--- বিজ্ঞাপন ---

মহাকাশ জয় করতে চায় মানুষ

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

বর্তমানে মহাকাশ গবেষণা ও নতুন নতুন প্রযুক্তির সযাটালাইট ও স্পেসক্রাফট ডিজাইন ও উদ্ভাবনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি, জাপান, চীন, ভারত, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া নিজস্ব প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আর হয়ত আগামী ৫০ বছরের মধ্যেই মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে পারে। ১৯৯১ সালের পূর্বে কোল্ড ওয়ার যুগে মহাকাশ গবেষণা নিয়ে আমেরিকার সাথে সাবেক সভিয়েত ইউনিয়নের ব্যাপক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যেত। তবে এবার সাবেক সভিয়েত ইউনিয়ন না থাকলেও আমেরিকার সাথে কিন্তু পাল্লা দিয়ে বর্তমানে মহাকাশ গবেষণায় ও স্পেস মিশন পরিচালনায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যাচ্ছে রেড জায়ান্ট চীন।

এক বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে স্পেসক্রাফটে চড়ে মহাকাশচারী নিয়ে সোলার সিস্টেম থেকে একেবারে বের হয়ে যেতে না পারলেও পৃথিবীর কাছে গ্রহ মঙ্গলগ্রহে হয়ত সীমিত পরিসরে মানব কলোনি স্থাপন করাটা অনেকটা সুনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে বলে আশা করা যায়। ভবিষ্যতের এ লক্ষ্য ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমেরিকার বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেস-এক্স গত মাসে পরীক্ষামূলক ভাবে পৃথিবীর অরবিটে ডামি স্পেসক্রাফট অসহ অত্যন্ত হেভি রকেট ডেলিভারী সিস্টেম পাঠায়। তবে এটি কিন্তু মহাকাশেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যায়। যা হোক এটা ধ্বংস হয়ে গেলেও নাসা কিন্তু আশাহত হয়নি। তারা পরিকল্পনা মাফিক তাদের মঙ্গল গ্রহ নিয়ে গবেষণা পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছে।

যদিও অবশ্য আপাতত মানব জাতির হাতে থাকা প্রযুক্তি দিয়ে চাঁদে কিংবা মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার মতো বড় ধরণের সক্ষমতা এখনো পর্যন্ত তৈরি হয়নি বলে মনে করা হয়। মহাকাশে যান্ত্রিক স্যাটালাইট পাঠানো ও মহাকাশচারীসহ স্পেসক্রাফট পাঠানো কিন্তু মোটেও একই বিষয় নয়। তবে আমার কেন জানি মনে হয় সভিয়েত ইউনিয়ন টিকে থকলে একেবারে সীমিত পরিসরে হলেও মহাকাশচারী নিয়ে মঙ্গল গ্রহে স্পেসক্রাফট পাঠানো তা আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হয়ত এক রকম রুটিন মাফিক কাজে পরিণত হত। আসলে সভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশ গবেষণার এক বাতিঘর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

আসলে ৪ই অক্টোবর ১৯৫৭ সালে মহাকাশে পাঠানো মানব জাতির প্রথম কোন স্যাটালাইট স্পুটনিক-১ সভিয়েত ইউনিয়ন পাঠায়। তার পাশাপাশি ১৯শে অক্টোবর ১৯৭১ সালে প্রথম স্পেস মিনি স্টেশন স্যালিয়ুত-১ কিন্তু সেই সভিয়েত ইউনিয়ন পাঠিয়েছিল। আবার ২০শে ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬ সালে পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৩৫৮ কিলোমিটার উচ্চতায় মির মহাকাশ স্টেশন স্থাপন করে নিজের যোগ্য মহাকাশ প্রযুক্তিগত সক্ষমতার পরিচয় বিশ্বের সামনে তুলে ধরে সভিয়েত ইউনিয়ন। তাছাড়া ২০০১ সাল পর্যন্ত মীর মহাকাশ স্থাপনে রাশিয়া বা সাবেক সভিয়েত ইউনিয়ন মোট প্রায় ৪.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে।

তবে এটা ঠিক যে, আমাদের সোলার সিস্টেমের ভিতরে থাকা মঙ্গল গ্রহে কিংবা ৪.২৭ আলোকবর্ষ দূরের পাশ্ববর্তী প্রক্সিমা সেঞ্চুরাই সোলার সিস্টেমে থাকা প্রক্সিমা-বি গ্রহে নভোচারীসহ স্পেস্ক্রাফট পাঠানো আদৌও কোনদিন সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকলেও উচ্চ প্রযুক্তির হাবল এবং নতুন প্রজন্মের জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে শত কিংবা হাজারো আলোকবর্ষ দূরের মহাজাগতিক ঘটনা এবং নতুন নতুন গ্যালাক্সি, নিহারিকা ও সোলার সিস্টেম, গ্রহ অবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ করার মতো উচ্চ প্রযুক্তি মানবজাতি ইতোমধ্যেই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। যাকে অবশ্যই একটি মানব জাতির মাইলফলক অর্জন হিসেবে দেখা হয়।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.