--- বিজ্ঞাপন ---

ইউক্রেনে এই প্রথম রাশিয়ার হাইপারসনিক ‘জিরকন’ হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল হামলা

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে জোরদার করতে রাশিয়া এবার প্রথম বারের মতো যুদ্ধজাহাজ কিংবা সাবমেরিন থেকে ‘জিরকন’ হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করেছে। মূলত গত ৭ই ফেব্রুয়ারিতে ম্যাক ৯ গতির ১ হাজার কিলোমিটার রেঞ্জের জিরকন (৩এম২২) হাইপারসনিক মিসাইল ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আঘাত হানে। ইউক্রেনের প্রশাসনের তরফে জানানো হয় যে, এই মিসাইল হামলায় ৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর পাশাপাশি বেশকিছু ভবন ও একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনে এই প্রথম এ ধরনের অত্যন্ত দ্রুত গতির মিসাইল ব্যবহার করল রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। তাছাড়া ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর এই জাতীয় নেভাল বেসড অ্যাডভান্স হাইপারসনিক মিসাইল হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে রাশিয়ার তরফে এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। যদিও যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার সামরিক অভিযান নিয়ে তথ্য উপাত্ত প্রকাশে রাশিয়া সর্বদা গোপনীয়তার নীতি অবলম্বন করে আসছে।

আসলে ২০২২ সালে ইউক্রেনে যুদ্ধের উত্তাপের মধ্যেই প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে যুদ্ধজাহাজ কিংবা সাবমেরিন থেকে ম্যাক ৯ গতির ‘জিরকন’ (৩এম২২) হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করেছিল রাশিয়া। সে সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন প্রজন্মের এই মিসাইলটিকে ‘নতুন প্রজন্মের সমরাস্ত্র’ বলে উল্লেখ করেন। ২০০ কিলোটন থার্মোনিউক্লিয়ার ওভারহেড সমৃদ্ধ এই ক্রুজ মিসাইলের ন্যাটো রিপোর্টিং কোড নেম এসএস-এন-৩৩।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সামরিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রায় ৯ ম্যাক গতিতে ছুটে চলা ‘জিরকন’ ৩এম২২ হাইপারসনিক মিসাইলকে বর্তমান সময়ে প্রচলিত থাকা অত্যাধুনিক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দ্বারা এটিকে শনাক্ত করে আকাশেই ইন্টারসেপ্ট বা ধ্বংস করাটা এক কথায় অসম্ভব বলা চলে। তবে তীব্র গতির কারণে এই জাতীয় মিসাইলের একিউরিসি বা সুনির্দিষ্ট টার্গেটে হিট করার সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

স্ক্যাম জেট ইঞ্জিন চালিত ‘জিরকন’ হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইলটি রাশিয়া প্রথম সার্ভিসে আনে গত ২০২৩ সালের ৪ই জানুয়ারি। এটিকে আসলে অ্যান্টি শিপ ও ল্যান্ড অ্যাটাকের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটিকে যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন উভয়ই প্লটফর্ম থেকে ১ হাজার কিলোমিটার টার্গেট লক করে ফায়ার করা যায়। এর সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ৬ থেকে ৮ বা প্রতি ঘণ্টায় ১১,০২৫ কিলোমিটার। তবে রাশিয়ার তরফে প্রকাশিত তথ্যের উপর শতভাগ ভরসা করার কোন সুযোগ থাকে না।

এটিতে ৩০০ কেজি থেকে ৪০০ কেজি ওজনের একটি ২০০ কিলোটন থার্মোনিউক্লিয়ার কিংবা কনভেনশনাল উভয় জাতীয় ওভারহেড ইনস্টল করা যায়। এর পেনেট্রেট সক্ষমতা এতটাই বেশী যে একটি মাত্র জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল দিয়ে আমেরিকার এয়ার ক্র্যাফট ক্যারিয়ারকে হিট করা হলে তা হয়ত সাগরের বুকে ডুবে যাবে কিংবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাবে। তাই রাশিয়ার তৈরি অত্যন্ত ক্ষিপ্ত গতির এই জাতীয় মিসাইলকে এক বর্তমানে বিশ্বের সেরা এন্টিশীপ এন্ড ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.