--- বিজ্ঞাপন ---

জায়নবাদীরা অবিরাম বোমা আর মিসাইল ফেলছে গাজায়!!

0

আবদুল্লাহ আল ইউসুফ,অতিথি লেখক#

আজ প্রায় কয়েক সপ্তাহ হতে চলল জায়নবাদী কাপুরুষগুলো ২৫ মাইল বাই ৭ মাইলের ঐ ছোট্ট ভূখন্ড গাজার ওপর আকাশ থেকে অবিরাম বোমা আর মিসাইল ফেলে যাচ্ছে। আর গাজা সীমান্তের বাইরে অপেক্ষা করে আছে আধুনিকতম অস্ত্র গোলাবারুদে সুসজ্জিত তিন লক্ষাধিক জায়নবাদী যোদ্ধা(!)। এত বোমা ফেলে ঐ ছোট্ট জনপদটাকে তছনছ করে ফেলার পরেও ঐ তথাকথিত যোদ্ধারা গাজা ভূখন্ডে ভূমি আক্রমন (Land Offensive) চালাতে সাহস পাচ্ছে না।
ব্যাপারটা কি আপনাদের খুব অবাক করছে? কেন অবাক হচ্ছেন? আপনি কি কুরআন পড়েননি? এরা কি সেই কওমের বংশধর নয় যারা নবীকে বলেছিলঃ
“হে মূসা, সেখানে এক দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সম্প্রদায় রয়েছে, তারা সেখান থেকে বেড়িয়ে না এলে আমরা কিছুতেই সেখানে প্রবেশ করবো না, তারা সেখান থেকে বেড়িয়ে এলে আমরা প্রবেশ করব” (৫:২২)
“তারা বললো, হে মূসা, সেই লোকেরা যতোক্ষন সেখানে থাকবে, ততোক্ষন আমরা কোন অবস্থায়ই সেখানে প্রবেশ করবো না, তুমিই যাও, তুমি ও তোমার মালিক (আল্লাহ) উভয়ে মিলে যুদ্ধ করো, আমরা এখানেই বসে রইলাম” (৫:২৪)।
আর আপনি ভাবছেন এরা গাজায় ঢুকে যুদ্ধ করবে! এরা! এই ঐতিহাসিকভাবে কাপুরুষের দল! কক্ষনো না। গাজায় একজন হামাস যোদ্ধা জীবিত থাকা পর্যন্ত তিন লক্ষ জায়নবাদী যোদ্ধা ওখানে ঢোকার সাহস পাবে না।
এখন তো আর মূসা (আঃ) ও নেই যে বলবে তুমি আর তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ করো। তাই এখন পশ্চিমা দাদাদের কাছে ধর্না দিচ্ছে। ওদের কাছ থেকে ভিক্ষে করে আনা ডলার আর গোলাবারুদ দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে (Stand-Off distance) থেকে আকাশপথে আক্রমন চালিয়ে যাচ্ছে। কাছে যাবার সাহস সঞ্চয় করে উঠতে পারছে না।
ওরা ভেবেছিল প্রথমে কিছু বোমা টোমা মেরে সিভিলিয়ানদের ভয় পাইয়ে তাড়িয়ে দেবে, যাতে সিভিলিয়ান ক্যাজুয়ালটির দায় নিতে না হয়। এরপর লাখ লাখ টন বোমা ফেলে, গাজাকে একেবারে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে, যখন নিশ্চিত হবে ওখানে আর একটি প্রানীও বেচে নেই, তখন এই মহাপরাক্রমশালী (!) বিশাল স্থল বাহিনী রণহুংকার দিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে প্রাণহীন শত্রুর মৃতদেহের উপর বেয়োনেট চালাবে। হায়রে Don Quixote এর প্রেতাত্মারা, ওদের আস্ফালন যে কতোটা অন্তসারশূন্য তা গাজার একটা ছোট্ট শিশুও বোঝে।
নাগারনো- কারাবাখে আজারবাইজানের কয়েকটা মর্টার শেল এসে পড়েছে কি পড়েনি, জাতিগত আর্মেনিয়ানদের সবকটা মানুষ দু-দিনের মধ্যে পিতৃপুরুষের ভিটে মাটি ছেড়ে আর্মেনিয়ায় পালিয়ে গেল। হামাস যেদিন আক্রমন চালায়, ইসরাইলের বিমানবন্দরগুলো পলায়নপর মানুষের ভিড় সামলাতে হিমসিম খেয়ে যাচ্ছিল। আর গাজায়? প্রতি ১৫ মিনিটে গড়ে একজন করে শিশু বোমার আঘাতে মারা যাওয়ার পরেও একজন ফিলিস্তিনিও উদ্বাস্তু হয়ে ভেগে যাওয়ার চিন্তা মাথায় আনেনি। মাটি কামড়ে পড়ে আছে। জীবনের শেষ আলো যখন নিভে আসছে তখনও Mortally Wounded ছোট্ট শিশুটি চুম্বনরত বাবাকে বলছে, কেদো না বাবা, কেদো না, সাহস রাখো। মৃত্যুপথযাত্রী ছোট ভাইয়ের কানের কাছে মুখ নিয়ে গুরুতর আহত বড় ভাইটি (সে ও বালক) কালেমা শাহাদাত পড়ছে।
সামরিক স্কুলগুলোতে যুদ্ধ পরিকল্পনা করার সময় তুলনামূলক শক্তি বা Relative Strength পর্যালোচনা করা হয়। এটা হচ্ছে দু-পক্ষের নানাবিধ অস্ত্রশস্ত্র এবং জনবলের একটা তুলনামূলক চিত্র যা থেকে নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো চিহ্নিত করে যথোপযুক্ত রণকৌশল নির্ধারণ করা যায়। এই তুলনামূলক শক্তি মূল্যায়নের ক্ষেত্রে একটি অপেক্ষাকৃত দুর্বোধ্য এবং প্রায়শঃ উপেক্ষিত উপাদান হচ্ছে ‘মনোবল’ বা Moral, যা পরিমাপ বা Quantify করা যায় না। এটিই জায়নবাদী সমরবিদদের পরিকল্পনার সবচে দুর্বল দিক। তারা গাজাবাসীদের ইস্পাত-কঠিন মনোবলকে আমলে নেয়নি, উপেক্ষা করেছে। মূষিক-হৃদয়ের জায়নবাদীরা তাই খেই হারিয়ে ফেলেছে। পরাজয় ওদের অনিবার্য।
আর এই যে ভাই, আপনি, গাজাবাসীদের জন্য বিলাপ করার দরকার নেই। মায়াকান্নারও দরকার নেই। চুক চুক করে সহানুভুতি দেখানোরও দরকার নেই। ওরা বীরের জাতি। ওরা ওদের লড়াইটা ঠিকই চালিয়ে যাবে। ফিরবেই বিজয়ীর বেশে। আপনি বরং শিক্ষা নিন, কিভাবে জুলুমের বিরুদ্ধে দাড়াতে হয়। আর কবে শিখবেন?##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.