার কলম্বো সমুদ্র বন্দর উন্নয়নে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে চীন। তবে প্রকাশ থাকে যে, বিনিয়োগের নামে চীনের এই বিশাল আকারের ঋন ও দেনা পরিশোধ করার মতো আপাতত কোন আর্থিক সক্ষমতা নেই শ্রীলঙ্কার। তাই এই ঋণের জটিল শর্তের বেড়াজালে চীনের কাছে অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের হিসেব অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার কাছে মাত্র ২.২৭ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল। অথচ ২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋন ও দেনার স্থিতির পরিমাণ অবিশ্বাস্যভাবে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। আর বর্তমানে জটিল শর্তের ঋন ও বৈদেশিক ঋন ও দেনা কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হচ্ছে শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তান।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.