--- বিজ্ঞাপন ---

ভারতের নতুন নিউক্লিয়ার ব্যালেস্টিক মিসাইল অগ্নি প্রাইম

0

ভারতের সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক গবেষণামুলক ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) গত ২৮শে জুন সোমবার অগ্নি সিরিজের একটি নতুন ভেরিয়েন্টের অগ্নি-প্রাইম নামের নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড ক্যাপাবল ব্যালেস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করে। আসলে অগ্নি-প্রাইম ব্যালেস্টিক মিসাইলের সর্বোচ্চ রেঞ্জ হচ্ছে ১,০০০-২,০০০ কিলোমিটার এবং এটি খুব সম্ভবত অগ্নি-৩ সিরিজের ব্যালেস্টিক মিসাইলের ওজন অপেক্ষা কমপক্ষে ৫০% কম।

ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণামুলক প্রতিষ্ঠান ডিফেন্স রিসার্চ ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এর তরফে জানানো হয় যে, নতুন প্রজন্মের এই অগ্নি-প্রাইম ব্যালেস্টিক মিসাইলটিকে উড়িষ্যা উপকূলের কাছে এপিজে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে টেস্ট ফ্লাইট লঞ্চ করা হয়। এদিকে ভারতের সেনাবাহিনী এই মিসাইলের বিভিন্ন টেলিমেট্রি এবং রাডার সিস্টেমের মাধ্যমে অগ্নি-প্রাইম সিরিজের ব্যালেস্টিক মিসাইলের টেস্ট ফ্লাইটটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে।

ভারতের অগ্নি-৩ ব্যালেস্টিক মিসাইলের ওজন ৪৮ টন এবং এটি ৩,০০০-৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দুরুত্বের লক্ষবস্তুতে পারমাণবিন এবং প্রচলিত ওয়ারহেড দিয়ে আঘাত হানতে সক্ষম। যেখানে মনে করা হয় অগ্নি-প্রাইম মিসাইলের ওজন হবে ২.৫ টন এবং এটি ১,০০০-২,০০০ কিলোমিটার দুরুত্বের মধ্যে অনায়াসে আঘাত হানার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। অগ্নি-প্রাইম ব্যালেস্টিক মিসাইলটি ওজনে অনেকটা হালকা হওয়ায় এটিকে রেল বা সড়ক পথে কিংবা বিশেষ সামরিক যান থেকে খুব সহজেই নিক্ষেপ করা যাবে। অগ্নি সিরিজের আগের অন্য দুই মিসাইল অগ্নি-১ ও অগ্নি-২ সিরিজের তুলনায় অগ্নি-প্রাইম সিরিজের ব্যালেস্টিক মিসাইলের রকেট বুস্টারের মোটরগুলো অনেকটাই আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।

ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) এর উদ্ভাবিত অগ্নি-প্রাইম সিরিজের মিসাইলটি হচ্ছে একটি দুই স্তর বিশিষ্ট সলিড ফুয়েল প্রপেল্যান্ট বিশিষ্ট ব্যালেস্টিক মিসাইল। যেটিকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব। অগ্নি-প্রাইম ব্যালেস্টিক মিসাইলে রিং-লেজার জাইরোস্কোপের ওপর ভিত্তি করে এর নেভিগেশন সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে এবং এর গাইডেন্স সিস্টেম হিসেবে ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল অ্যাকিউট সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে।

ভারতের অগ্নি সিরিজের ব্যালেস্টিক মিসাইলের মধ্যে অগ্নি-১ সিরিজের মিডিয়াম রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (এমআরবিএম) এর ওজন ১২ টন এবং এর রেঞ্জ ৭০০-১,২০০ কিলোমিটার। অগ্নি-২ মিডিয়াম রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (এমআরবিএম) এর ওজন ১৬ টন এবং এর রেঞ্জ ২,০০০-৩,৫০০ কিলোমিটার। অগ্নি-৩ সিরিজের ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইআরবিএম) এর ওজন ৪৮ টন এবং এর রেঞ্জ ৩,০০০-৫,০০০ কিলোমিটার। অগ্নি-৪ সিরিজের ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইআরবিএম) এর ওজন ১৭ টন এবং এর রেঞ্জ ৩,৫০০-৪,৫০০ কিলোমিটার।

তাছাড়া ভারতের হাতে থাকা কৌশলগত ইন্টারকন্টিন্যান্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) অগ্নি-৫ সিরিজের রেঞ্জের ৪৯ টন এবং এর রেঞ্জ ৫,০০০-৮,০০০ কিলোমিটার। তবে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী আণ্ডার ডেভল্পমেন্ট প্রজেক্টের ইন্টারকনিন্যান্টাল ব্যালেস্টিক মিসাইল (আইসিবিএম) অগ্নি-৬ সিরিজের মিসাইলের ওজন ৫৫ টন এবং এর সর্বোচ্চ রেঞ্জ হবে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার কিলোমিটার। যা এখনো উন্নয়নের প্রাথমিক স্তরে রয়েছে এবং এটি আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই ভারতের সামরিক বাহিনীর স্ট্যাটিজিক মিসাইল ফোর্সেস ইউনিটের হাতে পর্যায়ক্রমে তুলে দেয়া শুরু হবে। তবে শত্রুদের যে কোন ধরণের সামরিক আগ্রাসনের শক্ত জবাব দিতে ভারতের সামরিক বাহিনীতে সর্বশেষ যুক্ত হতে যাচ্ছে ট্যাক্টিক্যাল অগ্নি-প্রাইম সিরিজের এডভান্স টেকনোলজির মিডিয়াম রেঞ্জের ব্যালেস্টিক মিসাইল (এমআরবিএম)।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.